আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

ভুতুড়ে ভোটার নিয়ে তোলপাড় চলার মাঝেই ভুতুড়ে সরকারী হাসপাতালের ডাক্তার নিয়ে শোরগোল

krishna Saha

Updated :

WhatsApp Channel Join Now

ভোটার তালিকায় বাসা বেঁধেছে ভুতুড়ে ভোটার । তা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি এখন যেমন সরগরম তেমনই সরগরম দেশের সংসদ ভবন।এমন আবহে এবার সরকারী হাসপাতালের ডাক্তার পরিচয় দেওয়া এক ’ভুতুড়ে ডাক্তারের’ সন্ধান মিললো পূর্ব বর্ধমানের কালনায়।তাও আবার যে সে ভুতুড়ে ডাক্তার নয়।একেবারে খোদ কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ’চক্ষু রোগ বিশেষজ্ঞ’ ডাক্তার।এমনটা জেনে কালনা হাসপাতালের চিকিৎসক মহলেও স্তম্ভিত।ঘটনা জানার পর তাঁরাও নড়ে চড়ে বসেছেন

কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ’চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার’ পরিচয় দেওয়া ওই ভুতুড়ে ডাক্তারের নাম লাবনী ভৌমিক।তিনি ঘাঁটি গেড়ে ছিলেন কালনা ১ নম্বর ব্লকের বাঘনাপাড়ায় থাকা একটি ওষুধের দোকানে।সোমবার বেলায় ওই ওষুধের দোকানে গিয়ে দেখা যায় দোকানের সামনে দাঁড় করানো রয়েছে একটি সঅইন বোর্ড । তাতে লেখা রয়েছে ডাঃ লাবনী ভৌমিক।এই নামের নিচে তাঁর ডিগ্রী হিসাবে লেখা রয়েছে MBBS,MS Opth।এর ঠিক নিচে লেখা রয়েছে ’চক্ষু বিশেষজ্ঞ , কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল’। প্রতি সোম ও বুধবার কোন সময় থেকে কোন সময় পর্যন্ত লাবনী সরকার এই ওষুধের দোকানে বসে রোগী দেখবেন তাও ওই বোর্ডে উল্লেখ করা হয়েছে।ওষুধের দোকানের সামনে দাঁড় করানো থাকা এই বোর্ডের লেখা থাকা লাবনী ভৌমিকের পরিচিতি

জেনে এলাকার অনেকেই তার কাছে চোখ দেখাতে গিয়ে ছিলেন।এমনকি লাবণী ভৌমিক চক্ষু চিকিৎসার একটি শিবির করেছিলেন ।সরল বিশ্বাসে এলাকার অনেকে সেই শিবিরে চোখ দেখাতেও গিয়েছিলেন।অর্থের বিনিময়ে ওই সব রোগীদের চোখ দেখে চশমাও দেন লাবনী । কিন্তুলাবনী ভৌমিকের কাছে চোখ দেখানো রোগীদের কারুরই অভিজ্ঞতা ভাল নয়।ওই চশমা পড়ে চোখে ভাল দেখতে পাবার বদলে দেখতে সমস্যা হওয়ায় রোগীরা চটে লাল হয়ে যান ।তাঁরা এর পরেই
লাবনী ভৌমিকের ডাক্তারি ডিগ্রীর সত্যতা নিয়ে খোঁজ খবর নেওয়া শুরু করেন। তখনই তাঁরা জানতে পারেন লাবলী ভৌমিক আসলে কোনো হাসপাতালেরই চোখের ডাক্তার নন।তাঁর ডাক্তারি ডিগ্রী নিয়েও বাঘনাপাড়ার লোকজন সন্দেহ প্রকাশ করেন ।

See also  আজ সাজা ঘোষনা একঝাঁক তৃণমূল নেতানেত্রী'র : আদালতের দিকে তাকিয়ে দলীয় নেতৃত্ব সহ কর্মী ও মন্ত্রী

