আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

ওয়েব্রীজের আড়ালে চলছে দেদার বালি পাচার।

krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

পূর্ব বর্ধমানের গলসি জুড়ে দামোদর নদ থেকে রাতের অন্ধকারে দেদার বালি পাচারের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, গোহগ্রাম পঞ্চায়েতের বোমঘাট, সোজাঘাট, টেনি যাদবের ঢাল এবং আদর্শ সেন সিন্ডিকেটের ঢাল সহ বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত ট্রাক্টরের মাধ্যমে অবৈধভাবে বালি চুরি করে পাচার করা হচ্ছে।
এই চুরি করা বালি গোহগ্রাম-গলসি প্রধান রাস্তার ওপর অবস্থিত একাধিক ওয়েব্রিজে (কাঁটা) মজুদ করা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, এই কাঁটা মালিক তথা বালি মাফিয়ারা কোনো বৈধ চালান ছাড়াই সেই বালি মোটা দামে বিক্রি করছে। রাতের অন্ধকারে এই কারবার চললেও সকাল হতেই সবকিছু গুটিয়ে নেওয়া হয়। পরের দিন ফের একই কায়দায় বালি পাচারের ব্যবসা চলে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই অভিযোগ করেছেন, এই অবৈধ কারবারের সাথে স্থানীয় শাসক দলের একাংশ জড়িত থাকতে পারে। পাশাপাশি, পুলিশ ও প্রশাসনের একাংশের যোগসাজশ থাকার সম্ভাবনাও অনেকে প্রকাশ করেছেন। শুধু গোহগ্রাম-গলসি রাস্তাই নয়, শিল্যা থেকে পারাজ রোডের ওপরের প্রায় ৬-৭টি কাঁটা থেকেও প্রতিদিন রাতে অবৈধভাবে বালি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।

উল্লেখ্য, বৈধ বালি ঘাট থেকে চালান সহ বালি বোঝাই করার সময় গাড়িতে অতিরিক্ত বালি আটকানোর জন্য এই ওয়েব্রিজগুলি তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে শুধুমাত্র গাড়ির অতিরিক্ত বালি কেটে সঠিক ওজন করার কথা। তবে অভিযোগ উঠেছে, গলসি জুড়ে প্রায় সমস্ত কাঁটাতেই বেআইনিভাবে বালি মজুদ করে পাচারের কাজ চলছে। এই ওয়েব্রিজগুলির ব্যবসার বৈধ অনুমতি আছে কিনা, তা নিয়েও স্থানীয়দের মধ্যে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

অভিযোগ আরও গুরুতর। বলা হচ্ছে, নদী থেকে সরাসরি বালি চুরি করে এনে কাঁটায় মজুদ করে বিক্রি করা হচ্ছে, যা কর্তৃপক্ষের করার কোনো অধিকার নেই। স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতী এই চক্রটি চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের দাবি, সন্ধ্যার পর থেকেই এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বালি মাফিয়াদের দখলে চলে যায়। এমনকি, যাতে কেউ টের না পায়, তার জন্য বালির ট্রাক্টরগুলি রাতে হেডলাইট না জ্বালিয়েই চলাচল করে, যা বড়সড় দুর্ঘটনা বা প্রাণহানির আশঙ্কা সৃষ্টি করছে।
স্থানীয় গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে রাস্তা তৈরি করলেও, প্রতিদিন শত শত বালির ট্রাক্টরের দাপটে রাস্তা খারাপ হতে শুরু করেছে। বৈধ বালির ডাম্পারের পাশাপাশি বেআইনি বালির ট্রাক্টরের দৌরাত্ম্যে রাস্তার অবস্থা ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। এর ফলে স্কুলছাত্র থেকে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত সকলেই অতিষ্ঠ।

See also  মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্কে আপত্তিকর পোস্ট ছড়িয়ে গ্রেপ্তার বিজেপি কর্মী

অভিযোগ উঠেছে, মূল রাস্তার পাশেই কাঁটাগুলি তৈরি হওয়ায় রাস্তা বালিতে ভরে থাকছে, যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। আদ্রাহাটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং পুরসা গ্রামীণ হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাতায়াতের ক্ষেত্রেও বালির গাড়ির কারণে সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দারা অবিলম্বে গলসি জুড়ে গজিয়ে ওঠা এই বেআইনি ওয়েব্রিজগুলির বিরুদ্ধে পুলিশ ও প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি