আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

সুন্দরবনে আবার বাঘের কামড়ে মৃত এক মৎস্যজীবি,ক্ষতিপূরনের দাবি তুললো এপিডিআর

krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, কুলতলি: আবার বাঘের আক্রমণে সুন্দরবনে মৃত্যু এক মৎস্যজীবীর, ক্ষতিপূরণের দাবী এপিডিআরের।সুন্দরবনের নদীতে মাছ কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে মৃত্যু ঘটলো এক মৎস্যজীবীর।মৃতের নাম শম্ভু সরদার, বয়স ৩৪ বছর।ঘটনাটি ঘটেছেসোমবার সকালে সুন্দরবনের চামটা জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায়।এই খবর গ্রামে আসতে শোকের ছায়া নেমেছে এলাকায়।জানা গিয়েছে, কুলতলি থানার কাঁটামারি বটতলা এলাকার আদিবাসী পরিবারের বাসিন্দা মৎস্যজীবী শম্ভু সরদার। ওই এলাকার বাসিন্দা অমৃত সরদারের নৌকায় চেপে অমৃত সরদার, বিজয় সরদার ও শম্ভু সরদার শুক্রবার সকালে যায় সুন্দরবনের নদীতে মাছ কাঁকড়া ধরতে।

সোমবার সকালে নৌকায় বসে থাকার সময় আচমকা বাঘ চামটা জঙ্গল থেকে বেরিয়ে পিছন থেকে আক্রমণ করে। শম্ভুকে জঙ্গলের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ছিল।আর সেই সময় তার দুই সঙ্গী বৈঠা নিয়ে বাঘের উপর আক্রমন করলে বাঘ শম্ভুকে ফেলে জঙ্গলে পালিয়ে যায়।এর পরে তার দুই সঙ্গী তাকে নিয়ে সেখান থেকে জয়নগর কুলতলি ব্লক গ্রামীন হাসপাতালে নিয়ে আসে।কিন্তু অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু ঘটে।

দেহ মঙ্গলবার কুলতলি থানা থেকে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।আর সুন্দরবনের মানুষের পাশে থেকে দীর্ঘদিন কাজ করে চলেছে এপিডিআর নামে একটি মানবাধিকার সংগঠন।তাদের তরফে জেলার সহ সম্পাদক মিঠুন মন্ডল সোমবার রাতে পরিবারের পাশে থেকে সমস্ত রকমের সহায়তার আশ্বাস দেন।এ ব্যাপারে এপিডিআরের দক্ষিন ২৪ পরগনা জেলার সহ সম্পাদক মিঠুন মন্ডল মঙ্গলবার বলেন, সুন্দরবনে ক্রমাগত বাঘের আক্রমনে মৃত্যু মিছিল চলছে।অথচ মৃতের পরিবারের পাশে বন দফতরকে দেখতে পাওয়া যায় না।এই বছরে এখনো পর্যন্ত সুন্দরবনে বাঘের আক্রমনে ১৯ জন আক্রান্ত হলো,যার মধ্যে ১৪ জন মারা গেছে।অথচ বন দফতরের সদিচ্ছা না থাকায় এখনো পর্যন্ত ক্ষতিপূরণের টাকা ও কেউ পাইনি,পাইনি চাকরি।তাই আমাদের দাবি, ময়নাতদন্তের জন্য কলকাতা যাওয়ার গাড়ির খরচ বিনামূল্যে স্থানীয় থানাকে দিতে হবে।মৃত্যুর ১৫ দিনের মধ্যে মৃতের পরিবারের হাতে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতি পূরণ তুলে দিতে হবে।

See also  রাস্তার ধারে টোটো চালকের মৃতদেহ উদ্ধার, চাঞ্চল্য কোতুলপুরে

পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি দিতে হবে।এব্যাপারে কোনো রকমের অসহযোগিতা করা চলবে না।তবে এ ব্যাপারে দক্ষিন ২৪ পরগনা জেলা বন আধিকারিক নিশা গোস্বামী বলেন,যে এলাকায় দূর্ঘটনাটা ঘটেছে সেটা সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভের এলাকাধীন,তাই এ ব্যাপারে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারবো না।আর এব্যাপারে সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জাস্টিন জোন্স বলেন,সুন্দরবনের কোর এরিয়ার ভেতর ঘটনাটি ঘটায় মৃত মৎস্যজীবি সরকারি কোনো সাহায্য পাবে না।

অথচ ২০২৩ সালের ৩ রা অক্টোবর কুলতলির বাঘের কামড়ে মৃত এক মৎস্যজীবির পরিবার শান্তিবালা দেবীর করা মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি মাননীয় সব্যসাচী ভট্টাচার্যের এক রায়ে পরিস্কার করে বলে দেওয়া ছিল,কোর বাফার বলে নয়, সুন্দরবনের জঙ্গলে বাঘের কামড়ে মৃত ও আহত সবার ক্ষেত্রেই সরকারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।আর তার পর থেকে মৎস্যজীবি পরিবারদের তরফে একের পর মামলায় সরকারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে।আর সোমবার চামটা জঙ্গলে বাঘের কামড়ে মৃত শম্ভু সরদারের বি এল সি পাস থাকার পরে কেন তার পরিবার বঞ্চিত হবে এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে সুন্দরবনের মৎস্যজীবিদের মনে।তাহলে কি বাঘের কামড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হলে আইনের পথে না গেলে ক্ষতিপূরণ পাবে না মৃত ও আহতের পরিবার।মৃতের স্ত্রী মারা গিয়েছেন অনেক বছর আগে। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা ও মা, দুই সন্তান আছেন।একমাত্র রোজগেরে চলে গেল,তাহলে তাদের চলবে কি করে এই প্রশ্নই তুলেছেন এপিডিআর নামে মানবাধিকার সংগঠন।

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি