বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হলেন এক ভাগচাষী । মৃত চাষীর নাম শ্যামল হাজরা (৫৭)।পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার পাড়াতল ১ পঞ্চায়েতের বসন্তপুর গ্রামে তাঁর বাড়ি । সোমবার বর্ধমান হাসপাতাল পুলিশ মর্গে মৃত চাষীর দেহের ময়নাতদন্ত হয় ।দেনার দায়েই ভাগচাষী শ্যামল হাজরা বিষখেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে দাবিকরেছে তাঁর পরিবার । চাষীর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ কি তা খতিয়ে দেখছে ব্লক প্রশাসন ।
বসন্তপুর গ্রামের হাজরাপাড়ায় ইন্দিরা আবাস যোজনার এক কুটুরি ঘরে বসবাস করেন শ্যামল হাজরার পরিবার সদস্যরা । মৃতর দুই ভাইপো সুকুমার হাজারা ও প্রশেনজিৎ হাজরা জানিয়েছেন , শ্যামল বাবুর নিজের কোন চাষজমি নেই ।পঞ্চায়েত এলাকার কয়েকজন ব্যক্তির ৫ বিঘা জমি ভাগেনিয়ে তিনি চাষ করতেন । ভাইপোরা জানিয়েছে , মূলত স্ত্রী ললিতার নামে বিভিন্ন গোষ্ঠী মাধ্যমে লোন নিয়ে চাষে খরচ করতেন শ্যামল হাজরা । এই ভাবে চাষ করতে গিয়ে তাঁর দেনার পরিমাণ দাড়িয়েছিল প্রায় তিন লক্ষ টাকা । দেনার কিস্তি বাবদ ১৫-২০ হাজার টাকা তাঁকে প্রতিমাসে শোধ করতে হত ।
দেনার টাকায় গত মরশুমে আমন ধান ও আলু চাষকরে তিনি আর্থিক ভাবে ক্ষতি গ্রস্ত হন । সেকারণে দেনার কিস্তির টাকা আর শোধ করেতে পারছিলেন না। পাওনাদারদের চাপ এড়াতে কিছুদিন আগে শ্যামল বাবুর স্ত্রী ললিতা হুগলীর মাঝেরগ্রামে বাবার বাড়ি চলে যেতে বাধ্য হন । দিনকয়েক আগে ললিতাদেবী বসন্তপুরের বাড়িতে ফিরেএলে দেনা শোধের জন্য পাওনাদাররা তাঁকে ফের প্রচন্ড চাপদিতে শুরু করে । এইসব নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় ছিলেন শ্যামল হাজরা । রবিবার সকালে বাড়ির বাইরে জমিতে গিয়ে তিনি বিষ খেয়ে নেন । ’ আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে প্রথম জামালপুর ব্লক স্বাস্থকেন্দ্রে ও পরে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়েযাওয়া হয় । রবিবার গভীর রাতে সেখানেই ভাগ চাষীর মৃত্যু হয় । দেনার দায়েই শ্যামল হাজরা বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে এদিন তাঁর স্ত্রী ও ছেলে দাবি করেছেন ।
জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মেহেমুদ খান বলেন ,‘ বসন্তপুরের ভাগচাষী শ্যামল হাজরার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে শুনেছি । প্রশাসনিক ভাবে খোঁজ খবর নিয়ে দেখাহবে প্রকৃত কি কারণে ওই চাষীর মৃত্যু হয়েছে ।