মঙ্গলবার বর্ধমানে প্রশাসনিক সভা করতে আসার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। প্রশাসনের কাছে এখনও যা খবর, সড়কপথে কলকাতা থেকে আসতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। শহরের মিউনিসিপ্যাল বয়েজ স্কুলের মাঠে সভা হওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরে এসে উল্লাস মোড়ের ডান দিক দিয়ে জিটি রোড ধরে বর্ধমান শহরে ঢুকবেন মুখ্যমন্ত্রী। এই রাস্তায় বীরহাটায় বাঁকা সেতু থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা কার্যত বেহাল। মুখ্যমন্ত্রী আসার আগে বীরহাটা সেতু থেকে ওই স্কুল পর্যন্ত সংস্কারে হাত লাগিয়েছে পূর্ত দফতর। কিন্তু বাধ সাধছে বৃষ্টি। শহরবাসীর একাংশের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী আসছেন বলে তড়িঘড়ি জিটি রোডের ওই অংশে কাজ হচ্ছে। কিন্তু বাকি শহরের পথ সেই খানাখন্দে ভরা। কার্জন গেট এলাকার এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর গোটা শহর ঘোরার কর্মসূচি থাকলে হয়তো রাস্তার হাল ফিরতে পারে।”
শুধু রাস্তা নয়, সভার মাঠ ঠিক করতেও বৃষ্টিতে নাজেহার প্রশাসন। স্কুলের মাঠ জলে থইথই করছে। নিকাশি ব্যবস্থা তেমন না থাকায় জল আটকে থাকছে। পাথরের গুঁড়ো দিয়ে গাড়ি যাতায়াতের রাস্তা তৈরি করছে পূর্ত দফতর। কিন্তু শুক্রবার দুপুর থেকে অঝোরে বৃষ্টিতে পাথরের গুঁড়ো ধুয়ে যাচ্ছে। জল বার করতে অস্থায়ী নালা তৈরি করতে হচ্ছে। মাটি নরম হয়ে যাওয়ায় ‘হ্যাঙার’ কী ভাবে আটকে থাকবে, সে নিয়েও চিন্তা রয়েছে। প্রশাসনের এক কর্তা কথায়, “এ ভাবে বৃষ্টি হলে রাস্তায় বিটুমিনাস কী ভাবে দেওয়া হবে, মাঠ তৈরি করে হ্যাঙারই বা কী ভাবে টাঙানো হবে, বোঝা যাচ্ছে না!”

শুক্রবার সকাল থেকে স্কুলের সামনের রাস্তার একাংশ কেটে নতুন করে তৈরির কাজে হাত দিয়েছে পূর্ত দফতর। কিছুটা দূরে কালভার্ট তৈরির কাজ চলছে। প্রশাসন ঠিক করেছে, কালভার্ট তৈরি বন্ধ রেখে একটি পাশ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর যাতায়াতের পথ খোলা থাকবে। বীরহাটার পুরনো সেতু, কালীবাজার মোড় থেকে ঢলদিঘি মোড় পর্যন্ত রাস্তা খানাখন্দে ভরা। শহরবাসীর প্রশ্ন, মুখ্যমন্ত্রী আসবেন বলে ওই রাস্তায় পিচের প্রলেপ পড়বে। কিন্তু জিটি রোডের কার্জন গেটের সামনে, বাদামতলা, পার্কাস রোড মোড়, গুডসশেড রোড থেকে পুর ভবনের মোড় পর্যন্ত রাস্তা খন্দে ভরা। সেই রাস্তার হাল কি ফিরবে? উড়ালপুলে ওঠার মুখে বড় বড় গর্ত রয়েছে, তা কি ঠিক হবে? পূর্ত-কর্তাদের দাবি, জিটি রোডের বাঁকা সেতু থেকে মেহেদিবাগান পর্যন্ত রাস্তার সংস্কার ও সৌন্দর্যায়ন হচ্ছে ১৭ কোটি টাকা খরচে। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে কাজে ব্যাঘাত ঘটছে।
শহরের ভিতরে অধিকাংশ রাস্তা খারাপ থাকায়, চলাচল করাটাই অসাধ্য হয়ে উঠছে, অভিযোগ বাসিন্দাদের একাংশ। শহরের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় খানখন্দ হয়ে রয়েছে। বাসিন্দাদের প্রশ্ন, শহরের ভিতর মুখ্যমন্ত্রীর পা পড়বে না বলেই কি রাস্তা সংস্কারে পুরসভা তৎপর নয়?
বিধায়ক (বর্ধমান দক্ষিণ) খোকন দাস যদিও বলেন, “কয়েক দিন আগেই শহরের ৪৩টি রাস্তার জন্য কয়েক কোটি টাকার কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রবল বৃষ্টিতে কাজে হাতই দিতে পারছে না ঠিকাদার সংস্থাগুলি।”