তেঁতুল নাম শুনলেই জিভে জল আসেনা এমন মানুষ পাওয়া আসলেই দুষ্কর ! তেঁতুল যেমন সুস্বাদু ফল তেমনি পুষ্টি-গুনে ভরপুর একটি ফল। এতে রয়েছে অসধারণ ভেষজ গুনাগুন।
তেঁতুল গাছ বৃহৎ ও চিরসবুজ বৃক্ষ। এগাছ প্রায় ২৪ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। তেঁতুল সম্ভবত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আফ্রিকার আদিবাসী, তবে ভারতীয় উপমহাদেশে পাওয়া যায়। এটি সম্ভবত হাজার হাজার বছর পূর্বে মানব পরিবহন এবং চাষাবাদের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ায় পৌঁছেছিল।
তেঁতুল গাছের ব্যবহার – তেঁতুল গাছের ছাল, ফুল, পাতা, বিচি ও ফল সবই ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তেঁতুল বীজের শাঁস পুরনো পেটের অসুখে উপকারী। তেঁতুল পাতার রস কৃমিনাশক ও চোখ ওঠা সারায়। মুখে ঘা হলে পাকা তেঁতুল জলে কুলকুচি করলে উপকার পাওয়া যায়।


তেঁতুল বীজের উপকারিতা – তিনি বলেছেন শুষ্ক চোখের চিকিৎসায় যে ড্রপ তৈরি হয়, তাতে তেঁতুল বিচি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া পাকস্থলীর গোলযোগ, লিভার ও গল-ব্লাডারের সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে তেঁতুল বিচি। গর্ভকালীন বমিভাব ও মাথাঘোরার সমস্যায় তেঁতুল বিচির শরবত উপকারী।তেঁতুল দেহে উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদরোগীদের জন্য খুব উপকারী। তেঁতুল দিয়ে কবিরাজি, আয়ূর্বেদীয়, হোমিও ও এলোপ্যাথিক ওষুধ তৈরি করা হয়। পাকা তেঁতুলে মোট খনিজ পদার্থ সব ফলের চেয়ে অনেক বেশি।
মেয়েদের তেতুল খেলে কি হয় – তেঁতুলের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টগুলি কয়েকটি ধরণের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে বলে বিশ্বাস করা হয়। তেঁতুল সকালের অসুস্থতা থেকে আসা বমিভাব কমাতেও সাহায্য করতে পারে – তেঁতুলের এক টুকরোতে কিছুটা নুন দিয়ে চুষে খাওয়া গর্ভবতী মহিলাকে আরও ভাল অনুভব করতে সহায়তা করে।
তেঁতুল চাষের সঠিক ও সহজ পদ্ধতি –
তেঁতুল বীজ থেকে আবার গুটি কলমের মাধ্যমেও জন্মে। তবে চাষের জন্য গুটি কলমই ভাল, এতে করে ভালোমানের উন্নত ফল পাওয়া যায়, আবার গাছে ফলও তাড়াতাড়ি আসে।
বীজ থেকে ফল আসতে ৭-৮ বছর লাগে, আর কলম করা চারা থেকে ২ বছরের মধ্যেই ফল আসে।
উর্বর দোঁ-আশ বা বেলে দো-ঁআশ মাটি এ চাষের জন্য উপযুক্ত।
চারা রোপণ করার আগে গর্তে গোবর সার ৫-১০ কেজি, টিএসপি ১০০ গ্রাম, পটাস ১০০ গ্রাম, শরিষার খৈল ২৫০ গ্রাম মিশিয়ে ১৫-২০ দিন পঁচিয়ে তারপর চারা রোপণ করতে হয়।