পূর্ব বর্ধমানের রায়না ১ নম্বর ব্লকের হিজলনা অঞ্চলের অন্তর্গত দামোদর নদীর তীরবর্তী বামুনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে শুক্রবার এক আবেগঘন পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো ইংরেজি শিক্ষক তাপস কুমার দাসের কর্মজীবনের বিদায় সংবর্ধনা।
৩২ বছরের দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনের ইতি টানলেন তাপসবাবু। বিদ্যালয়ের প্রিয় এই শিক্ষককে বিদায় জানাতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ভরে উঠেছিল ছাত্র-ছাত্রী, প্রাক্তন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সহকর্মী শিক্ষকদের চোখের জলে। বিদায় মঞ্চে আবেগে কাঁপা কাঁপা গলায় তাপসবাবু বলেন, “অনেক ছাত্র-ছাত্রীকে মানুষ করেছি, আজ তারা বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে ছড়িয়ে আছে। আগামী দিনে এখান থেকে আরও অনেক সুশিক্ষিত মানুষ বেরিয়ে আসবে – এটাই আমার আশীর্বাদ।”


অদ্ভুত এক মিলও ঘটেছে তাপসবাবুর জীবনে — যেদিন প্রথমবার শিক্ষক হিসেবে বিদ্যালয়ে যোগ দিয়েছিলেন, সেদিনও ছিল শুক্রবার, আর আজ তাঁর বিদায়ের দিনও শুক্রবার। তাই এই দিনটি হয়ে রইল স্মরণীয় ও আবেগে ভরা।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জানান, বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্ররা তাঁদের প্রিয় শিক্ষককে সম্মান জানাতে বিশেষ উদ্যোগ নেন। বামুনিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পোলেমপুর বাজার পর্যন্ত তাঁরা একটি বাইক র্যালি করে তাপসবাবুকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করিয়ে দেন।
এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবী বাদশা মির্জা জানান এই বিদায় সংবর্ধনাকে ঘিরে বিদ্যালয়ে আয়োজিত হয় মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক – সকলেই একবাক্যে বলেন, তাপস কুমার দাস শুধু একজন শিক্ষক নন, তিনি ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রাণ, সকলের নয়নের মণি।

শেষে সকলের মুখে একই প্রার্থনা — প্রিয় তাপসবাবুর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা। তাঁর স্মৃতি, তাঁর শিক্ষা ও মানবিকতা বামুনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিটি প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে যাবে চিরকাল।
রায়না থেকে বলরাম সাহার রিপোর্ট কৃষকসেতু নিউজ বাংলা







