উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়,সুন্দরবন : পুজো শুরু হয়ে গেল, তবে সুন্দরবনের হোটেল মালিকদের মানসিক দোলাচল রয়ে গেল। গতবারের তুলনায় এবার বুকিংয়ের হার যথেষ্ট ভালো। কিন্তু পুজোর দিনগুলিতে নিম্নচাপ ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পূর্বাভাস দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে তাঁদের। আপাতত তাঁদের একটাই আশঙ্কা, শেষ মুহূর্তে পর্যটকরা বুকিং বাতিল করে দেবেন না তো?
কেউ দু’রাত্রি তিন দিন, কেউ আবার তিন রাত্রি কাটাতে চান সুন্দরবনে।
সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত সুন্দরবনের হোটেলগুলিতে এটাই বুকিংয়ের গড়পড়তা চিত্র। এই অবস্থায় হোটেল মালিকরা আশা করেছিলেন, এবার পুজোর ছুটিতে পর্যটকদের ঢল নামবে সুন্দরবনে। বর্ষায় ‘ইলিশ উৎসব’-এর সময় প্রচুর সংখ্যায় পর্যটক এসেছিলেন। তখনই অনেকে পুজোর সময়ও আসবেন বলে রুম ঠিক করে গিয়েছেন। পাখিরালয় হোটেল ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক জয়দেব খাটুয়া বলেন, ‘এবারের পরিস্থিতি একটু অদ্ভুত। পর্যটকদের আগ্রহ রয়েছে সুন্দরবনে আসার জন্য। প্রায় ৮০ শতাংশ রুম বুকিং হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আবহাওয়া দপ্তর যা পূর্বাভাস দিয়েছে, তাতে শেষ মুহূর্তে কী হবে, বোঝা যাচ্ছে না। এটা নিয়েই সবাই চিন্তায় আছে।’

সূত্রের খবর, সুন্দরবনের যাঁরা বেড়াতে আসেন, তাঁরা দিনের একটা বড় সময় লঞ্চে করে নদী বক্ষে ভ্রমণ করেন। খারাপ আবহাওয়া থাকলে লঞ্চ চলাচল করবে না। সেক্ষেত্রে পর্যটকরা হোটেলবন্দি হয়ে থাকতে চাইবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় থাকছে। ধস, অতিবৃষ্টির মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সিকিম, হিমাচল সহ একাধিক পাহাড়ি রাজ্যের পর্যটন স্থলগুলির বেহাল অবস্থা। এই অবস্থায় অনেকেই ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। তাই ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যানেও বদল এনেছেন তাঁরা। সেই কারণেও এবার সুন্দরবনে আসার জন্য ভ্রমণার্থীদের আগ্রহ তুলনামুলক বেশি বলে মনে করছেন হোটেল মালিকরা।
চলতি মাসের শুরু থেকে বুকিংয়ের হাল ভালো ছিল না। কিন্তু গত এক-দু’সপ্তাহের মধ্যে বিভিন্ন হোটেলের রুম বুকিংয়ের গতি বেড়েছে ব্যাপকভাবে। আবহাওয়া দপ্তর পুজোর সময়ের পূর্বাভাস দেওয়ার আগেই বেশিরভাগ হোটেলে বুকিং হয়ে গিয়েছিল। তবে হোটেল মালিকদের দাবি, এখনও পর্যন্ত বুকিং বাতিল করার জন্য কোনও আবেদন বা ফোন আসেনি।তবু্ও দুশ্চিন্তার মেঘ ঘনিয়ে আছে তাদের মাথায়।