রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সেই বিখ্যাত উক্তি, “ধর্ম যার যার, উৎসব সবার” – আবারও একবার জীবন্ত প্রমাণ পেল খণ্ডঘোষ ব্লকের বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের বোঁয়াই তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়ে। সম্প্রতি পালিত রাম নবমী উৎসব উপলক্ষে বোঁয়াইচণ্ডী লর্ড ক্লাবের উদ্যোগে একটি শোভাযাত্রা আয়োজিত হয়েছিল। এই পদযাত্রা যখন বোঁয়াই এলাকার তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যালয়ের সন্নিকটে এসে পৌঁছায়, তখন এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা হয়। সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল বার্তা নিয়ে এগিয়ে আসেন স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা ও কর্মীরা।
এদিনের এই বিশেষ উদ্যোগে নেতৃত্ব দেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা সেখ লকাই। তিনি দলের অন্যান্য কর্মী এবং এলাকার মুসলিম সম্প্রদায়ের সম্মানিত মোয়াজ্জেমদের সঙ্গে নিয়ে পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের স্বাগত জানান। শুধু তাই নয়, আগত সকলের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। এই আন্তরিক আপ্যায়নে পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাড়া দেন। তাঁরাও এগিয়ে এসে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা কর্মী এবং মোয়াজ্জেমদের কপালে তিলক পরিয়ে দেন।
তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যালয়টি যেন মুহূর্তের মধ্যেই এক সম্প্রীতির মিলনক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে তৈরি হয় এক আনন্দঘন পরিবেশ। এই দৃশ্য শুধু উৎসবের আনন্দকেই বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়নি, বরং সমাজের বুকে এক শক্তিশালী বার্তা পৌঁছে দিয়েছে – ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে সকলে মিলেমিশে উৎসব উদযাপন করতে পারে।
সেখ লকাই এই প্রসঙ্গে বলেন, “আমাদের মুখ্যমন্ত্রী সর্বদা সম্প্রীতির কথা বলেন। এবং আমাদের খণ্ডঘোষ ব্লকের অভিভাবক তথা ব্লক সভাপতি অপার্থিব ইসলাম আমাদের যে বার্তা দিয়েছেন সেই আদর্শকে অনুসরণ করি। রাম নবমী হিন্দুদের একটি পবিত্র উৎসব, এবং আমরা এই উৎসবে সামিল হয়েছি আমাদের ভাই-বোনদের সাথে আনন্দ ভাগ করে নিতে।
আমাদের কাছে ধর্ম আলাদা হলেও উৎসব সবার। এই ছোট ছোট উদ্যোগগুলিই সমাজে ঐক্য ও ভালোবাসার বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে।”এলাকার মোয়াজ্জেম সাহেবও এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “এই ধরনের সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত আমাদের সমাজে খুবই প্রয়োজন। তৃণমূল কংগ্রেসের এই পদক্ষেপ সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। আমরা সকলে একসাথে মিলেমিশে থাকি এবং একে অপরের ধর্মীয় ভাবাবেগকে সম্মান করি।”রাম নবমীর পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারী সদস্যরাও এই উষ্ণ আতিথেয়তায় অভিভূত হন। তাঁরা জানান, তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের এই আন্তরিকতা প্রমাণ করে যে ধর্মীয় সম্প্রীতি আজও সমাজের মূল ভিত্তি। এই ধরনের ঘটনাগুলি আগামী দিনে আরও বেশি করে উৎসাহিত করবে এবং সমাজে শান্তি ও ভালোবাসার বাতাবরণ বজায় রাখবে।
বোঁয়াই তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়ের এই দৃশ্য আবারও প্রমাণ করলো যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ এই নীতি কেবল একটি স্লোগান নয়, বরং তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকদের দৈনন্দিন জীবনেও প্রতিফলিত হয়। এই ঘটনা খণ্ডঘোষ তথা সমগ্র রাজ্যের কাছে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে, যা আগামী দিনে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ভালোবাসার বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে।
