রূপনারায়ণ নদে নৌকাডুবি হয়ে নিখোঁজ কমপক্ষে ৫। এর মধ্যে রয়েছে এক শিশুও, এক কিশোর ও দুই বৃদ্ধ ও এক বৃদ্ধা। চারজনের বাড়ি হাওড়া এবং একজনের বাড়ি বাগনানের মানকুর। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটে দাসপুর থানার দুধকোমরা এবং হাওড়ার বাগনান থানার চিতনান এলাকার মাঝে রূপনারায়ণ নদে। পুলিশ জানিয়েছে লিলুয়া বেলগাছিয়া কুঞ্জপাড়া থেকে মহাদেব কর্মকার, অচ্যুত সাহা ও অমল ঘোষ এই তিনজন তাদের ফ্যামেলি নিয়ে ঘুড়তে যায়। নিখোঁজরা হলেন ঋষভ পাল (৭), প্রীতম মান্না (১৭), অচ্যুৎ সাহা, অমর ঘোষ ও তার স্ত্রী সঙ্গীতা ঘোষ। প্রিতমের বাড়ি মানকুরে। বাকি চারজনের বাড়ি হাওড়ার বেলগাছিয়ার লিচু বাগান এলাকায়। নিখোঁজদের সন্ধানে এলাকার মাঝিদের নিয়ে পুলিশ রূপনারায়ণ নদের মানকুর বাক্সি সহ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি করছে। আসছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের টিমও।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থালে আসেন হাওড়ার গ্রামীণ পুলিশের সুপার স্বাতী ভাঙ্গালিয়া, ছিলেন আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল , বাগনান এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য সুপ্রিয় সিংহ প্রমূখ।জানা গিয়েছে মোট ১৮ জনের একটি দল মানকুর থেকে নৌকায় চেপে পশ্চিম মেদিনীপুরের দুধকুমরার ত্রিবেনী পার্কে চড়ুইভাতি করতে আসে। choruibhati শেষে তারা ফের নৌকায় চেপেই মানকুরের দিকে ফিরছিলেন। সেই সময়ই কোন কারণে নৌকা কাত হয়ে যায় এবং তারপরে ডুবে যায়। সকলেই নদীতে পড়ে যান। নৌকা ডুবতে দেখে নদীতে থাকা ও পাড়ে থাকা অন্যান্য নৌকার মাঝিরা নৌকা নিয়ে নদীতে চলে যায়। উদ্ধার কাজ করেন।
তারা ১৩ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। বাকিরা এখনো নিখোঁজ। জানা গিয়েছে, হাওড়ার বেলগাছিয়ার লিচুবাগান থেকে ১৩ জন এসেছিলেন। আর মানকুরের পাঁচজন ছিলেন। মহাদেব কর্মকার ছিলেন মূল উদ্যোক্তা। তিনি তার পরিচিত গণেশ মান্নার বাড়িতে মানকুরে এসেছিলেন। সেখান থেকেই তারা চড়ুইভাতি করতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। গণেশ মান্না নিজেও এদিন পিকনিকে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন যাওয়ার সময় নৌকা দুটি খেপে ১৮ জনকে ভাগ করে নিয়ে গিয়েছিলেন। আর ফেরার সময় একটি ক্ষেপেই সকলকে নিয়ে ফিরছিলেন আর এতেই সমস্যা হয়েছে। যাত্রীদের মধ্যে অনেকে বলেছেন নৌকায় জল ছিল। তারা নৌকার মাঝিকে জল বের করে নৌকা ছাড়ার কথা বললেও তিনি তা শোনেননি।
এদিকে এই খবর পেয়ে বেলগাছিয়ার লিচু বাগানে নেমে এসেছে উৎকণ্ঠা। জানা গিয়েছে এদিন আটটা সাড়ে আটটা নাগাদ লোকেরা যে যার নিজেদের ব্যক্তিগত গাড়ি করে মানকুরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন। এখানে দশটা সাড়ে দশটা নাগাদ পৌঁছান এবং তারপরেই নৌকায় করে দুধকোমরার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। দুধকোমরায় তারা পৌঁছেছিলেন সাড়ে বারোটা নাগাদ। বেলগাছিয়ার বাসিন্দারা জানিয়েছেন বিকেল চারটে সাড়ে চারটের পর থেকে তারা আর কোন কারো ফোনে পাননি। সন্ধ্যার পর মান করে লোককেই তারা ফোন করে জানতে পারে নৌকাডুবি হয়েছে। এখন তাদের একটাই প্রার্থনা সকলে যেন জীবিত অবস্থায় বাড়িতে ফিরে আসেন।