বাবু সিদ্ধান্ত ( বর্ধমান ) :-
বিষাক্ত চোলাই মদ খেয়ে মৃত্যু এই রাজ্যে নতুন কোন ঘটনা নয়। বিষাক্ত মদ খেয়ে ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে শতাধীক মানুষের মূত্যু হয়েছিল দক্ষিন ২৪ পরগনার সংগ্রামপুরে। একই কারণে ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে ১২ জনের মৃত্যু হয় নদীয়ার শান্তিপুরের চৌধুরীপাড়া গ্রামে।এত মানুষের মৃত্যু নিয়ে রাজ্য জুড়ে হইচই হয়েছিল ঠিকই ।কিন্তু প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে আজও পূর্ব বর্ধমান জেলা সহ এই রাজ্যে চোলাই মদ তৈরি ও বিক্রী বন্ধ করতে পারেনি।
চোলাই কারবারিরা এখনও দিনের আলোয় পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের হৈবতপুর এলাকার দামোদরের চড়ে দেদার তৈরি করছে চোলাই মদ। কার্যত দামোদরের চড়ই এখন হয়ে উঠেছে চোলাই মদ তৈরির নিরাপদ শিল্প তালুক । বিভিন্ন রাসায়নিক সহযোগে তৈরি সেই মদ জেলার বিভিন্ন জায়গার পাশাপাশি ভিন জেলাতেও পাচার হয়ে যাচ্ছে।এই মদ খাওয়ার কারণে শান্তিপুর কিংবা সংগ্রামপুরের মত ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেগেলে অবাক হবার কিছু থাকবে না বলেই মনেকরছেন হৈবতপুর গ্রামের বাসিন্দারা ।
জামালপুর ব্লকের বেরুগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম হৈবতপুর।এই গ্রামের এক পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে দামোদর নদ।সেই দামোদরের বিস্তির্ণ চড় এখন ঢাকা পড়েছে ঝোপ জঙ্গলে।নির্জন ওই ঝোপের মাঝখানে বড় বড় উনান জ্বালিয়ে সারাদিন ধরে দলে দলে চোলাই কারবারীরা তৈরি করছে চোলাই মদ। এই খবর সংগ্রহ করতে বুধবার বেলায় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা হানাদেয় দমোদরের চড়ের ওই ঝোপে।তখনই মদ তৈরি ফেলে রেখে একের পর এক ছুটে পালায় চোলাই কারবারীরা।


সেখানকার বিস্তির্ণ ঝোপ জঙ্গলে ঘুরে দেখাযায় নির্দিষ্ট দূরত্ব অন্তর জ্বলছে উনান। সেই সব উনানে বড় বড় হাঁড়িতে ফুটিয়ে তৈরি হচ্ছিল চোলাই মদ।তারই আশে পাশে পড়ে থাকতে দেখায়ায় একাধীক টিনের ড্রামে ভরে রাখা গুড়ের পচাই , ইস্ট ,ইউরিয়ার বাট ও বেশকিছু বড় আকারের টাবলেট।এই সব দেখেই স্পষ্ট হয়েযায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এই সকল রাসায়নিক ব্যবহার করেই তৈরি হচ্ছিল চোলাই মদ ।
বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের হৈবতপুর গ্রামের সদস্য প্রতিভা ঘোষ এই প্রসঙ্গে বলেন ,“দীর্ঘদিন ধরেই কিছু লোক দামোদরের চড়ে ঝোপ জঙ্গলের মধ্যে চোলাই মদ তৈরি চালিয়ে যাচ্ছে ।এরজন্য এলাকার পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে ।প্রতিভাদেবী জানান ,এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবার জন্য একাধীকবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে । কোন কোন সময়ে পুলিশ ও আবগারী দপ্তরের লোকজন ওই জায়গায় হানা দেয়।তারা চোলাই কারবারীদের কাউকে কাউকে তুলে নিয়েযায়। আবার তারা ছাড়াও পেয়ে যায়।তাই দামোদরের চড়ে মদতৈরি চলছেই ।পঞ্চায়েত সদস্য আরও বলেন ,আমরা চাই প্রশাসন কড়া ব্যবস্থা নিয়ে দামদরের চড়ে চোলাই মদ তৈরি বন্ধ করুক। ”
