প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান, ২৫ নভেম্বর: নতুন ধান ঘরে তোলার পর রাঢ়বঙ্গের কৃষিজীবী মানুষজন ঘটা করে পালন করেন নবান্ন উৎসব।রাজ্যের শস্যগোলা হিসাবে পরিচিত পূর্ব বর্ধমান জেলার বাসিন্দারা তাঁদের জমি থেকে তোলা নতুন অন্ন প্রথম বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলাকে উৎসর্গ করেন । সেই মতো সোমবার অগ্রাহয়ণ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরে হল নবান্নের বিশেষ পুজো পাঠ। দেবীকে স্মরণ করে এরপর গোটা অগ্রহায়ণ মাস জুড়ে শস্যগোলার জেলায় চলবে নবান্ন উৎসব। বহুকাল পূর্বে বর্ধমানের রাজা তেজচাঁদের আমল থেকে শুরু হওয়া এই রীতি আজও শস্য গোলায় প্রবাহমান রয়েছে।

বর্ধমান সহ রাঢ়বঙ্গের অন্যতম তীর্থস্থান সর্বমঙ্গলা মন্দির। এখানে দেবী সর্বমঙ্গলা রূপে পূজিতা হন।যখন এই মন্দিয় প্রতিষ্ঠা হয়নি তখন প্রচারিতও হয়নি দেবীর মাহাত্ম্য। কথিত আছে জেলেনীরা মাছ ধরে ফেরার পথে এই মূর্তির উপরেই গুগলি,
শামুক ভাঙতেন। তখন মূর্তিটির বিষয়ে তাঁদের মনে তেমন কোন প্রশ্নও জাগেনি । তবে এই খবর রাজা তেজচাঁদর কানে যায়। তিনি মূর্তিটি উদ্ধার করেন এবং মন্দির গড়ে সেখানে দেবীকে প্রতিষ্ঠা করেন।সেই থেকেই সর্বমঙ্গলাদেবীর মাহাত্ম্য প্রচারিত হয়। স্বয়ং রামকৃষ্ণও এ মন্দিরে এসেছেন বলে কথিত আছে।

মন্দির ট্রাস্টের সম্পাদক সঞ্জয় ঘোষ জানান, নতুন আমন ধান ঘরে তোলার পর রাঢ়বঙ্গের চাষিরা যে বিশেষ পুজোপাঠ ও উৎসবে মাতোয়ারা হন তার নামই ’নবান্ন,। “নবান্ন” শব্দের অর্থ “নতুন অন্ন”।নবান্ন উৎসব হল নতুন আমন ধান কাটা ঝাড়অর পর সেই ধান থেকে প্রস্তুত চাল প্রথমে দেবতাকে অর্পণ। তারপর সেই চাল প্রথম রান্না উপলক্ষে আয়োজিত উৎসবই নবান্ন উৎসব।সর্বমঙ্গলা মায়ের মন্দিরে নবান্ন উৎসব পালিত হওয়ার সাথে সাথেই গোটা রাঢ়বঙ্গে নবান্নের সূচনা হয়ে যায় ।









