প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান, ১৩ নভেম্বর: ভোটার তালিকার দুই জায়গায় আত্মগোপন করে রয়ে ছিলেন বঙ্গ বিজেপির এক পঞ্চায়েত সদস্যের দুই বাবা।তবে শেষ রক্ষা হয় নি।এসআইআর(SIR) লাগু হতেই প্রকশ্যে চলে এসেছে বিজেপির ওই পঞ্চায়েত সদস্যের দুই বাবার আসল পরিচয়। তা নিয়ে এখন হুলস্থুল চলছে পূর্ব বর্ধমানের কালনার সাতগাছি পঞ্চায়েত এলাকায়। ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব ।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কালনা ২ নম্বর ব্লকের সাতগাছি পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্যের নাম গোপাল বাড়ৈ।তিনি স্থানীয় শ্বাসপুর রামকৃষ্ণপল্লী এলাকা থেকে নির্বাচিত সদস্য। এলাকাবাসীর কথায় জানা গিয়েছে,“বাংলায় এসআইআর (SIR) লাগু হওয়ার পর থেকেই বিরোধীদের পাশাপাশি শাসক দলের নেতা ও কর্মীরাও ভোটার তালিকা ঘাঁটাঘাটি করা শুরু করেন। তখনই হদিশ মেলে ভোটার তালিকায় আত্মগোপন করে থাকা বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য গোপাল বাড়ৈ এর দুই বাবার পরিচিতি ।
ভোটার তালিকা পর্যালোচনার সময় শাসক দলের লোকজন দেখতে পান , “একই ভোটার তালিকার দুই জায়গায় রয়েছে বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য গোপাল বাড়ৈ এর নাম।শুধু দু’জায়গায় নাম থাকাই নয়,গোপাল বাড়ৈ এর এপিক কার্ড নম্বারও ভোটার তালিকার দুই জায়গায় যে দু’রকম রয়েছে,সেটাও দেখা যায়। এও দেখা যায়,ভোটার তালিকার এক জায়াগায় নিজের জ্যাঠামশাই দুলাল বাড়ৈকে বাবা পরিচয় দিয়ে গোপাল বাড়ৈ ভোটার কার্ড তৈরি করেছেন ।অন্য আর একটি ভোটার কার্ডে দেখা যায় গোপাল বাড়ৈ তাঁর আসল বাবা অনিল বাড়ৈ এর নাম দিয়ে ভোটার কার্ড বানিয়েছেন।“ এই ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকায় হুলস্থুল পড়ে যায়।
সত্য সামনে চলে আসার পর গোপাল বাড়ৈ বেশ বেকায়দায় পড়ে যান। তবে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেনিয়ে মঙ্গলবার তিনি বলেন,“গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই আমার দুটি ভোটার কার্ড রয়েছে। জ্যেঠামশাইকে বাবা বানিয়ে ভোটার কার্ড তৈরির কারণ জানতে চাওয়া হলে গোপাল বাড়ৈ পরিস্কার কিছু খোলসা করেন না।তিনি শুধু বলেন,,“আমি এর সংশোধন করতে চেয়ে ছিলাম ।কিন্তু সংশোধনের জন্য তখন নির্বাচন কমিশনারের সাইট বন্ধ ছিল“।একই সঙ্গে তিনি সাফাই দেন , একটা নাম তো এবার এসআইআরে বাদ হয়ে যাবে।
বিষয়টিকে অবশ্য এত হালকা ভাবে নিতে চান নি তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত সাতগাছি পঞ্চায়েতের প্রধান হরেকৃষ্ণ মন্ডল। তিনি বলেন,“একই ব্যক্তির নামে ভিন্ন নম্বারের দুটি ভোটার কার্ড থাকাটাই তো বেআইনি। তবে এই ঘটনা প্রমান করে দিয়েছে, বাংলার ভোটার তালিকায় বিজেপি ভালোই ভুতুড়ে ভোটার ছেড়ে রেখেছে।সেই রকমই একজন হলেন বিজেপির এই পঞ্চায়েত সদস্য“। বিষয়টি ব্লকের বিডিও ও নির্বাচন কমিশনের নজরে আনা হয়েছে বলে পঞ্চায়েত প্রধান জানিয়েছেন।








