পাড়ায় শিক্ষালয় –একটা ভয়ঙ্কর অপরিকল্পিত সিদ্ধান্ত
নীলঝড়
আবার প্রমাণিত হতে যাচ্ছে যে, আমাদের শিক্ষা দপ্তর এবং তার সঙ্গে সম্পর্কি-ত বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ গণ যথেষ্ট আলোকিত নহেন; শিক্ষা তো সারা জীবনই গ্রহণের বিষয়, তা আপনারা গ্রহণ করতে থাকুন ;কিন্তু ছেলেমেয়েগুলোকে আবার গিনিপিগ বানানো কেন? লোকালয় থেকে দূরে নির্জনে বিদ্যালয় স্থাপনের গুরুত্ব টাই আমরা বিস্মৃত হয়ে গেলাম; বিধি মেনে দু-একটা শ্রেণীকে নিয়ে বিদ্যালয় কিংবা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিখন-শিক্ষণ শুরু করা যেতে পারত। শিক্ষালয়-ই যখন, তাহলে বিদ্যালয় নয় কেন ?-এই প্রশ্নটা স্বাভাবিকভাবেই আসে। এখন যেটা বলা হচ্ছে গ্রামের ভিতরে ফাঁকা জায়গায় শিক্ষালয় বসবে ;গ্রামের ভিতরে ফাঁকা জায়গা বলতে বারোয়ারিতলা হতে পারে কিংবা কোন ঠাকুর মন্দির বা মসজিদ এর সামনে; সেটা একটা গাঁয়ে কটা হবে !
একটা -আধটা হবে; অথচ আমরা চাই পাড়ায় পাড়ায় শিক্ষার আয়োজন। গ্রামের অনেকের খানিকটা ফাঁকা খামার বা জায়গা আছে ;সেটা পড়াশোনা করার উপযুক্ত জায়গা মোটেই হতে পারেনা -অন্তত স্বাস্থ্যের কথা ভেবে ;হয়তো দেখা যাবে সেখানে পাশেই সারকুড় বা আঁস্তাকুড়।তাছাড়া আচ্ছাদনের কি হবে ?এরপর রোদের পারদ চড়বে ,সঙ্গে দুর্বোধ্য আবহাওয়া -ঠান্ডা বায়ুপ্রবাহ ,কি হবে তখন? কোথাও দেখা যাবে সরকার ক্লাব আছে ,যেখানে আয়োজন হচ্ছে শিক্ষালয়ের; তার প্রাঙ্গন সংকীর্ণ; সুতরাং তার বারান্দায় দেখা যাবে ছাত্র ছাত্রীরা বসবে ঘেঁষাঘেঁষি করে; যেমন চলছে টিউশন গুলো আর কি।
প্রাইমারির ক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে কিছু ছেলে মেয়ে যদি বা একই পাড়ায় আছে, উচ্চ প্রাথমিক এর ক্ষেত্রে সেটাতো আরো দুর্ভেদ্য সিদ্ধান্ত । শহরের ক্ষেত্রে সেটা আরো বিপজ্জনক; এখানে মূলত গরিব ঘরের ছেলে মেয়েরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে ;সে ক্ষেত্রে তাদের জন্য কিভাবে কোথায় শিক্ষালয় চালু হবে ! কিংবা দু একটা বড় নামিসরকারি বিদ্যালয়ে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছেলে মেয়েরা আসে, তাদেরকে কিভাবে কোথায় সম্মিলিত করা হবে? শহরবাসী বা তাদের ছেলেমেয়েকে অস্বাস্থ্যকর স্থানে পাঠাবেন কেন ? গ্রামের ক্ষেত্রে হয়তো খানিকটা ধরা যায় ;কারণ তারা তো আর অতটা গ্রহণযোগ্য মানুষ নয়(!) এছাড়া শৌচাগারের কি ব্যবস্থা হবে! একঘন্টা র টিফিন পিরিয়ডে শিক্ষক রা গাছ তলা খুঁজে কিংবা রোদে একটু জিরিয়ে নেবেন!!
তাইপাড়ায় শিক্ষালয় পড়ানোর ফটো তুলে সরকারি পোর্টালে পাঠানোর হাস্যকর পরিহাস ছাড়া আর কিছুই হবে না ।বর্তমানে এই একটা ব্যবস্থা হয়েছে যা কিছু অনুষ্ঠান হচ্ছে ফটো তুলে পাঠিয়ে দাও আর কিছু দরকার নাই -মান নিয়ে বাস্তব নিয়ে ভাবার দরকার নেই। যেটা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হতে পারত :প্রথমত -প্রাইমারি স্কুলের ক্ষেত্রে অর্থাৎ সকাল 10:30 থেকে সাড়ে বারোটা পর্যন্ত প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর পঠন-পাঠন এবং দ্বিতীয় ফেজে -তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণী বাপঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ( একদিন অন্তর অন্তর)
উচ্চ প্রাথমিকে ক্ষেত্রে যেখানে ষষ্ঠ এবং সপ্তম শ্রেণি আছে তাদেরকে এক দিন অন্তর অন্তর বিদ্যালয়ে আনা যেতে পারত
যেভাবে করোনা ভীতি সামনে রেখে এই দুর্বোধ্য শিক্ষা লয়ের অবতারণা তা এখুনি বন্ধ হ ওয়া জরুরি । তানাহলে হাস্যকর জায়গায় চলে যাবে।আর আমাদের সেই বিশৃঙ্খলা দেখতে হবে।