এক কলেজ ছাত্রর তৎপরতায় বড়সড় দুর্ঘটনার হাতথেকে রক্ষা পেল লোকাল ট্রেন। বর্ধমান স্টেশান ভবনের একাংশ ভেঙেপড়ার ঘটনার পর ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতে আবারও বিপত্তি ঘটলো বর্ধমান- হাওড়া কর্ড শাখায় । কলেজ ছাত্র সুরজ ঘোষ রবিবার সকালে পল্লারোড স্টেশান সংলগ্ন মামুদপুরে রেল লাইনে বড়সড় ফাটল দেখতে পাওয়াতেই রোখাগেল ট্রেন দুর্ঘটনা।একের পর এক ঘটেচলা এমন ঘটনায় উদবিগ্ন বর্ধমানের রেল যাত্রীরা ।
যাত্রী ঠাসা বর্ধমান হাওড়া কর্ড শাখার ডাউন লোকাল ট্রেন রবিবার সকাল ৮টার কিছু সময় আগে পাল্লারোড স্টেশানে পৌছায় ।ওই সময়েই স্টেশান থেকে আনুমানিক ১৫০ মিটার দূরে মামুদপুর এলাকায় ডাউন লাইনে বড়সড় ফাটল দেখতে পায় স্থানীয় কলেজ ছাত্র সুরজ ঘোষ ।তারই মধ্যে স্টেশান ছেড়ে ট্রেন চলতে শুরু করেদেয়। ওই লাইন দিয়ে ট্রেনটি গেলে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটেযাবে বুঝতে পেরে সুরজ রেল লাইন ধরে বেশকিছুটা ছুটে গিয়ে খবর দের লাইনে কাজ করতে থাকা দুই কর্মীকে ।তারা সবাই মিলে ট্রেন চালককে সতর্ক করে ট্রেন দাঁড় করায় । দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায় ট্রেনটি ।লাইন মেরামতি কাজ শেষ হলে এদিন বেলা ৯টার কিছু পর ডাউন লাইনে ফের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয় ।
তবে এই ঘটনার জেরে এদিন চরম দুর্ভোগ পোয়াতে হয় ওই লোকাল ট্রেনের যাত্রীদের ।পূর্ব বর্ধমানের মেমারির মামুদপুর এলাকায় বাড়ি সুরজ ঘোষের । চাষী পরিবারের এই যুবক বর্ধমান রাজ কলেজে দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া ।মামুদপুরে রেললাইনের অপর পাড়ে তাঁদের চাষের জমি রয়েছে। তাঁর বাবা রামপ্রসাদ ঘোষ চাষের কাজ দেখভাল করেন। রবিবার কলেজ ছুটির দিনে বাবাকে বিশ্রাম দিয়ে সুরজ নিজে চাষের জমির দেখভাল করেতে যায় । এদিন সকালে সুরজরেললাইন পার হয়ে তাঁদের চাষের জমির দিকে যাচ্ছিল । সুরজ জানিয়েছে ,“তখনই ডাউন রেল লাইনে বড়সড় ফাটল তাঁর নজরে আসে । কাকে এই কথা জানাবে এমনটা ভাবতে ভাবতেই লোকল ট্রেনটি পল্লারোড স্টেশান ছেড়ে পরবর্তী স্টেশানের উদ্দেশ্যে রওনা শুরু করেদেয় ।সুরজ বলেন , “ওই লাইন দিয়ে ট্রেন গেলে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটেযাবে তা বুঝতে তাঁর অসুবিধা হয়নি । তাই এক মুহুর্ত আর দেরি না করে লাইন ধরে ছুটতে শুরু করি । কিছুটা যাবার পর লাইনের কাজ করতে থাকি দূজনকে লাইনে ফাটল থাকার কথা জানাই । এক কর্মী তাঁর পোষাক খুলে লাইনে দাঁড়িয়ে নাড়তে শুরু করেন । আর আমি ও অপর জন ট্রেন থামানোর জন্য হাত চিৎকার করতে থাকি । চালক বিপদ বার্তা বুঝতে পেরে ট্রেন দাঁড় করয়ে দেন । নয়তো বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটেযেতে পারতো । ” বুদ্ধিদীপ্ত এই কাজের জন্য ট্রেন যাত্রীরা সুরজ কে সাধুবাদ জানান । রামপ্রসাদ ঘোষ বলেন ,তাঁর ছেলের তৎপরতায় ট্রেন যাত্রীরা বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছে । নয়তো বড় অঘটন ঘটেযেত ।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন , জানাগেছে স্থানীয় এক ছাত্র এদিন সকালে লাইনে ফাটল দেখতে পায় । সে বিষয়টি দ্রত গিয়ে জানায় রেল লাইনের কাজ করতে থাকা কর্মীদের । তারা সবাই মিলে চালককে সতর্ক করে ট্রেন দাঁড় করায় । এরপরেএ ওই লাইনের ফাটল মেরামতি কাজ শুরু হয় । ৭ টা ৫৬ মিনিট থেকে ৯ টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত মেরামতি কাজ চলায় ওই লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয় । এরপরেই ওই লাইনেও ট্রেন চলাচল শুরু হয় । এই ঘটনার জন্য কর্ড শাখায় ট্রেন চলাচলে কোন সমস্যা হয় নি । ট্রেন চলাচল স্বাভাবিকই ছিল । সিপিআরও জানিয়েছেন ,যে ছাত্র ফাটল দেখে লাইনে থাকা কর্মীদের সতর্ক করেছে তাঁকে পুরস্কৃত করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে