আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

১৩০ বছরের পুরনো ভরতপুরের পট শিল্পীদের অবস্থা সেই তিমিরেই, তবে শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা ১৬ টি পরিবারের।

krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

বঁাকুড়া থেকে দেবজিৎ দও

ছাতনা ব্লক এর শুশুনিয়া পাহাড়ের কোল বেয়ে অলস অজগরের মতো কাঁচাপাকা রাস্তা ৷ আর সঙ্গে অদ্ভুত এক নিস্তব্ধতা ৷ এই নিয়েই ভরতপুর গ্রাম । একদল সরল সাদাসিধে মানুষের বাস ৷ তাঁরা প্রায় সবাই পটশিল্পী ৷ এটাই তাঁদের জীবিকা ৷ গ্রামের প্রতিটি দেওয়াল যেন কথা বলে ওঠে ৷ শিল্পের কথা ৷ কারুকাজের কথা ৷ তবে সেই শিল্পীরাই এখন অতিমারির কোপে সহায়-সম্বলহীন, উপার্জনহীন।

 

বাংলার কোনায় কোনায় নানা শিল্প ছড়িয়ে রয়েছে ৷ তবে কদর না পেয়ে অনেক শিল্প আবার কালচক্রে হারাতেও বসেছে । এরইমধ্যে সংকটের মুখে বাংলার পটচিত্র শিল্প ৷ সুপারসনিক যুগ এবং আধুনিকতার ছোঁয়া কেড়ে নিয়েছে তাঁদের রুজি রোজগার ৷ মাথায় হাত পড়েছে ভরতপুর পট-পাড়ার মানুষগুলোর ৷ একটা সময় ছিল, যখন তপন চিত্রকর, বন্দনা চিত্রকররা বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে পটচিত্রের উপর কৃষ্ণলীলা, মনসামঙ্গল দেখিয়ে বা এই শিল্পকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামে গ্রামে ভিক্ষে করে পেটের ভাত জোগাতেন । কিন্তু ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাসে সেটুকুতেও এখন ভাঁটা পড়েছে ।

 

দেশে অতিমারি আসার পর থেকে বিভিন্ন জনপদ, শহর ও মফস্বল এখন সন্ত্রস্ত ৷ তারই জেরে জীবন স্তব্ধ হয়ে পড়েছে পটপাড়ার ষোলটি পরিবারের ৷ তপন, বন্দনা, অনিল চিত্রকররা আর তাঁদের শিল্প নিয়ে যেতে পারেন না গ্রামে গ্রামে ৷ নিজের কুটিরে বসেই দিন কেটে যায় ৷ অভাব যেন তাঁদের পটগান গাইতে ভুলিয়ে দিয়েছে ৷ পেটের ভাতটুকুও না-পেয়ে হারিয়ে যাচ্ছে তাঁদের শিল্পীসত্ত্বা । কিন্তু এই পটশিল্প পেট না পড়লেও পরবর্তী প্রজন্মকে শিখিয়ে চলেছেন পটের কারুকাজ। চেষ্টা প্রাচীন ঐতিহ্যকে ধরে রাখার।

 

ছিলনা তাদের নিজস্ব জমি প্রশাসনের সহযোগিতায় বর্তমানে পাট্টা দেওয়া হয়েছে, পাচ্ছেন শিল্পী ভাতাও। তবে আগের মত পর্যটকেরা কিনতে না আসায় মলাটবন্দি হিসেবেই রয়ে যাচ্ছে কুঁড়েঘরের কামরায়। এভাবে চলবে আর কতদিন… শিল্প থাক, যেন আপাতত দু বেলা দু মুঠো খেতে পাওয়াই তাঁদের জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ৷

See also  ফিরে এসো নজরুল

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি