প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান ;- মেলেনি তৃণমূল নেতাকে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার কোনো প্রমান।তাই বিচারকের নির্দেশে জেলবন্দি দশা থেকে বেকসুর খালাস পেলেন তৃণমূলের নেতা সহ ২৬ জন ।লোকসভা ভোটের
মুখে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া মহকুমা আদালতের
এই রায় কার্যতই মঙ্গলকোটে শোরগোল ফেলে দিয়েছে। বেকসুর খালাস পাবার রায় শুনে এদিন আদালত চত্ত্বরে কেঁদে ভাসান তৃণমূল নেতা বিকাশ চৌধুরী। তিনি বলেন,সত্যেরই জয় হল ।


রাজনৈতিক হিংসা হানাহানির ঘটনায় বহুবার খবরের শিরোনামে স্থান পেয়েছে মঙ্গলকোটের নাম । এহেন মঙ্গলকোটে ২০১৭ সালের ১৯ জুন
তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সানাউল্লা শেখ ওরফে
ডালিম শেখ। ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ছটা নাগাদ
ডালিম শেখ মঙ্গলকোটের নিগন চটি এলাকায় নিজের মাছের আড়তে বসে ছিলেন।অভিযোগ ওঠে ওই সময়েই বাইকে চেপে আসা আততায়ীরা পয়েট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেথে গুলি করে ডালিম শেখকে খুন করে পালায়।
এই ঘটনার পরেই নিহতের পরিবার দলের গোষ্ঠীদ্বন্দের কারণেই মঙ্গলকোটের শিমুলিয়া ১ অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি ডালিম শেখ কে খুন হতে হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে স্বোচ্চার হয় । সেই কথা উল্লেখ করেই ঘটনার পরদিন ডালিম শেখের দাদা আশাদুল্লা শেখ মঙ্গলকোট থানায় ১৫ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন।খুনে নাম জড়ায় রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরির ভাই রহমতুল্লা চৌধুরি এবং প্রাক্তন জেলা পরিষদের সদস্য বিকাশ নারায়ন চৌধুরিও।

খুনের অভিযোগের তদন্তে নেমে পুলিশ এই খুনের মামলার তদন্ত ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করে। পরে ২০১৭ সালের ৩ জুলাই তদন্তভার হাতে সিআইডি
আরও ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করে৷ ওই বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর সিআইডি কাটোয়া মহকুমা আদালতে চার্জশিট জমা দেয় । এই খুনের মামলার বিচার প্রক্রিয়া চলা কালীন ৩৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহন করা হয় । কাটোয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা (দ্বিতীয়) বিচারক মধুছন্দা বোস এদিন মামলার রায় দেন।

রায়ে তিনি প্রাক্তন জেলা পরিষদ সদস্য বিকাশ চৌধুরী সহ ধৃত ২৬ জনকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেন৷ আসামী পক্ষের আইনজীবী ধীরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার কোন প্রমাণ না পাওয়াতেই বেকসুর খালাস পেয়েছেন ২৫ জন ।আর সরকারি আইনজীবী সরোজ দাস জানান,জার্জমেন্টের কপি পেলে বুঝতে পারবো আমরা কোন জায়গাতে পিছিয়ে ছিলাম। বিকাশ চৌধুরী বিচারকের রায় শুনে এদিন আদালত চত্ত্বরেই চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন,“সত্যের জয় হল বটে , তবে দীর্ঘ সাত বছরে আমার সব হারিয়ে গেছে“।