প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান ৬ নভেম্বর
সম্পত্তি নিয়ে বাবা ও বড় দাদার সঙ্গে বিবাদ চলছিল ছোট ছেলের ।সেই বিবাদের জেরে ছোট ছেলে ,বৌমা ও দুই নাতনিকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার জন্য ঘরে আগুন লাগিয়ে দেবার অভিযোগ উঠলো বাবা ও দাদার বিরুদ্ধে ।আশঙ্কাজনক অবস্থায় শেখ ইকবাল ,তাঁর স্ত্রী তুহিনা বেগম এবং তাঁদের দুই নাবালিকা কন্যা সুহানা খাতুন ও বিলকিস খাতুনকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে । বুধবার দুপুরে সেখানে মারাযায় শেখ ইকবাল । বাকি তিন জন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে । নৃশংস এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের গলসির খানো গ্রামের ডাঙাপাড়ায় ।স্বপরিবার শেখ ইকবালকে পুড়েয়ে মারার চক্রান্তে জড়িত থাকার অভিযোগে বুধবার গলসি থানার পুলিশ ইকবালের বাবা শেখ ইউসুফ ও তাঁর বড় ছেলে শেখ একরামকে গ্রেফতার করেছে । এদিন দুই ধৃতকেই পেশ করা হয় বর্ধমান আদালতে ।বিচারক দুই ধৃতের পাঁচদিন পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন । ধৃতদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করেছেন ডাঙাপাড়ার আপামোর বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে গলসি ২ নং ব্লকের খানো গ্রামের ডাঙাপাড়ায় বসবাবাস করেন শেখ ইউসুফ । তাঁর দুই ছেলে । ইউসুফ তাঁর বড়ছেলে শেখ একরামকে সম্পত্তির বেশিরভাগটা দিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত নেন । ছোট ছেলে শেখ ইকবাল তার বিরোধীতা করে । এসব নিয়ে প্রায়সই বাবার সঙ্গে ইকবালের আশান্তি লেগে থাকতো। ইকবালের স্ত্রী তুহিনা বেগমের কাকা মসবুর আলি শেখ বুধবার লিখিত অভিযোগে পুলিশকে জানিয়েছেন , তাঁদের জামাইয়ের প্রতিবাদ মেনে নিতে নাপেরে স্বপরিবার তাঁদের পুড়িয়ে মারার পরিকল্পনা করে শ্বশুর ইউসুফ ও তার বড়ছেলে একরাম । পরিকল্পনা মাফিক ইউসুফ আগেই বাজার থেকে একটি চার লিটারের সিলিন্ডার কিনে তাতে গ্যাস ভরে রেখেছিল । অভিযোগ মঙ্গলবার রাত্রি আনুমানিক ২ টো নাগাদ গৃহকর্তা শেখ ইউসুফ তাঁর ছোট ছেলের ঘরের দরজার বাইরে থেকে তালা মেরেদেয় ।ওই সময়ে ঘরের একটি জানালা খোলা রেখে ইকবাল তাঁর স্ত্রী ও দুই নাবালিকা কন্যা ঘুমাচ্ছিল । বধূ তুহিনার কাকা ও স্থানীয়দের অভিযোগ পাইপের মাধ্যমে ছোট ছেলের ঘরের খোলা জানালা দিয়ে ভিতর গ্যাস ঢুকিয়ে দেয় ইউসুফ । ওই ঘরে ভালমতো গ্যাস ঢুকে যাবার পর ইউসুফ একটি কাঠিতে ন্যাকড়া জড়িয়ে তাতে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে ইকবালের ঘরে ছুঁড়ে দেয় । বধূ তুহিনা বেগমের কাকার অভিযোগ ইউসুফের এই গোটা পরিকল্পনার সঙ্গী ছিল তাঁর বড়ছেলে একরাম । ইউসুফ ন্যাকড়া জড়ান আগুনের কাঠি ইকবালের ঘরে ছুড়ে দেওয়া মাত্রই ঘরে বিভৎস ভাবে আগুন ধরেযায় । আগুনে পুড়ে তুমুল আর্তনাদ শুরুকরে ইকবাল , তার স্ত্রী তুহিনা ও তাঁদের দুই নাবালিকা কন্যা সুহানা এবং বিলকিস । আর্তনাদ শুনে প্রতিবেশীরা সেখানে পৌছে দরজার তালা ভেঙে চারজনকে উদ্ধার করে । গুরুতর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ভোররাতে তাদের ভর্তি করা হয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে । এদিন দুপুরে জামাই ইকবাল মারাযায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে বিকি তিনজন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে ।
এদিন ঘটনাস্থলে তদন্তে গিয়ে পুলিশ সিলিন্ডার ও একটি টর্চ লাইট সেখানে পায় । পুলিশ সেগুলি বাজেয়াপ্ত করছে । তদন্তের প্রয়োজনে ঘরটিতে পুলিশ সধারনের প্রবেশ আটকে দিয়েছে । গলসি থানার পুলিশ জানিয়েছে নজিরবিহীন এই হিংসার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।