আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

খণ্ডঘোষে সরকারি জায়াগা দখল করে নদীর ধারে তৈরী হচ্ছে অবৈধভাবে রিসোর্ট, নার্সারি

By krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

নদী থেকে মাত্র ২০০মিটারের মধ্যে সরকারি জমি দখল করে দেদার তৈরি হয়েছে এবং হচ্ছে একের পর এক রিসোর্ট থেকে নার্সারি। প্রশাসনের কোনরকম অনুমোদন ছাড়াই বিঘের পর বিঘে দখল করে এই সমস্ত অবৈধ বিল্ডিং তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। কেউ কেউ আবার সরকারি বোর্ড লাগানো জমিতেও তৈরি করেছে নার্সারি। খোদ পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ ব্লকের শসঙ্গা পঞ্চায়েতের অধীনে দামোদর নদের গৈতানপুর চরমানা এলাকায় হটাতই এই সমস্ত রিসোর্ট ও নার্সারি তৈরির ঘটনায় রীতিমত আলোড়ন পড়েছে।

প্রশ্ন উঠছে স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে ব্লক ভূমি দপ্তরের ভূমিকা নিয়ে। রবিবার এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে দামোদরের তীরে তৈরী হয়েছে বেশ কিছু রিসোর্ট। রীতিমত দোতলা পাকা বাড়ি। মাটি ফেলে তৈরি করা হয়েছে রাস্তা। রাস্তার দুদিকে গাছ দিয়ে সাজানো হয়েছে। অনেকটা সমুদ্রের ধারে হোটেল গুলির আদলে। রয়েছে ইলেকট্রিসিটি। সন্ধ্যার পর সেখানে আলো জ্বলে। শুধু তাই নয় এখানেই প্রায় পনেরো কাঠা জায়গা বাঁশের বেড়া দিয়ে দখল করে বাগান বাড়ির তৈরী হয়েছে। ভিতরে রয়েছে বসার জায়গা। রীতিমত চাষ করা হয়েছে গাঁধা ফুল, আম থেকে শসা ও অন্যান্য সবজির।

এই নার্সারির মালিক শম্ভু দত্ত বলেন,” কোনো জায়গা দখলের বিষয় নেই। খণ্ডঘোষ ব্লক ভূমি দপ্তর এবং শসঙ্গা পঞ্চায়েতে এই জায়গার লিজ নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছি। তবে এখনও অনুমোদন পায়নি। আমার অনেক আগে থেকে এই এলাকায় অনেকে পাকা বাড়ি বানিয়ে হোটেল ব্যবসা চালাচ্ছে। আমার গাছ লাগানোর নেশা আছে। তাই ১৫কাটা জায়গায় কিছু ফুল, ফল ও সবজি চাষ করেছি।

 

গরু, ছাগলের উৎপাত থেকে এই সমস্ত গাছ বাঁচাতে বাঁশের বেড়া দিয়েছি। আর অনেকদূর থেকে এখানে এসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার জন্য বাঁশ ও খর দিয়ে একটা ঘর তৈরি করেছি। প্রশাসন যদি অনুমোদন দেয় তাহলে ভালোভাবে এই ব্যবসা করা যাবে। কারণ এখানে সবই বালি। বালির উপর চাষ হবে না। প্রথম দিকে ট্রাক্টরে করে মাটি এনে ফেলতে হয়েছে।”

See also  খন্ডঘোষে চোলাই মদের ঠেকে অভিযান চালিয়ে চোলাই মদসহ গ্রেফতার ৪

 

এলাকাবাসীদের একাংশের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই এই এলাকায় এইসব তৈরি হচ্ছে। খন্ডঘোষ ব্লকের বিএলআরও দপ্তরের এক শ্রেণীর অসাধু লোকের সহযোগিতায় নিয়েই এসব হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা বাবলু ঘোষ বলেন, ‘বিএলআরও নিজেই সব জানে। ওর অফিসের লোকেরা কয়েক লক্ষ টাকার বিনিময়ে এসব অবৈধ কংক্রীটের নির্মাণ তৈরী করেছে। দেখুন পরে এগুলো তলে তলে আবার লিজ দিয়ে না দেয়।’ বিএলআরও রোহিত রঞ্জন ঠাকুর বলেন, ‘ওখানে বাঁশের বেড়া দিয়ে অস্থায়ীভাবে ঘর তৈরী হচ্ছে সেটা জানতাম। কিন্তু কংক্রীটের কনস্ট্রাকশন হয়েছে বলে আমার জানা নেই।’ রেভিনিউ ইন্সপেক্টার কে পাঠিয়ে কাল খোঁজ নেব।’

 

শসঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রকাশ ঘোষ বলেন, ‘ওরা না জেনেই এসব করেছে। আমরা কোন এনওসি দিইনি।’ কিন্তু পঞ্চায়েত এলাকায় অবৈধ নির্মাণ হলে কেন ব্যবস্থা নিল না পঞ্চায়েত তার উত্তরে প্রকাশ ঘোষ বলেন, ‘ওরা আবেদন করেছে লিজ নেবার। বিএলআরও সাহেবের সঙ্গে কথা হয়েছে। হয়ে যাবে নিশ্চই ওদের কাগজ।’ খন্ডঘোষ ব্লকের বিডিও সত্যজিৎ কুমার বলেন, ‘এই অবৈধ নির্মাণ প্রসঙ্গে আমাকে পঞ্চায়েত, বিএলআরও বা অন্য কোথাও থেকে জানানো হয়নি।

 

খুবই অন্যায় কাজ হয়েছে। আমরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষর কাছে বিষয়টি আজই জানিয়েছি। ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা বলেন, ‘বিএলআরও কিভাবে জমির লিজ দিতে পারেন সেটা ভেবেই অবাক হচ্ছি। আমি কালই এ বিষয়ে ভূমি রাজস্ব দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। অবৈধ নির্মাণ হয়ে থাকলে সেটা ভাঙতে হবে।’

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি