পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ থানার অন্তর্গত আন্টিরা গ্রামের বাসিন্দা মুন্সী মহিউদ্দিন দীর্ঘ ১৫ বছরের ট্রেকিং অভিজ্ঞতাকে সঙ্গী করে সফলভাবে এভারেস্ট বেস ক্যাম্প ট্রেক সম্পন্ন করলেন। পেশায় ল ক্লার্ক হলেও জানা–অজানা পাহাড় ট্রেকিং তাঁর নেশা। অবশেষে সেই স্বপ্নই বাস্তবায়িত হলো ২০২৫ সালে।
বর্ধমান অভিযাত্রী দল (B.A.D) কর্তৃক আয়োজিত “এভারেস্ট বেস ক্যাম্প ২০২৫” অভিযানে দলের আরও ছয়জন সদস্যের সঙ্গে ১০ অক্টোবর রওনা দেন তিনি। প্রথমে বিহারের জয়নগর পৌঁছে করলেন টাকা এক্সচেঞ্জ, এরপর দু’দিনের দীর্ঘ যাত্রাপথ শেষে নেপালের সুরকে গ্রামে পৌঁছায় দলটি। পাহাড়চূড়ায় অবস্থিত মনোরম গ্রাম সুরকে থেকেই শুরু হয় তাঁদের পায়ে হাটা যাত্রা।
চড়াই–উতরাই পথ, ঝুলন্ত সাসপেনশন ব্রিজ, পাহাড়ঘেঁষা ছোট ছোট গ্রাম, ঘন জঙ্গল, বরফে মোড়া শৃঙ্গ—সব মিলিয়ে নেপালের পাহাড়ি সৌন্দর্য যেন বিমোহিত করে প্রত্যেককে। কঠিন ঠান্ডা উপেক্ষা করে মঞ্জে পৌঁছে পারমিট সংগ্রহ করেন অভিযাত্রীরা। এরপর প্রায় চার হাজার মিটার উচ্চতায় পৌঁছে চোখে পড়ে বিখ্যাত নামছে বাজার—যেখানে বিদেশি ট্রেকারের আধিক্য নজর কাড়ে।
টানা ছয় দিনে প্রায় ৬৩ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ২০ অক্টোবর ২০২৫, নেপালি সময় দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে মুন্সী মহিউদ্দিন ও তাঁর দল পৌঁছে যান স্বপ্নের এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে। উচ্চতা ৫,৪০০ মিটার; তাপমাত্রা মাইনাস ২০ ডিগ্রি। কম অক্সিজেন ও তীব্র শীতের কারণে মাত্র ১০–১৫ মিনিট থাকতে পারলেও কাছ থেকে এভারেস্ট, লোথসে ও আমা ডাবালামের অপূর্ব দৃশ্য দেখার অভিজ্ঞতা তাঁদের জীবনভর মনে থাকবে।
অভিযান সফল করার স্বীকৃতি হিসেবে সাগরমাতা ন্যাশনাল পার্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির পক্ষ থেকে সম্মাননাপত্রও পান তিনি। দীর্ঘ ও কঠিন ফেরার পথ পেরিয়ে ৩০ অক্টোবর বাড়ি ফেরেন পূর্ব বর্ধমানের এই ট্রেকার।
নিজের অনুভূতিতে মুন্সী মহিউদ্দিন বলেন— “পাহাড় আমাকে নতুন করে বাঁচার বীজ দিয়েছে। এভারেস্ট বেস ক্যাম্প—এ যেন স্বপ্নের ছোঁয়া।”








