বাবু সিদ্ধান্ত ( বর্ধমান ) :- ভিন রাজ্যে নিয়েগিয়ে প্রেমিকাকে প্রাণে মারার অভিযোগে গ্রেপ্তার হল প্রেমিক। ধৃতের নাম মহাবীর চালক ওরফে জিয়া । তার বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা শহরের বাগানপাড়ায় ।ঝাড়খন্ডে প্রেমিকা ছায়া মাঝিকে খুনে করে মহাবীর গুসকরায় পালিয়ে এসেছে বলে গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশ জানতে পারে। রবিবার রাতে ফাঁড়ির পুলিশ মহাবীরকে আটক করে ।সোমবার ঝাড়খন্ড পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়েযায় ।এই ঘটনা জানাজানি হতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে গুসকরা পৌর এলাকায় ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আউসগ্রাম থানার দেকুরি গ্রামে ছায়া মাঝির বাড়ি । ভাতার থানার ওড়গ্রামেড় বাসিন্দা কার্তিক মাঝির সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল বছর ১৫ আগে । তাদের এক নাবালক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে । প্রায় বছর দেড়েক আগে বিবাহিত মহাবীরের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে ছায়া । দু’জনের পরিবারই এই সম্পর্ক মেনে নেয় নি । মাস আট আগে ছায়া ও তার ১২ বছর বয়সী ছেলে চাঁদ কে সঙ্গে নিয়ে মহাবীর চলেযায় ঝাড়খন্ডের দুমকা থানার মফস্বল পাড়ায় । সেখানে মহাবীরের ভাই পলাশ থাকে । তারা তার বাড়িতে ওঠে । ছায়া ও মহাবীর ঝাড়খন্ডে জনমজুরের কাজ করতো ।
ডিএসপি-ডিএনটি অরিজিৎ পাল চৌধুরী জানিয়েছেন , রবিবার রাতে গুসকরায় কুনুর নদীর সেতুর নিচে প্লাস্টিকে মোড়া অবস্থায় একটি মৃতদেহ পড়ে থাকে । তা নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায় । খোঁজ চালিয়ে পুলিশ জানতে পারে, একটি অ্যাম্বুলেন্সে চাপিয়ে নিয়ে মহিলার মৃতদেহটি কয়েকজন গুসকরার বাগানপাড়ার মহাবীরের বাড়িতে পৌছে দিতে এসেছিল । মহাবীর ও তার পরিবার মৃতদেহটি নিতে অস্বীকার করে । তখন অ্যাম্বুলেন্সে থাকা লোকজন মৃতদেহটি কুনুর নদীর সেতুর নিচে ফেলে চলেযায় । ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ
আরও জানতে পারে মহিলাকে খুন করার অভিযোগে ঝাড়খণ্ডের দুমকা থানার পুলিশ মামলাও দায়ের করেছে।
এরপর দুমকা থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে গুসকরা ফাড়ির তদন্তকারী পুলিশ অফিসার জানতে পারেন , ছায়ার মৃত্যুর বিষয়ে কয়েকদিন আগে মহাবীরের ভাই পলাশ সেখানকার পুলিশকে সবিস্তার জানায় । পালিশকে সে বলে, ভাত রান্না করতে দেরি হওয়ায় ছায়াদেবীর সঙ্গে তার দাদা মহাবীরের বচসা বাধে। তখনই মহাবীর সপাটে চড় মারে ছায়াদেবীকে। সেইকারণে ছায়াদেবী মারা যান।
এই ঘটনা ঘটিয়ে মহাবীর গুসকরায় পালিয়ে যায়। পলাশের অভিযোগের ভিত্তিতে ঝাড়খন্ড পুলিশ ছায়ার মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। এই ঘটনা জানার পরেই গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশ রাতেই মহাবীরকে আটক করে ঝাড়খন্ড পুলিশকে খবর দেয় । সোমবার ঝাড়খন্ড পুলিশ গুসকারায় আসলে মহাবীরকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় । মৃতার স্বামী কার্তিক মাজি অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করার পাশাপাশি নিজের ছেলেকে যাতে ফিরে পান সেই দাবি পুলিশের কাছে রেখেছেন ।