আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

সিঙ্গুর মামলায় আরবিট্রেটরের রায় বহাল, রাজ্যকে দিতে হবে টাটাদের মোটা অঙ্কের ক্ষতিপূরণ

krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

সিঙ্গুর মামলায় শীর্ষ আদালতের সামনে জটিল পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে রাজ্য সরকার। আরবিট্রেটরের সিদ্ধান্ত অক্ষরে অক্ষরে মান্য রেখে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, রাজ্যকে টাটাদের বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে। শুক্রবার বিচারপতি পি নরসিংহ ও বিচারপতি অতুল এস চান্দুরকরের বেঞ্চ মামলাটি শুনানির জন্য গ্রহণ করে। শুনানির সময় রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বলের সওয়াল-জবাবের সময় বিচারপতিরা কঠোর ভর্ৎসনা করেন। অবশেষে, রাজ্যের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ প্রদানের আবেদন খারিজ করা হয়। অর্থাৎ ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ অনুসারে রাজ্যকে ৭৬৬ কোটি টাকা টাটা গোষ্ঠীকে দিতে হবে।

সিঙ্গুরের মামলার পটভূমি বুঝতে হলে ২০০৬ সালে ফিরে যেতে হবে। সেদিন তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার সিঙ্গুরের প্রায় হাজার একর কৃষিজমি অধিগ্রহণ করে একটি একলাখি গাড়ি তৈরির কারখানা গড়ার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু বহুফসলি জমি কারখানা নির্মাণের জন্য দেওয়ায় সিঙ্গুরে জমি আন্দোলন শুরু হয়, যার নেতৃত্বে ছিল তৎকালীন বিরোধী দল তৃণমূল কংগ্রেস। আন্দোলনের চাপেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সরকারের পিছু হটতে হয়। কারখানা গড়তে ব্যর্থ হওয়ায় টাটাদের সিঙ্গুর ত্যাগ করতে হয়। এরপর অনেক বছর কেটে যায়, এবং ২০১১ সালে বাম শাসনের অবসান ঘটে, ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। সেই আন্দোলনের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্ট সিঙ্গুরের জমি চাষিদের ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এরপরই টাটা গোষ্ঠী ক্ষতিপূরণের জন্য মামলা করে।

২০২৩ সালে টাটা মোটরস এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেডের মধ্যকার মামলাটি চলছিল। সমস্যার সমাধানে আদালত তিন সদস্যের আরবিট্রেশন ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল এক আরবিট্রেটরকে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে অভিযুক্ত করেন। সুপ্রিম কোর্টে শুনানিতে তিনি দাবি করেন, ”’তিন সদস্যের আরবিট্রেটরদের মধ্যে একজন বিচারপতিকে টাটাদের আমন্ত্রণে ১৫ বার নাগপুরে যেতে দেখা গিয়েছে, কিন্তু আরবিট্রেশন শেষ হওয়ার পর আমন্ত্রণ পেলেও তিনি যাননি।’” টাটা পক্ষের আইনজীবী মুকুল রোহতগি এই অভিযোগের তীব্র বিরোধিতা করে বলেন, ”একজন বিচারপতির বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ করা যায় না।” এবং অবিলম্বে রাজ্যের আবেদন খারিজ ও জরিমানার নির্দেশ চেয়ে আবেদন করেন।

See also  ১৬ জুন থেকে বিধিনিষেধ সংক্রান্ত নতুন নির্দেশিকা জারি করল রাজ্য , দেখে নিন এক ক্লিকে

এরপর কপিল সিব্বল তার দাবির সমর্থনে নথি পেশ করেন। বিচারপতিরা কঠোর মন্তব্য করে জানান, যদি এই দাবি অন্যায্য প্রমাণিত হয়, তাহলে রাজ্যকে বড় জরিমানা করা হবে। শেষ পর্যন্ত রাজ্যের আইনজীবী নথি প্রত্যাহার করতে চাইলে বেঞ্চ তাদের ভর্ৎসনা করে রাজ্যের আবেদন খারিজ করে দেয়। অর্থাৎ রাজ্যকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৭৬৬ কোটি টাকা টাটাদের দিতে বাধ্য করা হলো।

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি