নিজস্ব প্রতিবেদন, রায়না: গ্রামের মাটির গন্ধ, বাঁশের খুঁটি দিয়ে সাজানো মাঠ, দর্শকের গর্জন, ঢোলের তালে তালে উচ্ছ্বাস—এ যেন গ্রামীণ বাংলার চেনা উৎসব। পূর্ব বর্ধমান জেলার রায়না ব্লকের হিজলনা অঞ্চলের বামুনিয়া স্কুল মাঠে শুরু হয়েছে দু’দিনব্যাপী ফুটবল প্রতিযোগিতা।

প্রতিবছরের মতোই এ বছরও বামুনিয়া গ্রামবাসী বৃন্দের উদ্যোগে এই ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এলাকার সর্বস্তরের মানুষ একত্রিত হয়েছেন এই উৎসবে। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে খেলার শুভ সূচনা হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সমাজসেবী, ক্রীড়াপ্রেমী ও গ্রামের প্রবীণরা।

দশ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এবারের প্রতিযোগিতায় প্রথম দিনে ৮টি দল ও দ্বিতীয় দিনে আরও ৮টি দল মাঠে নামবে। উত্তেজনা এখন চরমে—কে জিতবে, কে হবে রানারআপ, তা জানার অপেক্ষায় দর্শক।

উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চ্যাম্পিয়ন দলের হাতে তুলে দেওয়া হবে ৯০,০০০ টাকা নগদ পুরস্কার এবং রানারআপ দলের হাতে ৭০,০০০ টাকা সহ আকর্ষণীয় ট্রফি। পুরস্কার ছাড়াও রয়েছে অসংখ্য দর্শকের ভালোবাসা ও করতালির সম্মান।
প্রতিযোগিতা ঘিরে ইতিমধ্যেই বামুনিয়া ও আশপাশের গ্রামগুলো উৎসবের রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে। সকাল থেকেই মাঠে উপচে পড়ছে দর্শকদের ভিড়। প্রবল উচ্ছ্বাসে গলা মেলাচ্ছেন ছোট-বড়, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলে।
উদ্যোক্তাদের কথায়—
“আজকের মোবাইলমুখী প্রজন্মকে মাঠে ফিরিয়ে আনতেই আমাদের এই প্রচেষ্টা। খেলার মাধ্যমে যেমন শরীর সুস্থ থাকে, তেমনই সমাজে গড়ে ওঠে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন।”
গ্রামের যুব সমাজও এই উদ্যোগে দারুণ উৎসাহিত। কারো হাতে পতাকা, কেউ আবার ড্রাম বাজিয়ে উল্লাসে মাতোয়ারা। খেলাকে ঘিরে এমন পরিবেশ যেন ছোট্ট গ্রামটিকে পরিণত করেছে আনন্দের মেলায়।
রায়নার বামুনিয়ার এই ফুটবল প্রতিযোগিতা শুধু একটি খেলা নয়—এ যেন গ্রামীণ জীবনের প্রাণের উৎসব, যেখানে ঘাম মেশে আবেগে, আর প্রতিটি গোল যেন নতুন আশার আলো জ্বেলে দেয় গ্রামের তরুণদের মনে।