শিলিগুড়িতে চাঞ্চল্যকর ঘটনা! বিয়ের মণ্ডপে যাওয়ার আগেই গ্রেফতার হলেন শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এক সিভিক ভলান্টিয়ার। অভিযোগ, দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্কে থাকা এক তরুণীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করেছিলেন তিনি। রবিবার তাঁর বিয়ের দিনেই ঘটল এই নাটকীয় ঘটনা। ধৃতের নাম উমেশ ঠাকুর।
শিলিগুড়ির চম্পাসারিতে নাটকীয় গ্রেফতারি:-

ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি সংলগ্ন চম্পাসারি এলাকায়। রবিবার সকাল থেকেই উমেশ ঠাকুরের বাড়িতে চলছিল বিয়ের প্রস্তুতি। প্যান্ডেল, ব্যান্ড পার্টি থেকে বরযাত্রী— সবাই প্রস্তুত ছিল। ঠিক সেই সময় সেখানে হাজির হয় পুলিশ ভ্যান। বরের সাজে শেরওয়ানি পরা উমেশ যখন বিয়ের জন্য বাড়ি থেকে বের হতে যাচ্ছিলেন, তখনই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। বিয়ে করতে যাওয়ার বদলে বরের সাজেই তাঁকে শ্রীঘরে যেতে হল।
দশ বছরের সম্পর্ক, বিয়ের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ:-
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, উমেশের বিরুদ্ধে মাটিগাড়া এলাকার এক তরুণী অভিযোগ দায়ের করেছেন। তরুণীর দাবি, উমেশের সঙ্গে তাঁর দশ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এই দীর্ঘ সময়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে উমেশ একাধিকবার তাঁর সঙ্গে সহবাস করেছেন। কিন্তু ওই তরুণীকে না জানিয়েই উমেশ ইসলামপুরে অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক করেন।
শেষ মুহূর্তেও গোপন ছিল উমেশের পরিকল্পনা:-
ভুক্তভোগী তরুণী আরও জানান, এমনকি কিছুদিন আগেও অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার উমেশ মাটিগাড়ার তরুণীর সঙ্গে পাহাড়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন। বিয়ের সকালেও ফোনে তাঁদের কথা হয়। কিন্তু উমেশ নিজের বিয়ের কথা তরুণীকে বিন্দু মাত্র টের পেতে দেননি। তরুণী বলেন, “আমার সঙ্গে দশবছরের সম্পর্ক। বিয়ের কথা বলে একাধিকবার সহবাস করেছে। বিয়ের সকালেও ফোনে কথা হয়। আমি বুঝতেই পারিনি যে উমেশ বিয়ে করছে।”
বন্ধুদের মাধ্যমে খবর, পুলিশের দ্বারস্থ তরুণী:-
উমেশের বিয়ের খবর তরুণী জানতে পারেন তাঁর বন্ধুদের কাছ থেকে। বন্ধুদের ফোন পেয়ে তিনি উমেশের বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত হন। এরপরই তিনি বিয়ে ঠেকানোর জন্য পুলিশের দ্বারস্থ হন। তরুণী উমেশের বাড়ি থেকে সরাসরি শিলিগুড়ি মহিলা থানায় গিয়ে অভিযোগ জানান এবং বিয়ে আটকানোর আবেদন করেন। অভিযোগ পাওয়ার পরই পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ করে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করে।
আইনি পদক্ষেপ ও ভবিষ্যতের দিক:-
ধৃত উমেশ ঠাকুরকে সোমবার শিলিগুড়ি আদালতে তোলা হবে। এই ঘটনা সমাজে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের মতো সংবেদনশীল বিষয় এবং তার আইনি দিকগুলি নিয়ে আবারও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং আদালতই এই বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।