প্রকৃতির রোষে বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গ। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রবল হর্কাবাণে জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল জলপাইগুড়ি জেলার নাগরাকাটা ব্লকের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। পাহাড়ি ঢলের জলে তলিয়ে যায় টাণ্ডু এলাকার ঘরবাড়ি, ফসল, আর মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা। এক কাপড়ে সন্তানদের কোলে নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন এলাকার মানুষজন।
দুর্দিনে পাশে দাঁড়ালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বন্যা বিধ্বস্ত এলাকায় পৌঁছে মমতা নিজে পরিদর্শন করেন ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলো, শোনেন সাধারণ মানুষের আর্তি। মায়ের মতো স্নেহে তিনি আশ্বাস দেন— “কেউ গৃহহীন থাকবেন না, সরকার আপনাদের পাশে আছে।”


এই মানবিক উদ্যোগের প্রতিধ্বনি শোনা গেল প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দূরের বর্ধমানের খণ্ডঘোষেও। সেখানে থেকে উত্তরবঙ্গের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এলেন তৃণমূল কংগ্রেসের খণ্ডঘোষ ব্লক সভাপতি তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ অপার্থিব ইসলাম।

দিদির সৈনিক হিসেবে অপার্থিব ইসলাম নিজের উদ্যোগে ট্রাকে করে পাঠালেন চাল, শীতবস্ত্র, শাড়ি, পুরুষদের জামাকাপড় ও নানা প্রয়োজনীয় সামগ্রী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন এলাকার একনিষ্ঠ তৃণমূল কর্মীরা— সেখ লকাই, সেখ সাবির, মিলন চৌধুরী, রাজেশ সাহানা, মিঠু মণ্ডল ও সেখ ফটিক। তাঁদের হাতে যখন ত্রাণ সামগ্রী তুলে পেলেন পাহাড়ি গ্রামের গৃহহীন মানুষ, তখন ক্লান্ত মুখে ফুটে উঠল একচিলতে হাসি— যেন এক মুহূর্তে দুঃখ ভুলে গেলেন সবাই।

অপার্থিব ইসলাম বলেন, “আমাদের দিদি যেমন মায়ের মতো সবার পাশে আছেন, আমরাও তাঁর সৈনিক। মানুষ বিপদে পড়লে রাজনৈতিক পরিচয় নয়— আগে মানুষ হিসেবে পাশে থাকা দরকার।”
আজ জলপাইগুড়ির টাণ্ডু গ্রামে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে সেই অমর বাণী— “মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য”। ভুপেন হাজারিকার গানে আর বাস্তবে মিলেছে এক মানবতার সুর।







