প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) :- বাংলায় পরিবর্তনের পরিবর্তন আনতে হবে । মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরাতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ।এমন দাবিতুলে এখন রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় ফেলে দিয়েছে বিজেপি সহ অন্য বিরোধী রাজনৈতিক দল গুলি ।ঠিক এমনই সময়কালে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবন ও আকর্ষণীয় নেতৃত্বগুন নিয়ে ‘পি-এইচডি ’ ডিগ্রি অর্জন করলেন চাষি পরিবারের ছেলে রেজাউল ইসলাম মোল্লা ।
রিসার্চের থিসিস পেপার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দেবার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ সহ সারা দেশের মানুষের কাছে তাঁর রিসার্চের সবিস্তার তুলে ধরার বিষয়ে রেজাউল উদ্যোগী হয়েছেন ।রেজাউলের রিসার্চের বিষয়বস্তু আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে
তৃণমূল কংগ্রেস কে অনেকটাই মাইলেজ পাইয়ে দেবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল ।
পূর্ব বর্ধমানের কালনার হাতিপোতা গ্রামের এক নিম্নবিত্ত কৃষক পরিবারের কৃতী সন্তান রেজাউল ইসলাম মোল্লা । তিনি জানিয়েছেন, ২০০৭-০৮ সালে ম্যানেজমেন্ট কোর্স (বিবিএ )
করতে যাবার সময়ে বাংলার বুকে চলছিল কৃষক আন্দোলন । সেই আন্দোলনের প্রধান নেত্রী ছিলেন বাংলার এখনকার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । চাষি স্বার্থে নিজের জীবন বিপন্ন করে ওই সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংগ্রাম চালিয়ে গিয়েছিলেন । নেত্রীর সেই সংগ্রাম পৃথিবী বিখ্যাত হয়ে গিয়েছিল । রেজাউল জানালেন ,ততদিনে বিবিএ কমপ্লিট করার পর তিনি এমবিএ পাঠক্রমও শেষ করে ফেলেন । এই পাঠক্রম সম্পূর্ণ করার পর ম্যানেজমেন্ট কিভাবে করতে হয় , লিডারশিপ কিভাবে দিতে হয় সেই বিষয়ে তিনি সাম্যক জ্ঞান অর্জন করেন ।
রেজাউলের দাবি, তিনি যখন এমবিএ ও বিবিএ পড়ছেন সেই সময়কালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলায় হওয়া কৃষক আন্দোলন ,নন্দিগ্রাম আন্দোলন ভারত সহ গোটা বিশ্বের মানুষ দেখেছিলেন । রেজাউল জানান, এরপরেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন ‘লিডার শিপ ’ নিয়ে যদি রিসার্চ করেন তো তা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়েই । এরপর রিসার্চ শুরু করতে নেমে তিনি দেখলেন ,লড়াই আন্দোলনের মধ্যদিয়ে এক অতি সাধারণ ঘরের মেয়ের মুখ্যমন্ত্রী হয়েওঠা । মুখ্যমন্ত্রী পদে বসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতধরে চালু হয় একের পর এক জনমুখী প্রকল্প । তার চালু করা কন্যাশ্রী প্রকল্প বিশ্বজুড়ে আলোড়ন ফেলেদেয় । এছাড়াও রয়েছে যুবশ্রী , রুপশ্রী , সবুজসাথী সহ একাধীক জনহীতকর প্রকল্প । জাত ধর্ম ও দলমত নির্বিশেষে বাংলার সকল স্তরের মানুষ সেইসব প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন । রেজাউল আরো দাবি করেন ,শুধু একেরপর এক জনহীতকর প্রকল্প চালু করাই নয় ।
রিসার্চের প্রয়োজনে তিনি ভারতের অন্য সব মহিলা নেত্রীদের সন্মন্ধেও বিস্তর খোঁজ খবর নেন । কিন্তু সবকিছু যাচাই করে তিনি নিশ্চিৎ হন ক্যারিস্মাটিক মাস লিডার হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবার থেকে আলাদা । মমতা বন্দ্যোপাাধ্যায় কেন সবার থেকে আলাদা সেই বিষয়টি তথ্য সহ রিসার্চে তুলে ধরেছেন বলে রেজাউল জানিয়েছেন । এছাড়াও রিসার্চ চালানোর সময়েই তিনি দেখেছেন , সব ক্ষেত্রে কিভাবে বাংলা আস্তে আস্তে এক নম্বরে চলে আসছে । খালি পায়ে স্কুলে যাওয়া গ্রামের ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের জন্য জুতো দেবার
যে সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রী নিয়েছেন সেটিও অনবদ্য বলাচলে । রেজাউল জানান, সাড়ে পাঁচ বছর ধরে রিসার্চের কাজ চালিয়ে তাঁর মনে হয়েছে,
সাধারণ মানুষের স্বার্থে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে চিন্তা ভাবনা তা অন্য লিডারদের মধ্যে দেখা যায়না ।রেজাউল শুক্রবার বলেন,
সম্প্রতি তিনি রিসার্চ শেষ করেছেন ।২০২০ সালের ২১ ডিসেম্বর ইউজিসি ফেলোসিপ পেয়ে গিয়েছেন বলে রেজাউল জানালেন ।
এখন রেজাউল চাইছেন,রিসার্চ পেপার মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলেদেবার পাশাপাশি রিসার্চের বিষয়বস্তু নিয়ে বাংলায় ও ইংরেজিতে বই প্রকাশ করা ।যাতে করে মমতা বন্দ্যোপাধায়ের জননেত্রী হয়েওঠার ইতিহাস সারা দেশ ও সারা বিশ্বের মানুষ জানতে পারেন ।
রাজ্যের মন্ত্রী তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি স্বপন দেবনাথ এই বিষয়ে বলেন , “রেজউল আমার এলাকারই ছেলে । ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোধায়কে নিয়ে ‘পি-এইচডি’ করেছে । এরজন্য আমি আনন্দিত , গর্বিতও বটে । ”রেজাউলের বাবা সাহানোয়াজ মোল্লা বলেন ,“তাঁর ছেলে রেজাউল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে রিসার্চ সম্পূর্ণ করেছে জেনে তিনি আপ্লুত ।এক যোগ্য নেত্রীকে নিয়েই ছেলে রিসার্চ করেছে । রেজাউলের রিসার্চের বিষয়বস্তু পুস্তক আকারে প্রকাশ হলে ভবিষ্যত প্রজন্ম জানতে পারবে বাংলার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবন ও সংগ্রাম কাহিনী । “
