বাবু সিদ্ধান্ত, বর্ধমান
কোভিড-১৯ ভাইরাসের ত্রাসে কাবু হয়ে রয়েছে ভারত সহ গোটা বিশ্ব। প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা।সেই আতঙ্কের মধ্যেই এবার কোভিড ১৯ থাবা বসালো পূর্ব বর্ধমানে।নাইসেডে পরীক্ষার রিপোর্টে জেলায় প্রথম করোনা পজেটিভ ধরা পড়লো খণ্ডঘোষের বছর ৪৩ বয়সী এক ব্যক্তির শরীরে । যা নিয়ে রীতিমত উদবিগ্ন খণ্ডঘোষের ঐ গ্রামের বাসিন্দারা।চিকিৎসার জন্য ওই ব্যক্তিকে পাঠানো হয়েছে দুর্গাপুরের করোনা হাসপাতালে।
পাশাপাশি অতি সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা হিসাবে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর ও জেলা প্রশাসনের তরফে নেওয়া হয়েছে বিশেষ সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা।রবিবার সকাল থেকে ঐ গ্রামে ঢোকা ও বেরুনোর সমস্ত রাস্তা শিল করে দেওয়া হয়েছে ।একই সঙ্গে আক্রান্তের পরিবারের সবাইকে পাঠানো হয়েছে কোয়ারেন্টাইনে।আক্রান্তের সংস্পর্শে আরও কারা কারা এসেছিলেন তাদেরও খোঁজ চালানো হচ্ছে ।
করোনা পজেটিভ ধরা পড়া ব্যক্তি ও তার পরিবারকে নিয়ে এদিন ঐ গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ বিক্ষোভ ছড়ায় । গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন , আক্রান্ত ব্যক্তি কলকাতার মেটিয়াবুরুজে পোষাকের কারখানায় কাজ করেন । আগে তিনি আলেকালে গ্রামের বাড়িতে আসতেন।কিন্তু করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য দেশ জুড়ে লকডাউন জারি হবার কিছুদিন পরেই ওই ব্যক্তি খণ্ডঘোষে গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন ।
গ্রামবাসীরা অভিযোগে বলেন ,ওই ব্যক্তিকে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা বলেযান আশা কর্মী । কিন্তু আশা কর্মীর কথাকে কোন গুরুত্ব না দিয়ে ঘরে থাকার পরিবর্তে ওই ব্যক্তি গ্রামের সর্বত্র ঘুরে বেড়ান । নানা জনের সঙ্গে মেলামেশা করেন । সম্প্রতি তার মারাত্মক জ্বর ,সর্দি ও কাশির উপসর্গ দেখাদিলে পরিবারের লোকজন তাকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়েযায় । সন্দেহ হওয়ায় ১৬ এপ্রিল হাসপালের চিকিৎসক তাকে কোভিড -১৯ চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট বর্ধমানের বামচাঁদাইপুরের হাসপাতালে পাঠিয়েদেয় ।
সেখানে ১৭ এপ্রিল তার লালা রস সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় নাইসেডে । ১৮ এপ্রিল নাইসেড থেকে পাঠানো রিপোর্টের ভিত্তিতে ওই ব্যক্তির কোভিড পজেটিভ ধরা পড়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে । ক্ষুব্ধ ঐ বাসিন্দারা এদিন বলেন , আশাকর্মীর কথা না শুনে সর্বত্র ঘুরে বেরিয়ে ওই ব্যক্তি গ্রামের সকল বাসিন্দাকে এখন বিপদে ফেলে দিল ।
জেলাশাসক বিজয় ভারতি এদিন বলেন , খণ্ডঘোষের এক ব্যক্তির কোভিড পজেটিভ ধরা পড়েছে। চিকিৎসার জন্য তাঁকে দুর্গাপুরের করোনা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে । ওই ব্যক্তির পরিবারের ৩১ জনকে পাঠানো হয়েছে কোয়ারেন্টাইনে। পরিবারের বাইরে ওই ব্যক্তি আরও যাদের সঙ্গে মিশেছে তাদের খোঁজ চালান হচ্ছে । জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন,
ঐ গ্রামে ঢোকা ও বেরুনোর সব রাস্তা শিল করে দেওয়া হয়েছে ।এখন ওই গ্রামের মানুষজনকে প্রয়োজনীয় সবকিছুর যোগান দেওয়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে ।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানাগিয়েছে , খণ্ডঘোষের পথ সাথী মোটেলে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার খোলা হয়েছে । বাদুলিয়ার যে ব্যক্তির করোনা পজেটিভ ধরা পরেছে তাদের পরিবারের সবাইকে ওই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রাখা হয়েছে । শিল করেদেওয়া হয়েছে বাদুলিয়া গ্রামে ঢোকা ও বেরুনোর প্রধান পথ গুলি । সেখানে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে । গ্রামের মানুষজন অকারনে যাতে ঘরথেকে বাইরে বের না হন তা সুনিশ্চিত করতে জারি রয়েছে পুলিশ টহল । ঐ গ্রামের হাট আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে ।এদিন গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শিশু শিক্ষা কেন্দ্র গুলিতে মিডডে মিলের চাল সরবরাহের কথা থাকলেও তা স্থগিদ করে দেওয়া হয়েছে । আতঙ্ক পিছু তাড়া করে বেড়ানোয় এদিন ঐ গ্রামের বাসিন্দারা কেউ ঘরছেড়ে বাইরে বের হননি ।
