ভারত ও জার্মানি একসঙ্গে সমুদ্র প্রতিরক্ষা শক্তি বৃদ্ধির পথে বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে। দীর্ঘ ৬ মাসের স্থবিরতার পর অবশেষে কেন্দ্র প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ও মাজাগন ডকইয়ার্ডস লিমিটেডকে (MDL) অনুমতি দিয়েছে জার্মানির সঙ্গে সাবমেরিন নির্মাণে যৌথ আলোচনার জন্য। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের আওতায় তৈরি হবে অত্যাধুনিক ৬টি সাবমেরিন, যেখানে থাকবে অত্যাধুনিক এয়ার ইন্ডিপেনডেন্ট প্রোপালশন (AIP) সিস্টেম। এই বিশাল প্রকল্পে ব্যয় ধরা হচ্ছে প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জার্মান সংস্থা থাইসেনরুপ মেরিন সিস্টেমসের সঙ্গে ৬টি সাবমেরিন তৈরির জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত এমডিএলকে বেছে নেয়। তবে পরবর্তী ৭ মাস এই বিষয়ে খুব একটা অগ্রগতি হয়নি। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় নির্দেশ মেলায় আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে। এক প্রতিরক্ষা আধিকারিক জানিয়েছেন, এই আলোচনা সম্ভবত মাসের শেষের দিকেই শুরু হবে। দেশের সাবমেরিন বহরকে আরও আধুনিক ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যেই কেন্দ্রীয় পর্যায়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সব কিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোলে আগামী ৬ মাসের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জানা গিয়েছে, ভারতীয় নৌবাহিনী প্রজেক্ট-৭৫ (ইন্ডিয়া)-এর অধীনে জার্মান সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে এই সাবমেরিন তৈরি করবে। এই নতুন সাবমেরিনগুলির বিশেষত্ব হল— এগুলি একটানা প্রায় ৩ সপ্তাহ পানির নিচে থেকে কাজ করতে সক্ষম হবে, যা সম্ভব হবে জার্মান AIP প্রযুক্তির কারণে। পাশাপাশি, ভারত ইতিমধ্যেই দুটি পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন সাবমেরিন নির্মাণ করছে, যেখানে বেসরকারি সংস্থা লারসেন অ্যান্ড টুব্রো এবং সাবমেরিন বিল্ডিং সেন্টার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে।
এদিকে, সাম্প্রতিক সময়ে ভারত মহাসাগরে চিনের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি ভারতের কৌশলগত দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে। গত কয়েক বছরে চিনের নৌবাহিনী দ্রুত আধুনিকীকরণের পথে এগিয়েছে। এর পাল্টা জবাব দিতেই ভারত এই প্রকল্প হাতে নিয়েছে। আগামী দশকে ভারতীয় নৌবাহিনী প্রায় ১০টি পুরনো সাবমেরিন অবসরে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। তাই নতুন সাবমেরিন প্রকল্প শুধু প্রতিরক্ষা শক্তি বাড়াবে না, দেশীয় প্রতিরক্ষা শিল্পকেও আরও শক্তিশালী করবে।