বাবু সিদ্ধান্ত ( বর্ধমান ) :-
বেশ কয়েক বছর আগে আলু সহ সবজিতে ক্রিত্রিম রঙ মাখানো বন্ধ করার নির্দেশ জারি করেছিল রাজ্য সরকার। তারপর থেকে কৃষি বিপনন দপ্তরের আধিকারিকরা লাগাতার অভিযান চালানোয় আলুতে রঙ মেশানো অনেকাংশেই বন্ধ হয়েছিল। কিন্তু এখন ফের সরকারী নির্দেশ অমান্য করে আলুতে রঙ মেশানো শুরু হয়েছে।
পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর সহ বিভিন্ন এলাকার হিমঘর ও আলুর শেডে আলু বাছাইয়ের সময়ে দেদার অ্যালা মাটি ও ইটের গুড়ো মেশানো হচ্ছে।এই বিষয়ে জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে অভিযোগ জানিয়েছে আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত জেলা কোল্ড স্টোরেজ ও মুটিয়া মজদুর ইউনিয়ন নেতৃত্ব । ঘটনা জানার পরেই নড়ে চড়ে বসেছে কৃষি বিপনন দপ্তর ।
আলুতে অ্যালা মাটি ও ইটের গুঁড়ো মেশানো
হচ্ছে বলে জামালপুর ব্লকের বিডিও সহ জেলা শাসক ও শ্রম কমিশনার দপ্তরে অভিযোগ জানিয়েছেন আইনটিটিউইসি নেতা সেখ মইনুদ্দিন। তিনি অভিযোগ করেছেন , “পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির লোকজন সরকারী নির্দেশ অমান্য করে বিভিন্ন হিমঘরের জায়গাতেই আলুতে রঙ মেশাচ্ছে ।
জামালপুর ছাড়াও জেলার বেশিরভাগ হিমঘরের শেডে আলুতে রঙ মেশানো হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের চাপে শ্রমিকরা আলুতে অ্যালামাটি বা ইটের গুঁড়ো মেশাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। শ্রমিকদের শ্বাসকষ্ট দেখা দিচ্ছে।সেখ মইনুদ্দিন আলুতে রঙ মেশানো বন্ধে অবিলম্বে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের দাবি করেছেন ।
জামালপুরের আলু ব্যবসায়ীদের অনেকেই আলুতে অ্যালা মাটি ও ইটের গুড়ো মেশানোর কথা স্বীকারও করে নিয়েছেন ।সরকারী নির্দেশ অমান্য করে কেন আলুতে রঙ মেশাচ্ছেন তা জানতে চাওয়া হয় জামালপুরের ব্যবসায়ী গৌতম মণ্ডলের কাছে । এই প্রসঙ্গে পাল্টা যুক্তি দেখিয়েছেন গৌতম বাবু । তিনি বলেন ,“ অ্যালকোহল ,মিষ্টি ,ঠান্ডা পানীয় সবেতেই তো এখন রঙ মেশানো চলছে। তাহলে আলুতে রঙ মাখালে দোষের কি আছে ?একই সঙ্গে তিনি জানান , সরকারের নির্দেশ মেনে আলুতে রঙ মাখানো বন্ধ ছিল। সপ্তাহ দুয়েক হল ফের তিনি সহ অন্য ব্যবসায়ীরা আলুতে রঙ মাখানো শুরু করেছেন “
এই বিষয়ে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সংগঠনের কয়েকজন সদস্যের বক্তব্য ,রঙ ব্যবহার করতে না পারায় আলুর রঙ কালচে থাকছিল । তারজন্য তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, দিল্লি, মহারস্ট্রের মত জায়গাতে আলুর রফতানি একদম বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু শুধুমাত্র দেখতে ভাল হওয়ার জন্যে উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাবের আলুর রফতানি বেড়ে গিয়েছে। ভিন রাজ্যের বাজার ধরার জন্যেই একাংশ ব্যবসায়ী ফের আলুতে রঙ মাখাতে শুরু করেছেন।

যদিও কৃষি বিপনন দপ্তর সূত্রে খবর , সরকার ২০১৩ সালে আলুতে কিত্রিম রঙ ,অ্যালামাটি কিংবা ইটের গুড়ো মেশানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করে । কারণ ইটের গুঁড়োতে রেড অক্সাইড থাকে । স্বাস্থ্যের পক্ষে তা অত্যন্ত হানিকর । আলুতে অ্যালা মাটি ইটের গুঁড়ো মোশানোর কাজ করতে গিয়ে শ্রমিকরাও শ্বাস কষ্টের রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
এই সবের জন্য আলুতে রঙ মেশানো বন্ধ করেছে সরকার ।

