প্রেমককে ছেড়ে নিজের স্বামীর ঘরে ফিরেযেতে চেয়েছিল প্রেমিকা। তারই বদলা নিতে প্রেমিকাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুনকরে আত্মঘাতী হল প্রেমিক । চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর থানার চন্দনপোতা গ্রামে । মৃতরা হলেন বন্যা মণ্ডল (১৯) ও দীপক হালদার (২৫)। শুক্রবার বেলায় ঘটনাস্থলে পৌছে মন্তেশ্বর থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ।এদিনই মৃতদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় বর্ধমান হাপাতাল পুলিশ মর্গে । পুলিশ দুটি মৃত্যুর ঘটনারই তদন্ত শুরু করেছে ।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানাগেছে , বন্যা মণ্ডলের বাবার বাড়ি মন্তেশ্বরের চন্দনপোতা গ্রামে । তাঁর প্রেমিকের বাড়ি মুর্শিদাবাদের কান্দির চাঁদনগর এলাকায় । বন্যা মন্ডলের দিদিমা সাগরী হালদার এদিন বলেন , তিন বছরের শিশুকণ্যাকে সঙ্গে নিয়ে বন্যা ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। ভোরের দিকে ঘরের দরজা ভিজিয়ে দিয়ে তিনি বাথরুমে যান। সেই সময়েই বন্যার প্রেমিক দীপক ঘরে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বন্যাকে এলোপাতারি কোপানো শুরু করে । বন্যার আর্ত চিৎকার শুনে পাশের ঘরে থাকা বন্যার বাবা তড়িৎ মন্ডল ও মা সুলতা মন্ডল ওই ঘরে ছুটে যান ।

তখনই তড়িৎবাবুকে বাক্কা মেরে দীপক ঘরথেকে ছুটে পালায় । ঘরেতেই পড়ে থাকে বন্যার নিথর দেহ । পাশে পড়েথাকে রক্তমাখা একটি ভোজালি ও একটি আগ্নে আস্ত্র । এই খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌছায় মন্তেশ্বর থানার পুলিশ । তদন্ত চালানোর সময়েই পুলিশের কাছে খবর আসে পূর্বস্থলী ও মন্তেশ্বরের মাঝে ঘূর্ণী এলাকার একটি গাছে গলায় ফাঁস লাগান বস্থায় ঝুলছে দীপকের ঝুলন্ত দেহ । পুলিশ সেখানে পৌছে যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করে । তখনই পুলিশ খোঁজ খবর চালিয়ে জানতে পারে মৃত যুবকই হল বন্যার প্রেমিক । বন্যার পরিবার সদস্যরা পুলিশকে জানায় ওই দীপকই নৃশংস ভাবে বন্যাকে খুন করেছে ।
কি আক্রোশে দীপক এমন নৃশংস ভাবে বন্যাকে খুন করলো ? এই প্রশ্নের উত্তরে বন্যার বাবা তড়িৎ মন্ডল বলেন,‘পাঁচবছর আগে তিনি পূর্বস্থলীর সাতপোতার যুবক গৌরাঙ্গ মন্ডলের সঙ্গে তাঁর মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন ।তাঁদের তিন বছর বয়ষী একটি কণ্যাসন্তান রয়েছে। রোজগারের ধান্দায় জামাই মাঝেমধ্যে ভিনরাজ্যে কাজে চলেযায় । মেয়ের শ্বশুর বাড়ির পাশের এক বাসিন্দার বাড়িতে রাজমিস্ত্রীর কাজে এসেছিল মুর্শিদাবাদের দীপক হালদার । তখনই বন্যার সঙ্গে দীপকের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে । মাস চারেক আগে বন্যাকে নিয়ে পালায় দীপক ।
সেকারণে জামাইয়ের সঙ্গে বন্যার সম্পর্কের অবনতি হয়। তড়িৎবাবু বলেন ,এরপর তিনি তাঁর মেয়েকে নিজের বাড়িতে এনে রাখেন ।পরে নিজের ভুল বুঝে গত বুধবার বন্য মনস্থির করে সে তাঁর স্বামীর ঘরে ফিরেযাবে । বন্যা এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার বদলা নিতেই দীপক নৃশংস ভাবে বন্যাকে খুন করেছে বলে মনে করছে পুলিশ ও পরিবারের লোকজন । জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ধ্রুব দাস জানিয়েছেন ,‘মন্তেশ্বরের ঘটনায় একটি খুনের ও একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মানলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে ।’