এই বিষয়টি জেনে সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা সোমবার কালনার বাঘনাপাড়ার ওই ওষুধের দোকানে পৌছে যায়।তখনও ওই ওষুধের দোকানের সামনে দাঁড় করানো ছিল লাবনী ভৌমিকের নাম ও ডাক্তারি ডিগ্রী লেখা বোর্ডটি।
সাংবাদিকরা লাবনী ভৌমিকের পরিচয় নিয়ে ওষুধের দোকানের মালিক সুকুমার কবিরাজকে চেপে ধরতেই তিনি ঢোঁক গিলে সব সত্য স্বীকার করে নেন তিনি সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরার মুখোমুখি হয়ে স্বীকার করে নেন,“লাবনী ভৌমিক
কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ডাক্তারই নন।তাহলে এমন সাইন বোর্ড কেন আজও ওষুধের
দোকানের সামনে দাঁড় করিয়ে রেখেছেন? এর উত্তরে দোকান মালিক সুকুমার কবিরাজ বলেন,
সাইনবোর্ডের লেখাটা আমার ভুলহয়েছে, অন্যায় হয়েছে।“

এলাকার বাসিন্দা দেবব্রত মোদক বলেন,“ওষুধের দোকানের সামনে থাকা বোর্ডে কালনা হাসপাতালের চোখের ডাক্তার লেখা থাকা দেখে আমরা বিশ্বাস করে ছিলাম। লাবনী ভৌমিকের
কাছে আমরা চোখ দেখাই। উনি আমাদের পাওয়ার দেওয়া চশমা দেন।সেই চশমার জন্যআমাদের কাছ থেকে ৭০০ টাকা করে নেওয়া হর ।ওই চশমা পরে ভাল দেখতে পাওয়া তো দূরের কথা ,উল্টে দেখতে আমাদের আরও সমস্যা হয় । এরপর আমরা বিভন্ন ভাবে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি ,লাবনী ভৌমিক আসলে হলেন একজন প্রতারক।কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ডাক্তার পরিচয় দেওয়া একজন ভুয়া ও ভুতুড়ে ডাক্তার উনি“।

Read more –ভুয়ো ভোটার আটকাতে বুথ পর্যায়ে বৈঠক: তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় পদক্ষেপ

সমগ্র এই ঘটনার কথা শুনে কার্যত স্তম্ভিত হয়ে যান কালনা মহকুমা হাসপাতালের সহকারি সুপার গৌতম বিশ্বাস।তিনি পরিস্কার জানিয়ে দেন,লাবনী
ভৌমিক নামে কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চোখের কোনো ডাক্তার কোনদিন ছিলেন না। এখনও নেই।এ নিয়ে কোন অভিযোগ
পেলেই পুলিশকে জানাবেন বলে ডাঃ গৌতম বিশ্বাস জানিয়েছেন ।

এদিকে ঘটনার জল বহুদূর গড়িয়ে গিয়েছে জেনে সব দায় ওষুধের দোকান মালিকের ঘাড়ে চাপিয়ে দেন লাবনী ভৌমিক। ফোনে লাবনী ভৌমিকে সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিন বলেধ!“আমি চোখের ডাক্তার’ই নই।আমি একজন ’অপ্টোমেট্রিস্ট’। আমি চোখের দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করে চশমার পাওয়ার নির্ধারণ করে দি মাত্র। আমি নিজেকে চক্ষু চিকিৎসক বলে কখনই দাবি করি না। ওষুধের দোকানদার তাঁর নাম দিয়ে সাইন বোর্ডে মিথ্যা কিছু লিখে থাকলে তিনি আইনী ব্যবস্থা নেবেন বলেও এদিন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন“।যদিও হুঁশিয়ারির কোনও বাস্তবতা রাত অবধি পরিলক্ষিত হয় নি।ছবি সাইন বোর্ড ও ওষুধের দোকানের মালিক।

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি