নিঃসন্তান দম্পতির কোলে হঠাৎই শিশু সন্তান দেখে সন্দেশ হয়েছিল প্রতিবেশিদের। এই বিষয়টি নিয়ে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার পানুহাটের বাসিন্দারা বৃস্পতিবারই পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান । অভিযোগ পাবার পরেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ ও চাইল্ডলাইন । পুলিশ তদন্তে নামতেই সামনে আসে শিশু বিক্রীর চাঞ্চল্যকর ঘটনা।ওই দিনই চাইল্ডলাইন শিশুটিকে উদ্ধার করে।পাশাপাশি শিশু কেনার দায়ে দম্পতি প্রদীপ বিশ্বাস ও তাঁর স্ত্রী অনুশ্রী বিশ্বাসকে আটক করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদে উঠেআসে বর্ধমানের কেশগঞ্জ চটি এলাকার একটি নার্সিং হোমের টেকনিশিয়ান ও এক চিকিৎসকের নাম । বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বর্ধমানের ওই নার্সিং হোমে হানা দেয় কাটোয়া থানার পুলিশ। সেখানে চিকিৎসকের খোঁজ পাওয়া নাগেলেও পুলিশ টেকনিশিয়ান শৈবাল রায়কে ধরে ফেলে। দম্পতি ও টেকনিশিয়ানকে মুখোমুখি বসিয়ে পুলিশ জেরা করতেই শিশু বিক্রীর পর্দা ফাঁস হয়েযায় । রাতে পুলিশ তিনজনকেই গ্রেফতার করে ।
শুক্রবার ধৃতদের পেশ করা হয় কাটোয়া মহকুমা আদালতে । শিশু বিক্রীর ঘটনায় জড়িত বাকিদের খোঁজ পেতে তদন্তকারী অফিসার ধৃতদের হেপাজতে নেবার আবেদন আদালতে জানান । বিচারক তিন ধৃতকে ৫ দিন পুলিশ হেপাজতে নেবার নির্দেশ দিয়েছেন ।
পুলিশ সূত্রে জানাগেছে ,পানুহাটের দাসপাড়ায় দম্পতির বাড়ি। বিয়ের ১১ বছর পরেও দম্পতির কোন সন্তান হয়নি । মাসখানেক যাবৎ একটি শিশুকে কোলেনিয়ে দম্পতিকে ঘুরতে দেখেন প্রতিবেশীরা । কোনো জায়গা থেকে অবৈধ উপায়ে দম্পতি শিশুটি জোগাড় করেছেন বলে সন্দেহ জাগে প্রতিবেশীদের ।
বিষয়টি নিয়ে তাঁরা বৃহস্পতিবার কাটোয়া থানায় অভিযোগ জানান । ওই দিনই চাইল্ডলাইনকে সঙ্গে নিয়ে কাটোয়া থানার পুলিশ দম্পতির বাড়িতে তদন্তে যায় ।পুলিশ জানিয়েছে , জিজ্ঞাসাবাদে দম্পতি জানিয়েছে বর্ধমানের কেশবগঞ্জ চটি এলাকার লাইফ লাইন নামে একটি নার্সিং হোম থেকে গত ২৮ জুন তাঁরা ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে শিশুটি কিনেছেন। একাজে তাঁদের সাহায্য করেছে মোল্লা কাশেম আলি নামে নার্সিংহোমের এক চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ান শৈবাল রায় । শিশুটি বিশ্বাস দম্পতিরই এমনটা জাহির করার জন্য এই দু-জন যেসব ভূয়ো প্রেসক্রিপশন তৈরি করেছিল তারও হদিশ উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে ।
ছয় মাস বয়সী শিশুটির প্রকৃত জন্মদাতা কে তা বিশ্বাস দম্পতি জানাতে না পারার চাইল্ডলাইন শিশুটিকে নিছেদের হেপাজতে নিয়ে নিয়েছে।পুলিশ জানিয়েছে ,শিশুটির প্রকৃত জন্মদাতা কে তা জানার চেষ্টা চলছে ।একই সঙ্গে শিশু বিক্রীর ঘটনার জড়িত বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলান হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। শিশু বিক্রীর অভিযোগ নিয়ে বর্ধমানের নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ মুখে কুলুপ অাঁটেলেও জেলা স্বাস্থদপ্তর ঘটনার তদন্ত চালান শুরু করেদিয়েছে।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ধ্রুব দাস বলেন,শিশু কেনার দায়ে দম্পতিকে ও শিশু বিক্রীর ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বর্ধমানের এখটি নার্সিং হোমের টেকনিশিয়ানকে গ্রেফতার করা হয়ে । ঘটনায় আরো কেউ যুক্ত আছেকিনা তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে ।