আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

গন্ধেশ্বরী নদীর বাঁধে সুড়ঙ্গের সন্ধান বাঁকুড়ায়

krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

রথীন রায়

 

দীবাঁধের ফাটল সব সময় আতঙ্কের ! বিশেষত, বর্ষার আগে হলে তো কথাই নেই ! কারণ, বর্ষায় নদী যে ফুলেফেঁপে ওঠে ! তখন দুর্বল বাঁধ ফাটিয়ে জল ঢুকে পড়ে মাঠ-ঘাট-পুকুর ছাপিয়ে গ্রামে ! তাই গ্রামবাসীরা এই সময় নদী বাঁধের দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখেন ! কিন্তু নদী বাঁধের ফাটল থেকে যে এমন একটা জিনিস মিলবে তা কখনও কেউ আশা করেননি ! এবার সেটাই দেখা গেল, ফাটল থেকে উঁকি মারছে চুন সরকির গাঁথনি ! তাহলে কী বাঁধের ভেতরে ঘর রয়েছে নাকি ?

 

উৎসাহী আমনুষজন শুরু করলেন খনন ! আর খনন শুরু হতেই চমকে উঠলেন ! বেরিয়ে এলো আস্ত একটা দরজা, অর্থাৎ সেখানে রয়েছে সুড়ঙ্গ পথ ! বেশ কিছুটা খোঁড়ার পর সুড়ঙ্গের দরজার পর কিছুটা পথ মিললেও তার শেষ দেখা যায়নি ! ফলে মানুষের উৎসাহের অন্ত নেই ! খবর ছড়িয়ে পড়তেই সকলে সুড়ঙ্গ পথ দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন ! সকলের আশা, নিশ্চয় মিলতে পারে পুরনো দিনের নিদর্শন ! খবর পেয়ে পুলিশও গিয়েছে ঘটনাস্থলে ! যদি পুরনো দিনের নিদর্শন থাকে তাকে তো পাহারায় রাখতে হবে ! নাহলে নষ্ট করে দিতে পারে কেউ ! বাঁকুড়ায় গন্ধেশ্বরী নদীর পাড়ের মাটি খুঁড়তে খুঁড়তেই এভাবে বেরিয়ে এলো এক সুড়ঙ্গের মুখ !

 

ওই দরজার পিছনে আরও অনের রহস্য লুকিয়ে আছে বলেই মনে করছেন এলাকার মানুষ ! বাঁকুড়া শহরের সতীঘাট এলাকা থেকে প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে রাজারবাগান এলাকায় এই সুড়ঙ্গের মুখের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে ! বাঁকুড়া শহরের সতীঘাট থেকে গন্ধেশ্বরী নদীর পাড় ধরে ২-১ কিলোমিটার এগোলেই রাজারবাগান এলাকা ! একসময় এলাকায় তেমন জনবসতি ছিল না বলেই জানা যায় ! ঘন জঙ্গলে ঢাকা ওই এলাকা ! ছিল ডাকাতদের নিত্য আনাগোনা, বর্তমানে ওই এলাকার কিছুটা দূরে লোকজন বসবাস শুরু করলেও গন্ধেশ্বরী নদীর পাড়ে যাতায়াত করেন খুব কম মানুষ ! দিন কয়েক আগে স্থানীয় কয়েকজন নদীর পাড়ে গিয়ে দেখেন পাড়ের মাটি ধসে যাওয়ায় বেরিয়ে পড়েছে একটি ইটে বাঁধানো সুড়ঙ্গের মুখ ! যুবকরা নিজেরাই ওই সুড়ঙ্গে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করেন !

See also  সদ্যোজাত সন্তানকে হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করলো বাঁকুড়া জেলা চাইল্ড লাইন

 

স্থানীয়দের দাবি, সুড়ঙ্গর ভেতরে প্রায় ২০ ফুট খোঁড়া হলেও তার শেষ পাওয়া যায়নি ! চওড়ায় প্রায় আড়াই ফুট ও উচ্চতায় প্রায় সাড়ে তিন ফুট আকারের এই সুড়ঙ্গের চারিদিক পোড়া মাটির ইট ও চুন সুরকি দিয়ে বাঁধানো ! বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করেছে বাঁকুড়া সদর থানা ! স্থানীয়দের দাবি, রহস্যময় এই গুপ্ত সুড়ঙ্গের রহস্যভেদ করার জন্য প্রশাসনিক উদ্যোগে আরও খননকার্য হোক ! আর এটি রটতেই নানা জনের নানা মত ! কেউ বলছেন, কোন রাজা রাজারা এই সুড়ঙ্গ তৈরি করে থাকতে পারেন ! হয়তো এখানে মাটি খুঁড়লে আরও অন্য নিদর্শনও বেরোতে পারে ! কারও মতে বিপ্লবী আমলের সুড়ঙ্গ হতে পারে !

 

বিপ্লবীরা হয়তো লুকিয়ে থাকার জন্য এমনটা করে থাকতে পারে ! কিন্তু তার শেষ কোথায় ?
শেষে আছেই বা কী ?
যতক্ষণ না তা কেউ জানতে পারছেন ততক্ষণ যেন আশা মিটছে না ! সকলের দাবি, প্রশাসনিক উদ্যোগে দ্রুত খননকাজ শুরু হোক ! এর ভিতর থেকে যদি কোনও পুরনো আমলের নির্মাণ বেরিয়ে আসে, তাহলে তা এলাকার জন্য গর্বের হবে ! মিল‌তেও পারে পুরনো কোনও রহস্য কাহিনীও !!

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি