আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

বর্ধমানে সংবাদিক বৈঠক করে রাজ্য সরকারের নানা কাজের সমালোচনায় মুখর হলেন রাজ্যপাল ধনকর

By krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) :- পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সোমবার বেলায় বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলা মন্দিরে পুজো দেওয়া শেষ করে সস্ত্রীক রাজ্যপাল চলে যান বর্ধমান সার্কিট হাউসে ।দুপুরে সেখানে ফের দীর্ঘক্ষন সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর । সাংবাদিক বৈঠক রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, রাজ্যপাল পদে দায়িত্ব নেবার পর একবার পূর্ব ঘোষনা ছাড়া বর্ধমানে এসেছিলাম । তৎকালীন সময়ে পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক ছিলেন বিজয় ভারতী। তিনি আমার সঙ্গে দেখা করতে বর্ধমান সার্কিট হাউসে চলে এসেছিলেন।ওনার আনা বর্ধমানের দুই প্রসিদ্ধ মিষ্টি সীতাভোগ ও মিহিদানা আমি তৃপ্তি খেয়েছিলাম।বিজয় ভারতীর তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসা প্রসঙ্গে রাজ্যপাল পল বলেন , রাজ্যের একমাত্র জেলাশাসক বিজয় ভারতি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন । হয়তো সেই সময়ে বিজয় ভারতীর কাছে উপর মহলের নির্দেশ আসে নি । তাই তিনি এসেছিলেন ।


রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর এরপর বলেন , তাঁকে অসম্মান মানে সিস্টেমের অপমান।ডায়মন্ডহারবারে রাজ্যপালকে গার্ড অফ অনার পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে তার উত্তর চেয়েছি।কারণ সংবিধান রক্ষার শপথ ও জনতার সেবা করার শপথ নিয়েছি।


দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনেএনে রাজ্যাপাল বলেন,আন্দামান নিকোবরে সবচেয়ে বেশী বাঙ্গালীরাই বন্দী ছিলেন।বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্ত এই জেলার সন্তান।তিনি ছিলেন ভগৎ সিংয়ের সহযোগী। মৃত্যুর পরেও দুই বিপ্লবীর সমাধিক্ষেত্র তৈরি হয় একই জায়গায় । জালিওয়ানাবাগের ঘটনার পর কবিগুরু তাঁর উপাধি ত্যাগ করেছিলেন। আর আজ কিছু লোক সংবিধানের আত্মাকে মানছেন না। অন্য রাজ্য থেকে কেউ এলে তাঁকে বহিরাগত বলা হয়।এর নিন্দা করছি।জগদীপ ধনকর জানান ,তাঁর সংকেত মুখ্যমন্ত্রীর দিকে। কারণ এই কার্যকলাপ তাকে দুঃখ দেয়। এই বাংলার বিবেকানন্দ গোটা দুনিয়াকে অভিভূত করেছিলেন।সব দিক থেকে এগিয়ে এই এলাকা।দেশের অখণ্ডতাকে এখন লঘু করার প্রয়াস চলেছে।


আমফান ঝড়ের প্রসঙ্গ তুলে ধরে রাজ্যপাল বলেন , রাজ্যকে কেন্দ্র আমফানে সাহায্য করেছে।সেই ত্রাণ বিলি করাতেও অনিয়ম হয়েছে।পাকা বাড়ির মালিক ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। এতেও চুরি? দুর্গত মানুষের সহায়তায় বেনিয়ম? এই ধরণের ভুলের তদন্ত হওয়া উচিত। মহামারীর সময়েও ঠিক কাজ হয়নি।ভুলের উপর আবরণ দেওয়া হচ্ছে।
এইসব নিয়ে আজ অবধি যে প্রশ্ন করেছিলাম তা নিয়ে কোনো রিপোর্ট পাইনি।এই রিপোর্ট চাওয়া উচিত মিডিয়ার।রাজ্যপাল দাবি করেন ,রাজ্যে সিণ্ডিকেট রাজ চলছে। আইনের রাজনীতিকরণ হচ্ছে।একজন সরকারি ব্যক্তি রাজনেতিক কাজ করতে পারেন না। সংবাদমাধ্যম চুপ করে থাকলে খারাপ লাগে।রাস্তার হাল কি আপনার জানেন।এখানে গণবন্টন ব্যবস্থারও রাজনীতিকরণ হয়েছে বলেও রাজ্যপাল বলেন ।

See also  দ্বিতীয় 'বগটুই' হতে যাওয়ার আগে রুখে দিল কাটোয়া থানার পুলিশ -গ্রেপ্তার ৩ দুস্কৃতি- উদ্ধার প্রচুর অস্ত্রসস্ত্র

রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর ,প্রশ্ন তোলেন প্যাড পার্টি কি? শুনে চকিত হয়েছি।দুই প্রতিনিধিদল আমাকে এ বিষয়ে সবিস্তার জানিয়েছে । কেন্দ্রের বিধি এখানে কার্যকর হয়নি।কার্যত সমান্তরাল সরকার চলছে।বালি; পাথর ,কয়লায় স্লিপ চলছে।এটা সিণ্ডিকেটের বাজে উদাহরণ। এটা মাফিয় গিরি।ওই রসিদ অর্থাৎ প্যাডের টাকা কোথায় যায় ,তার সব প্রকাশ্যে আসবে ।যারা ভাবেন আইনের হাত লম্বা নয়; তারা অচিরেই সব বুঝতে পারবেন।নিচের তলার পুলিশ চাপের মুখে পড়ে এইসব কাজ করতে বাধ্য হন।কঠোর পরিশ্রম করেও তাদের চাপে পড়তে হয়। দুর্নীতি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে।কিষাণরা গোটা দেশে সরাসরি ১৪ হাজার টাকা পান। বাংলার ৭০ লাখ চাষি এই সহায়তা পাননি।৯৮০০ কোটি টাকা পাননি এ রাজ্যের মানুষই।মিডিয়া কেন তোলেনি এ প্রসঙ্গ? এটা একটা অনুদান। ব্যারাকপুর কমিশনারেটে কি হয়েছে? কোর্টে যাবার জন্য সেখানে নোটিশ দেওয়া হচ্ছে।আমি ডি জি কে ডেকেছিলাম।এটা রাজ্যে আইনের না থাকার সমান। এই সংকেত আসছে যে; এখানে ভোটে হিংসা হবে।কোনো হিংসা না হওয়া উচিত।নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হুওয়া উচিত।


রাজ্যপাল আরো বলেন ,আইনের শাসন যাতে চলে সেটা দেখা আমার দায়িত্ব। দুটো ঐতিহাসিক মন্দিরে গেছিলাম।রাজ্যবাসীর জন্য সুখের প্রার্থনা করেছি। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তার সাথে দেখা না করার প্রসঙ্গে এদিন তিনি বলেন , দু চারজন ছাড়া বাকি উপাচার্যরা আমার সাথে যোগাযোগ রাখেন। উপাচার্যদের সমস্যা আমি বুঝি।পার্থ চ্যাটার্জির অসাধারণ ক্ষমতা আছে উপাচার্যসহ গোটা শিক্ষাব্যবস্থাকে কুক্ষিগত করে রাখার।

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি