আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জনপ্রিয়তা আর চাপ ফুলে ছাপ শ্লোগানে পুণরায় ঘাস ফুল ফুটলো বর্ধমানের দুটি লোকসভা আসনে

krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান ৪ জুন

“চুপ চাপ-ফুলে ছাপ“ ।বাম আমলে ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময় এটাই ছিল তৃণমূলের শ্লোগান।তাতেই বাজিবাত করেছিল তৃণমূল ।আর
এবার ২০২৪ শের লোকসভা ভোটে ’সক্ষ্মীর ভাণ্ডার“ প্রকল্পের স্বার্থকতাকে তুলে ধরে একই শ্লোগানে বঙ্গে বাজিমাত করলো ঘাস ফুল শিবির
।মঙ্গলে বর্ধমান সহ গোটা বাংলার চারিদিকে শুধুই সবুজের সমারোহ।তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদের কাছে লক্ষাধীক ভোটে পরাজিত হয়ে জয় বাংলা’ শ্লোগান দেওয়া তৃণমূল কর্মীদের উদ্দেশ্যে হাত নেড়ে এদিন গণণা কেন্দ্র ছাড়েন বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ।আর তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী শর্মিলা সরকারের কাছে লক্ষাধীক ভোটে হরে সম্প্রীতির
গান শুনিয়ে গণণা কেন্দ্রথেকে বিদায় নেন বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকার।দু’জনেই মুখেই দেখা গেল বিষাদের ছাপ ।

তবে এবার শুধু তৃণমূল নয়, বিজেপি শিবিরের নেতা নেত্রীদের মুখে মুখেও ঘুরেছে ’চুপ চাপ -ফুলে ছাপের’ কথা।তাদের আশা ছিল বাংলার জনগণ এবার ফুল বলতে পদ্ম ফুলকে বেছে নেবে। কিন্তু লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া বাংলার মহিলারা ভোটাররা ঘাস ফুলের পক্ষেই নিঃশব্দে
বিপ্লব ঘটিয়ে দেবেন তা কল্পনাও করতে পারেন নি তাবড় বিজেপি নেতা ও প্রার্থীরা। এর সাথে যোগ হয় আদি ও নব্য বিজেপি সৈন্য ও সেনাপতিদের “সাপ লুডো“ খেলা। একদিকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের সীমাহীন জনপ্রিয়তা ,আর অন্যদিকে আদি বনাম নব্য বিজেপির ভয়ংকর “সাপ লুডো“ খেলাই এবারের লোকসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থিদের শেষঅব্দি কাঁদিয়ে ছাড়লো ।

বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেস সরকার প্রতিষ্ঠার পর থেকে পেরিয়ে গিয়েছে ১২টা বছর। তৃণমূলের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও লক্ষীর ভাণ্ডারের মত জনপ্রিয়
প্রকল্পের দাপটে সিপিএম বঙ্গে শূণ্য হয়ে যাওয়া
একটা পার্টির পরিচিতি পায় । তবে ২০১৯ শের লোকসভা ভোটে বঙ্গে অপ্রত্যাশিত ফল করে বসে বিজেপি । ২০২১ শের বিধানসভা ভোটেও বিজেপি
সত্তরের বেশী আসনে জয়ী হয় যায় । তার পর থেকে ১০০ দিনের কাজ ও আবাস যোজনা খাতে বেনিয়মের অভিযোগ এনে আর্থ বরাদ্দ বন্ধ করে দেয় কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। কিন্তু রাজ্যের কোষাগার থেকে বাংলার হাজার জব কার্ড শ্রমিকের প্রাপ্য মজুরি মিটিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । আর সেটাই বিজেপি ক্ষেত্রে বুমেরাং হয়ে যায় ।বাংলার প্রতি কেন্দ্রীয় বঞ্চনা কে ভোটের প্রচারে হাতিয়ার করে উত্তর থেকে দক্ষিনে
প্রচার চালিয়ে যান তৃণমূল সুপ্রিমো । তাতে যোগ্য সঙ্গত দেন দলের সেকেন্ড ইন কমাণ্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ।

See also  আঠারো বছর পরে

তৃণমূলের এই ভোট স্ট্রেটেজি পাল্টা মোদি ও ,অমিত শাহ সহ বঙ্গ বিজেপির নেতা তৃণমূলকে চোর আখ্যা দিয়ে ভোটের বাজার মাতানোর কৌশল নেয় । একই সাথে সন্দেশখালি কাণ্ডকে ত
বিজেপি প্রচারের হাতিয়ার করে । মোদি ও অমিত শাহ বাংলায় একাধীক সভা করে তৃণমূল সরকার কে শুধু চোর আখ্যা দিয়েই জয় সুনিশ্চিৎ করার পথে হাঁটেন। বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা আসনে প্রতিদ্বন্দি বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ প্রার্থী হয়ে
প্রচারে নেমেই প্রথম দিন থেকে এমন হাম্বরিয়া করতে শুরু করেন,যেন তাকে হারানোর সাধ্য কারুর নেই ।আর বর্ধমান পূর্বের বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকারতো গত একমাস যাবৎ শুধু গান বেধে সেই গান গেয়েই দিন কাটান। বিষয়টা এমন ছিল যেন তাঁর গান শুনে মুগ্ধ হয়ে সব মানুষ তাঁকে
ভোটে জিতিয়ে দেবেন। বিজেপির দুই প্রার্থীর এমন অতিরিক্ত আত্ম বিশ্বাসই শেষ পর্যন্ত কাল হল

এদিল ফল প্রকাশের পর দেকাযায় বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষের প্রাপ্ত ভোট ৫৭৯২৮৮ । আর
তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কীর্তি আজাদের প্রাপ্ত ভোট
৭১৬৮৫২।কমিশন ১৩৭৫৬৪ ভোটে কীর্তি আজাদকে জয়ী ঘোষণা করেন। অন্যদিকে বর্ধমান পূর্বের বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকারের প্রাপ্ত ভোট
৫৪৯৪০১ আর তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী শ্রমিলা সরকারের প্রাপ্ত ভোট ৭০৪৭৩৬। কমিশন শর্মিলা
সরকারকে ১৫৫৩৪৫ ভোটে জয়ী ঘোষণা করে ।
পূর্ব বর্ধমানে এই দুই লোকসভা আসনে ভোটের ফলে এই ভাবেই পদ্ম ফুলকে হারিয়ে ঘাস ফুল মাইলেজ পেয়ে যায় জনতা জনার্দনের হাত ধরে।
কীর্তি আজাদ ও শর্মিলা সরকারর,দু’জনেই
মানুষের পাশে থেকে উন্নয়ন কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবার কাজে ব্রতি হবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি