আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

পূর্ব বর্ধমানের গোহগ্রামে দামোদর নদে চলছে বেপরোয়া বালি পাচার! প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

কৃষকসেতু, পূর্ব বর্ধমান:- একদিকে নিম্নচাপ, অন্যদিকে অবিরাম বর্ষণ—এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমাঞ্চলের জলাধারগুলি থেকে যেমন জল ছাড়া হচ্ছে, তেমনই দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকেও ঘণ্টায় ঘণ্টায় জল ছাড়ার গতি বেড়েছে। এর প্রভাব পড়ছে দামোদর নদের জলস্তরে। নদীর জলস্ফীতি রোধে প্রশাসনের তরফে নেওয়া হয়েছে সতর্কতা মূলক একাধিক পদক্ষেপ।

এরই মধ্যে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন গত ১ জুলাই থেকে সমস্ত নদনদী থেকে বালি তোলা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু এই সরকারি নির্দেশনাকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে গলসি থানার গোহগ্রামে রাতের অন্ধকারে অবাধে চলছে বালি চুরি ও পাচার। অভিযোগ উঠেছে, প্রশাসনের একাংশ ও পুলিশের নাকের ডগায় দিনরাত চলছে এই বেআইনি বালি কারবার, অথচ কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।

Oplus_16777216

রাত বাড়লেই নদী পাড়ে বালি চোরদের দাপট

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাত ১২টা থেকে সকাল ৫টা পর্যন্ত গোহগ্রাম সংলগ্ন দামোদর নদীর বোম ঘাট ঢাল, নন্দীর ঢাল, সোজা ঘাট ও টেনি যাদব ঘাট এলাকায় নদীর তীর থেকে ট্রাক্টর ও ডাম্পারের মাধ্যমে লুট করা হচ্ছে বিপুল পরিমাণ বালি।

এই বালি গোপনে প্রথমে গোহগ্রামের নতুন বাইপাস সংলগ্ন অঞ্চল, সুন্দলপুর এবং অন্যান্য পাকা রাস্তার ধারে মজুত করা হচ্ছে। এরপর ফজরের আগেই তা বিভিন্ন রুটে পাচার করে দিচ্ছে বালি মাফিয়ারা। এই পুরো কার্যক্রমই চলছে চালান ও অনুমতি ছাড়াই, সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে।

সরকারি রাজস্বের লক্ষ লক্ষ টাকা চুরি, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, প্রতিদিন এইভাবে কোটি কোটি টাকার বালি পাচার করে সরকারের রাজস্বে বড়সড় চুরি করা হচ্ছে। অথচ ব্লক ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তর কিংবা গলসি থানার পুলিশ এই অনিয়ম রোধে কোনও ভূমিকা নিচ্ছে না।

স্থানীয়দের দাবি, এলাকায় নিযুক্ত সিভিক পুলিশ ও ভিলেজ সিভিক কর্মীদের একাংশ এই বেআইনি বালি কারবারে বালি মাফিয়াদের মদত দিচ্ছেন। ফলে পুলিশের অভিযানের আগেই খবর পৌঁছে যাচ্ছে মাফিয়াদের কাছে। এলাকাবাসীদের ভাষায়, “সবটাই চলছে সেটিংস মাফিয়া ও প্রশাসনের মধ্যে আঁতাঁতের ভিত্তিতে। তাই ধরপাকড় বা আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।”

See also  রাজ্য সড়কের উপর চলন্ত গাড়িতে দাউদাউ করে জ্বলে উঠলো আগুন, ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে

জনজীবন বিপর্যস্ত, রাস্তা ঘাট বেহাল

বর্ষার মরশুমে একদিকে যেখানে নদীর জলস্ফীতি, অন্যদিকে বেআইনি বালি তোলার ফলে এলাকার গ্রামীণ রাস্তা ঘাট একেবারে বেহাল অবস্থায় পরিণত হয়েছে। পাকা রাস্তায় রাতের অন্ধকারে ওয়ে ব্রিজের সামনে বালি ফেলে রাখা হচ্ছে, যা যাতায়াতে ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি করছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, “পুলিশ, প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের মদতেই বালি মাফিয়ারা ফুলেফেঁপে উঠছে। অথচ সাধারণ মানুষ প্রতিদিন সমস্যার শিকার হচ্ছেন।”

প্রশাসনিক নীরবতা ভাঙার দাবি

বর্তমানে গোটা গোহগ্রাম ও তার আশেপাশের এলাকায় তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। এলাকাবাসীরা জোরালো ভাবে দাবি তুলেছেন, দ্রুত অভিযান চালিয়ে এই বেআইনি বালি কারবার বন্ধ করা হোক এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি