আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

রাতের আগুনে সর্বস্বান্ত পরিবার, বোয়াইচন্ডী গ্রামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ছাই সোমনাথ দে-র স্বপ্নের ঘর! পাশে থাকার আশ্বাস পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ অধ্যক্ষের

krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

শুক্রবার গভীর রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ ব্লকের বেরুগ্রাম অঞ্চলের বোয়াইচন্ডী গ্রামের মণ্ডলপাড়ায়। রাতের নিস্তব্ধতায় আচমকাই আগুন লেগে যায় সোমনাথ দে-র মাটির বাড়িতে। চোখের পলকে আগুন গ্রাস করে নেয় বাড়ির সবকিছু—জ্বলে ছারখার হয়ে যায় আসবাবপত্র, জামাকাপড় থেকে শুরু করে বছরের পর বছর জমানো সহায়সম্বল।

আগুন দেখতে পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও সমাজসেবীরা ছুটে এসে প্রাণপণ চেষ্টা করেন আগুন নেভানোর জন্য। কিন্তু আগুনের তীব্রতার কাছে তাঁরা কার্যত অসহায় হয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত দমকলে খবর দেওয়া হলে একটি দমকল ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে দীর্ঘ প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় খণ্ডঘোষ থানার পুলিশ, প্রশাসনের আধিকারিক ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। জানা যায়, আগুনে সর্বস্ব হারিয়ে সম্পূর্ণ নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন বাড়ির মালিক সোমনাথ দে।

শনিবার ঘটনাস্থলে পৌঁছান জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ তথা খণ্ডঘোষ ব্লক সভাপতি অপার্থিব ইসলাম, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ বিশ্বনাথ রায়-সহ একাধিক স্থানীয় নেতৃত্ব। তাঁদের সামনে নিজের ধ্বংসস্তূপ হয়ে যাওয়া ঘরের দিকে তাকিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন সোমনাথবাবু। চোখের সামনে পুড়ে যাওয়া স্বপ্নের ঘর, হারিয়ে যাওয়া জীবনের সঞ্চয়—সব মিলিয়ে যেন বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে গোটা এলাকা।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে এই মুহূর্তে প্রশ্ন একটাই—আগুনে ছাই হয়ে যাওয়া জীবন আবার কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবে সোমনাথ দে ও তাঁর পরিবার? ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ তথা খণ্ডঘোষ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অপার্থিব ইসলাম বলেন, “বেরুগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের বোয়াইচন্ডী গ্রামের মণ্ডলপাড়ার একটি বাড়িতে শুক্রবার গভীর রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সেই রাতেই আমি বিষয়টি সম্পর্কে একটি বার্তা পাই এবং শনিবার সকালে সরাসরি ঘটনাস্থলে এসে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়াই। সৌভাগ্যবশত ওই বাড়ির স্বামী-স্ত্রী ও তাঁদের শিশুটি কোনওরকমে প্রাণে বাঁচেন। তবে বাড়ির সমস্ত কিছুই সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিলো। তিনি আরও বলেন, “আমাদের প্রিয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রিয় সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সবসময় যে নির্দেশ দেন—মানুষের বিপদে-আপদে পাশে থাকতে হবে, সেই নির্দেশ মেনেই আমরা অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছি। বিষয়টি আমি এসডিও, ওসি এবং জেলা সভাধিপতিকে টেলিফোনে জানিয়েছি”।

See also  শঙ্খধ্বনি যাত্রার মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসার লড়াই শুরু করে দিল মহিলা যুব তৃণমূল কংগ্রেস

অপার্থিব ইসলাম জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ের ব্যবস্থা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে করা হবে। পাশাপাশি আপাতকালীন কিছু সহায়তার ব্যবস্থাও ইতিমধ্যেই করা হয়েছে বলে তিনি জানান। জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ তথা খণ্ডঘোষ ব্লক নেতৃত্ব বিশ্বনাথ রায় বলেন, “বোয়াইচন্ডী গ্রামের মণ্ডলপাড়ায় পৌঁছে যা দৃশ্য দেখলাম, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়—অসহনীয় এক পরিস্থিতি। শুক্রবার গভীর রাতে অতর্কিতে নেমে আসা ভয়াবহ আগুনের তাণ্ডবে একটি পরিবারের সর্বস্ব তছনছ হয়ে গেছে। চোখের সামনে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ার সেই দৃশ্য আজও আমাদের তাড়া করে বেড়াচ্ছে”। তিনি আরও বলেন, “পরিবারটি এই মুহূর্তে সর্বদিক থেকে নিঃস্ব। আমি, আমাদের ব্লক সভাপতি লখাইবাবু এবং অন্যান্য কর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে গোটা পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখেছি। জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ নিজেও অসহায় পরিবারটির পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন”।

বিশ্বনাথ রায় জানান, প্রশাসন ও স্থানীয় নেতৃত্ব মিলেই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর জন্য সব ধরনের সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে।

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি