মেয়ের বিয়ের সাহায্যে দরবার করেও আত্মীয়-পরিজনদের কাছে মেলেনি কোনো সহযোগিতা । কিন্তু বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করে ফেলেছিলেন পাত্রীর বাবা। আয়োজন শুরু হয়ে গিয়েছিল। হাতে অর্থ না থাকায় মাঝপথেই মেয়ের বিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার ভাবনাচিন্তা শুরু করেছিলেন পুরাতন মালদার মাংসের দোকানের কর্মচারী মনোরঞ্জন দাস । এই অবস্থায় তার পরিবারের পাশে দাঁড়ালো “নতুন প্রজন্ম” নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। বাজলো ডিজে , মেকাপে সাজানো হলো কনেকে। পাত পুরে পোলাও , খাসির মাংস সবজি খেলো বর পক্ষ থেকে নিমন্ত্রতরা। ধুমধাম করে সম্পন্ন হলো মনোরঞ্জনবাবুর একমাত্র মেয়ের বিয়ে।
উল্লেখ্য, পুরাতন মালদা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে বাঁশহাটির নিবাসী মনোরঞ্জন দাসের প্রথমা কন্যা ঝর্না দাশের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় নদীয়া জেলার নিবাসী অভিরাম বাড়ুই-এর সঙ্গে। পেশায় মাংসের দোকানের কর্মচারী মনোরঞ্জনবাবুর মেয়ের বিয়ের জন্য দ্বারস্থ হতে হয় আত্মীয় স্বজনদের কাছে। সাধ্যমত সকলে সাহায্যের হাত ও বাড়িয়ে প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু বিয়ের দিন এগালে সবাই হাত গুটিয়ে নেয়। অগত্যা বিয়ে বন্ধ হওয়ার জোগাড়। কোনক্রমে এই খবর গিয়ে পৌঁছায় নতুন প্রজন্ম নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে। যেমনি কথা তেমনি কাজ। সম্পূর্ণ বিয়ের দায়িত্ব নিল ঔই সামাজিক সংগঠন। ঝর্নার আইবুড়ো ভাত থেকে ছাদনাতলা সাজানো কনের মেকআপ, প্যান্ডেল, ফটোগ্রাফি, চা,কফি থেকে অতিথিদের পাত পেড়ে খাওয়ানো কোনটাই বাকি নেই, এমনকি মেনু কার্ডে রক্তদানের বার্তা। এই সংগঠনের প্রত্যেকটি সদস্য এক একটি বিষয়ে পারদর্শী। কেউ বা ফটোগ্রাফি, কেউ বা নিয়েছেন জলের দায়িত্ব, কেউবা দই-মিষ্টির। ১৩ ডিসেম্বর শুভবিবাহ, ১৪ ডিসেম্বর সকালে কনে বিদায়। এই অভিনব সমাজকর্মে রাজসাক্ষী পুরাতন মালদা সহ নদীয়া থেকে আসা বড়যাত্রী বেশে দুইশত জন অতিথি।