আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

ভূমি দপ্তরে বিরিয়ানির পিকনিক – সেই বিরিয়ানি কাড়লো এক মুহুরির প্রাণ – অসুস্থ রেভিনিউঅফিসার

krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান, ২৬ সেপ্টেম্বর: পুজোর আন্দের মাঝে ’বিরিয়ানি’ কাড়লো ভূমি দপ্তরের এক মুহুরির প্রাণ।গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ভূমি দপ্তরের এক রেভিনিউ অফিসার। এই ঘটনা শুক্রবার তোলপাড় ফেলে দেয় পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী ১ নম্বর ব্লকের প্রশাসনিক মহলে। মৃত মুহুরির নাম সুমন্ত মল্লিক (৩৪)।তাঁর বাড়ি পূর্বস্থলী ১ ব্লকের নাদনঘাট থানার অন্তর্গত মসাগড়িয়ায়। এই ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করে মৃতর পরিবার পূর্বস্থলী ১ ব্লকের ভূমি দপ্তরের বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে নাদনঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।তার ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।পুলিশ বিরিয়ানির নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে।এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ পুলিশকে এই ঘটনার যথোপযুক্ত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,“সুমন্ত মল্লিক পূর্বস্থলী ১ ব্লকের ভূমি দপ্তরের (বিএলআরও) অফিসে মুহুরির কাজ করতেন।প্রতিদিনের মতো গত বৃহস্পতিবারও তিনি ওই অফিসে যান।পুজোর ছুটি পড়বে বলে সেদিন ওই অফিসে বিরিয়ানির খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। অফিস ছুটির পর প্রায় চল্লিশ জনের জন্য প্যাকেটজাত বিরিয়ানি আনা হয়। তা তারা সকলেই খান। কিন্তু হলে কি হবে, তা খেয়েই মুহুরি সুমন্ত মল্লিক ও রেভিনিউ অফিসার কুন্তল মাঝি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সুমন্তকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা শুরু হলেও সুমন্তর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে কালনা মহকুমায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক সুমন্তকে। মৃত বলে ঘোষণা করেন। অসুস্থ রেভিনিউ অফিসার বর্তমানে বর্ধমানের একটি বেসরকারী হাসপাতালে স্থিতিশীল রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

মৃতের স্ত্রী রিমা মল্লিক শুক্রবার অভিযোগে বলেন, “পরিকল্পনা করে ’বিষ’ মেমানো বিরিয়ানি আমার স্বামীকে খাইয়ে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনায় বিএলআরও এবং অন্য মুহুরিরাও জড়িত রয়েছে।’ এমনটা করার কারণ প্রসঙ্গে রিমাদেবী বলেন, “আমার স্বামী অল্প টাকায় সাধারণ মানুষজনের কাজ করে দিত। অন্যরা সেই কাজ করতে প্রচুর টাকা নিত। এই কারণে আমার স্বামীর কাছে মানুষজন বেশি কাজ করাতে আসতো।। এটা মেনে নিতে না পেরে বিএলআরও অফিসের অন্য মুহুরি সহ অনেকেই আমার স্বামীর শত্রু হয়ে ওঠে। তারাই পরিকল্পনা করে বৃহস্পতিবার বিএলআরও অফিসে পিকনিকের আয়োজন করে বিষাক্ত
বিরিয়ানি আমার স্বামীকে খাইয়ে প্রাণে মেরে দিয়েছে“।মৃত মুহুরির স্ত্রী তাঁর অভিযোগে আরো বলেন,“বিএলআরও অফিসের কুন্তল মাঝি স্যর আমার স্বামীকে খুব ভালোবাসতেন। এটাও অন্যদের কাছে গাত্রদাহের কারণ ছিল”।

See also  ভাতার গণপতি সেবা সমিতি সংঘের উদ্যোগে গণেশ পুজো কে সামনে রেখে মাস্ক বিতরণ

মৃতের দাদা শুভেন্দু মল্লিক বলেন,“আমার ভাই বৃহস্পতিবার দুপুর তিনটে নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে বিএলআরও অফিসে কাজে যায়। পুজোর আগে বৃহস্পতিবারই শেষ অফিসের দিন ছিল। ওইদিন অফিসে বিরিয়ানি খাওয়ার আয়োজন করা হয় ।আমাদের সন্দেহ বিরিয়ানির সঙ্গে বিষাক্ত কিছু মিশিয়ে তা আমার ভাইকে খাইয়ে প্রাণে মারা হয়েছে।এটিকে পরিকল্পিত হতাকাণ্ড বলে শুভেন্দু মল্লিকও দাবি করেছেন।“এই ঘটনা নিয়ে বিএলআরও-র প্রতিক্রিয়া পাবার অনেক চেষ্টা করেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় নি। তবে এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছেন, “সরকারি আধিকারিক হোক বা মুহুরি ,যে বা যাঁরাসরকারি অফিসে পিকনিকের আয়োজন করেছেন তাদের বিরুদ্ধে যাতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়,সেই কথাআমি পুলিশকে জানিয়ে দিয়েছি। মৃতের স্ত্রী যে অভিযোগ জানিয়েছেন ,তার ভিত্তিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এসডিপিও (কালনা ) রাকেশ চৌধুরীর নেতৃত্বে পুলিশ জোরকদমে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি