কৃষ্ণ সাহা , কৃষকসেতু নিউজ বাংলা
পশ্চিমবঙ্গের প্রান্তিক জেলা পুরুলিয়ার এক নতুন পরিচিতি হয়ে উঠছে ঝালদা-১ ব্লকের সোনাদাঁড়ি। রেললাইন পেরিয়ে সবুজে মোড়া পাহাড়ের কোলে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকা শিকরা পাহাড়ের পাদদেশে বিস্তৃত এই উপত্যকা যেন হঠাৎ আবিষ্কৃত এক স্বপ্নলোক—যা অনেকেই তুলনা করছেন কাশ্মীরের পহেলগাম কিংবা বৈসরন ভ্যালির সঙ্গে।

অযোধ্যা পাহাড় রেঞ্জের ছায়ায় সবুজ ঘাসে ঢাকা এই মাঠ এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। ইতিহাস ও প্রকৃতির অপূর্ব মেলবন্ধনে সোনাদাঁড়ি হয়ে উঠছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র।
এক সময় জলের অভাবে পরিচিত অঞ্চলটি আজ প্রকৃতির ঐশ্বর্যে ভরপুর। প্রবীণ বাসিন্দা মহেন্দ্র রুংটার কথায়, একসময় মাঠের নিচের বালির স্তরে মেলে বিশুদ্ধ জল, স্থানীয় ভাষায় যাকে বলা হত ‘দাঁড়ি’—সেই থেকেই জায়গার নাম ‘সোনাদাঁড়ি’।
শীতকালে এখানে চড়ুইভাতি, গ্রীষ্মেও সবুজে ঠান্ডা পরশ। প্রাকৃতিক দৃশ্যপট এতটাই মনোরম যে একে ঘিরে গড়ে উঠছে স্থানীয় পর্যটন সম্ভাবনা। ঠুরগা জলাধারও এই অনন্য অভিজ্ঞতার অন্যতম কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।
পুরুলিয়ার প্রাক্তন বিধায়ক নেপাল মাহাতো ও ঝালদা পুরসভার পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়াল দু’জনেই এই নতুন আবিষ্কারকে ঘিরে আশাবাদী। তবে তাঁরা মনে করিয়ে দিয়েছেন—এই সৌন্দর্যকে সঠিক পরিকাঠামো ও পরিবেশবান্ধব পর্যটনের মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
তবে এই পহেলগাম-তুলনার মাঝেই উঁকি দেয় এক গভীর প্রশ্ন—পুরুলিয়ার নিজস্ব সৌন্দর্য ও বৈশিষ্ট্যকে কেন বারবার তুলনার কাঠামোয় ফেলতে হবে?
পুরুলিয়া তার সবুজ-খরা লড়াই, ইতিহাস-লোকসংস্কৃতির ঐতিহ্য এবং মানুষের আন্তরিকতায় ভরা উষ্ণতায় অনন্য। সোনাদাঁড়ি হোক বা ঠুরগা—এই অঞ্চল নিজের পরিচয়েই গর্বিত হতে পারে, অনুকরণ নয়, হয়ে উঠুক অনুপ্রেরণা।