বাঙালি নন, তবু বাংলার সঙ্গে তাঁর রয়েছে গভীর সম্পর্ক। ছোট্ট টিপ, হালকা লিপস্টিক আর শাড়িতে যেন খাঁটি বাঙালি নারী। সাবলীল বাংলায় কথা বলেন তিনি, এমনকি সুকুমার রায়ের ‘সৎ পাত্র’ও তাঁর ঠোঁটস্থ। অভিনয়জীবনের শুরু হয়েছিল বাঙালি পরিচালক গৌতম হালদারের হাত ধরে, বাংলা সিনেমা ‘ভালো থেকো’ দিয়েই। জন্মসূত্রে দক্ষিণী হলেও, আর বিয়ের সূত্রে পাঞ্জাবি পরিবারের বউমা হয়েও বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে যে তিনি বিশেষ জায়গা দিয়ে রেখেছেন, সোমবার সন্ধ্যায় আবারও তার প্রমাণ মিলল।
লাল শাড়ি পরে, হাতে ধুনুচি নিয়ে ঢাকের তালে নেচে উঠলেন বিদ্যা বালান। শুধু নিজে নন, পরিচালক বিধু বিনোদ চোপড়াকেও শিখিয়ে দিলেন বাঙালি ধুনুচি নাচের কায়দা। তার আগে বাংলা ব্যান্ড হুলিগানস-এর ‘আমাদের বকুল তলায় ভিড় জমেছে…’ গানও গাইলেন তিনি। সব মিলিয়ে দুর্গোৎসবের আগেই মুম্বইতে পুজোর আবহ তৈরি করলেন বিদ্যা। হঠাৎ এভাবে বাঙালি আবেগে ভেসে ওঠার কারণ? আসলে ২০০৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘পরিণীতা’ পেরিয়েছে ২০ বছর। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে প্রদীপ সরকারের পরিচালনায় তৈরি সেই সিনেমা আবারও মুক্তি পাচ্ছে ২৯ আগস্ট। সোমবার ছিল সেই পুনঃমুক্তির প্রিমিয়ার, আর সেখানেই আবেগে ভেসে উঠলেন প্রয়াত প্রদীপ সরকারের পর্দার ‘পরিণীতা’।

উল্লেখযোগ্য, গত বছর আন্তর্জাতিক কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে এসে প্রথম কাজের স্মৃতি মনে করে আবেগপ্রবণ হয়েছিলেন বিদ্যা বালান। তাঁর কেরিয়ারে বহু বাঙালি পরিচালক ও শিল্পীর অবদান। প্রদীপ সরকারের স্নেহধন্যা ‘পরিণীতা’ থেকে শুরু করে সুজয় ঘোষের ‘কাহানি’-র বঙ্গনারী ‘বিদ্যা বাগচী’, কিংবা জনপ্রিয় চরিত্র ‘মঞ্জুলিকা’— সবেতেই বাঙালি ছোঁয়া রয়েছে। বিদ্যা একবার জানিয়েছিলেন, “বিজ্ঞাপনী কাজ করার সময়েও অনেকে বলেছেন আমাকে মাধবী মুখোপাধ্যায়ের মতো দেখতে।” তাই তিনি নিজেই স্বীকার করেন, “জীবনে অনেক বাঙালিকে আমার ধন্যবাদ জানানোর আছে। ওঁদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।” আর সেই টান থেকেই ‘পরিণীতা’র প্রিমিয়ারে ধুনুচি হাতে বাঙালি রূপে হাজির হলেন ‘মনে-প্রাণে বঙ্গকন্যা’ বিদ্যা বালান।