প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) :- ভোটের দিনক্ষন এখনও ঘোষনা হয়নি ।তার আগেই রাজনৈতিক হিংসার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠলো পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর। বিজেপির নেতা ও কর্মীদের মারধোর করে জখম করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ।যা নিয়ে শুক্রবার রাত থেকে উত্তেজনা চরমে উঠেছে জামালপুরের পুলমাথা ও নবগ্রাম এলাকায়।
মারধরের ঘটনা নিয়ে শাসক দলের একাধীক নেতা ও কর্মীর বিরুদ্ধে শনিবার জামালপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে আক্রান্তরা । পুলিশ অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে ।তবে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার বা আটক করা হয়নি । যদিও রাজনৈতিক কারণে মারধোরের অভিযোগ অস্বীকার করেছে জামালপুরের তৃণমূল নেতৃত্ব ।
বিজেপির জামালপুর বিধানসভার কনভেনার
জীতেন ডকাল জানিয়েছেন ,দিন তিনেক আগে তাঁদের দলের তরফে জামালপুরের সেলিমাবাদ গ্রামে পথসভা ও মিছিল করা হয়।
দলের সেই কর্মসূচীতে ওই এলাকার ইসলামপল্লী নিবাসী বিজেপি নেতা প্রফুল্ল মিস্ত্রি ও তাঁর ছেলে অভি মিস্ত্রি যোগদান করেছিলেন। তার বদলা নিতে শুক্রবার সন্ধ্যার মুখে ইসলামপল্লী সংলগ্ন পুলমাথা এলাকায়
তৃণমূল কর্মীরা প্রফুল্ল মিস্ত্রি ও তাঁর ছেলে অভিকে ধরে ব্যাপক মারধোর করে ।
একই দিনে বিকাল বেলায় দলের সাংগাঠনিক বৈঠক সেরে বাড়ি ফিরছিলেন নবগ্রামের বিজেপির দুই কার্যকর্তা সোমনাথ মণ্ডল ও সমর মালিক ও এক কর্মী বাপন মালিক। জীতেন বাবু অভিযোগ করেছেন ,নবগ্রাম এলাকার পাঁচ তৃণমূল দুস্কৃতি সশস্ত্র অবস্থায় বিজেপির ওই দুই কার্যকর্তা ও কর্মীর উপরে চড়াও হয় । রড় ও লাঠি দিয়ে তারা সোমনাথ মণ্ডল ও সমর মালিককে ব্যাপক মারধোর করে । সোমনাথের ডান চোখে গুরুতর আঘাত লেগেছে । মারধোরে সমরও আহত হয়েছে । সমরের বাইক ভাঙচুরের চেষ্টা হয় ।স্থানীয়রা
রুখে দাঁড়ালে দুস্কৃতিরা পালিয়েযায় । আক্রান্তরা মারধোরের ঘটনায় জড়িত নবগ্রাম এলাকা নিবাসী তৃণমূলের পাঁচ জনের নামে জামালপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। তবে অভিযুক্তদের কাউকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেনি । সেই কারণে না ক্ষোভে ফুঁফছে জামালপুরের বিজেপি কর্মীরা ।
ইসলানপল্লী নিবাসী বিজেপি নেতা প্রফুল্ল মিস্ত্রি বলেন , শুধুমাত্র বিজেপি করার আপরাধে তাঁকে ও তাঁর ছেলেকে মারধোর করা হয়েছে । তৃণমূলের তিন দুস্কৃতি রাস্তায় ফেলে তাঁকে মারধোর করেছে। পা দিয়ে গলা চেপে রেখে তাঁকে প্রাণে মারার চেষ্টাও তারা করে । প্রফুল্লবাবু বলেন,একই কারণে তৃণমূলের দুস্কৃতিরা তাঁর ছেলে অভি মিস্ত্রিকেও বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছে ।অন্যদিকে নবগ্রামের বিজেপি কার্যকর্তা সোমনাথ মণ্ডল বলেন ,বিজেপি করার বদলা নিতে নবগ্রামের তৃণমূল নেতা সেখ সাজানের নেতৃত্বে তৃণমূলের দুস্কৃতিরা তাঁদের তিনজনকে ব্যাপক মারধোর করেছে । সোমনাথ জানিয়েছেন ,’রড দিয়ে তাঁর চোখে মারা হয়েছে । চোখে গুরুতর আঘাত লাগায় তিনি এখন ভালভাবে দেখতে পাচ্ছেন না । এত কিছুর পরেও তাঁর অভিযোগ পত্রটি শুধুমাত্র জেনারেল ডাইরি হিসাবে গ্রহন করে পুলিশ দায় সেরেছে।অভিযুক্তদের একজনকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করেনি। ’
জেলা বিজেপি সভাপতি সন্দিপ নন্দি জানিয়েছেন ,“পুলিশ এখনও তৃণমূলের দলদাস হয়ে কাজ করছে । জামালপুরের বিজেপি কার্যকর্তা ও কর্মীদের অকারণে মারধোর শুরু করেছে তৃণমূলের দুস্কৃতিরা। এই ঘটনার কথা রাজ্য নেতৃত্বকেও জানানো হয়েছে । পুলিশ অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার না করলে বিজেপি জামালপুরে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে । “ যদিও জামালপুরের
তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি
মেহেমুদ খান জানিয়েছেন ,“ঘটনা গুলির সঙ্গে রাজনীতির কোন যোগ নেই ।বছর শুরুর প্রথম দিনে পালনের নামে শুক্রবার মদ খেয়ে
এইসব ঝামেলা আশান্তির ঘটনা ঘটেছে । উদ্দেশ্য প্রণদিত ভাবে বিজেপি ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের নাম জড়িয়ে দিয়ে রাজনৈতিক চাঁদা তুলতে চাইছে । ”