আঠারো বছর পরে
মানস কুন্ডু
জানালা পাশে কে যেন দাঁড়ালো এসে!
চুপিচুপি আমাকে দেখে নিল একবার;
দুবার তিনবার এমন ভাবে সারারাত—-
কতোদিন দেখি নাই তাকে—-
যত দূরে গেছি ততই উজ্জ্বল হয়েছে সে
ততই বুঝেছি তাকে ভালোবেসেছি আমি
কতটা ভালোবাসলে বেঁচে থাকে হৃদয়ে;
তখন আমি আঠারো সেও অনেক ছোট
প্রথম দেখেছি তখন সে তেরো কি চোদ্দ
শেষ দেখেছি তাকে নববধূর সাজে—-
আজ হাতে গোনা আঠারো বছর আগে;
এখনও দেখি রক্তে মাখা আঙ্গুল খানি
আমারই সাদা রুমালে দিয়েছি বেঁধে—-
তার রক্তের দাগ রেখেছিনু যত্নে কতদিন
আমিও কেঁদেছি সেইদিন তার আঘাতে;
তবু বলা হয়নি ভালোবাসার ছোট্ট কথাটা
সাহসের অভাবে হারিয়েছি হঠাৎ করে—-
আজও খুঁজে ফিরি আমার শৈশব—-
ফিরে যেতে চাই সেই গ্রামের কাঁচা পথে
শুধুমাত্র তাকে ফিরে পাওয়ার আশাতে।
তাকে হয়তো পাবো না জেনেও
এখনও ভালোবাসি মনে মনে—-
খুঁজে বেড়াই তাকে পথের প্রতিটি বাঁকে;
আজ সে আমার আর নয়
তবুও আমি রয়ে গেছি তার হয়ে
পারবো না আর এ জন্মে অন্যকারো হতে
বেশ আছি বেঁচে পুরাতন স্মৃতি হাতরিয়ে;
সুখে কাটছে দিনগুলি সেই হাসি ভাসিয়ে
যেমন দেখেছি ঠিক আঠারো বছর আগে
আমার আকাশ মাঝে মাঝে আলো হয়
যখন সে দাঁড়ায় এসে আমার সামনে—-
তখন আসে কতো জোনাকি আলো নিয়ে
দেখিয়ে যায় তাকে সুস্পষ্ট করে
এখন আমরা কথা বলি রাত্রি গভীরে
সে আমাকে পাগল বলে আদরে ভরিয়ে
আমিও তাকে পাগলী বলি মাঝে মাঝে
তাকে সব বলেছি আর লুকাইনি কিছুই
যে কথা বলার ছিল আঠারো বছর আগে।।
