দিনকয়েক আগেই মকর সংক্রান্তি পার হয়ে গেলেও এখনো কনকনে শীতের আমেজ অব্যাহত রাজ্যজুড়ে। আর শীতের এই ঠান্ডা আমেজে ভোজন রসিক বাঙালির প্রথম পছন্দ পিঠে পুলি। এমন বাঙালি বাড়ি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর যেখানে শীতকালে পিঠেপুলির আয়োজন হয় না। তবে শহুরে জীবনযাপনে কর্মব্যস্ততার ফাঁকে পিঠেপুলি বাড়িতে তৈরি করা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। আর সেই কথাকে মাথায় রেখেই প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও দুর্গাপুরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বি-জোনে পুরমাতার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে পিঠেপুলি উৎসব।

গতবছর করোনার বাড়বাড়ন্তের জন্য এই উৎসব বন্ধ রাখা হলেও এবছর বর্তমানে সংক্রমণের হার কিছুটা কমায় ফের পিঠেপুলি উৎসবের আয়োজন করেছেন ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনি দাশগুপ্ত। দুর্গাপুরের বি-জোন স্থিত তিলক রোড ময়দানে শনিবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই পিঠেপুলি উৎসব। মেলায় রয়েছে ৪০টি পিঠের স্টল। আর পিঠেপুলির স্বাদ গ্রহণের পাশাপাশি রয়েছে নৃত্য-গীতি সহ সাংস্কৃতির অনুষ্ঠানের আয়োজন। আর এই উৎসবকে ঘিরে রীতিমতো উৎসাহিত স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে কাউন্সিলর মনি দাশগুপ্ত বলেন, “আমাদের দলনেত্রী মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলাদের জন্য বিভিন্ন রকম সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। মহিলাদের সংগঠিত করতে রাজ্য সরকারের দ্বারা একাধিক প্রকল্প চালু করা হয়েছে। শুধুমাত্র গৃহবধূ ও মহিলাদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঐকান্তিক প্রয়াসে বিভিন্ন মহিলা সংগঠনগুলি এই শীতকালে পিঠেপুলি উৎসবের আয়োজন করে থাকেন।
আমরা বেশ কয়েক বছর ধরেই দুর্গাপুরের বি-জোনের তিলক রোড ময়দানে এই পিঠেপুলি উৎসবের আয়োজন করে আসছি। এই উৎসবে মূলত এলাকার গৃহবধূরা সক্রিয় ভূমিকা নেন। তারা নিজেদের উদ্যোগে বাড়িতে বসেই পিঠেপুলি তৈরি করেন এবং মেলায় সেসব নিয়ে এসে পসরা সাজিয়ে বসেন। আমাদের প্রয়াস থাকে প্রতিবছরই এলাকার মানুষজন যাতে বাঙালির শীতকালীন পিঠেপুলির স্বাদ গ্রহণ করতে পারেন।”
এদিকে এই পিঠে পুলি উৎসবকে কেন্দ্র করে এলাকার গৃহবধূরাও রীতিমতো উৎসাহিত। এই পিঠেপুলি উৎসবে অংশগ্রহণ করার জন্য তারা কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন। গত কয়েক দিন ধরে চলেছে পিঠের উপকরণ সংগ্রহের পালা। স্থানীয় এক গৃহবধূ ইন্দু সিংহ বলেন, ” আমাদের কাউন্সিলর মনি দাশগুপ্ত সবসময়ই আমাদের মতো গৃহবধূ ও এলাকার মহিলাদের উদ্বুদ্ধ করতে থাকেন, যাতে আমরা নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে পারি।

সারা বছর ধরেই বিভিন্ন রকম অনুষ্ঠান ও কর্মযজ্ঞ আয়োজন করা হয়। তবে বিশেষ করে এই পিঠেপুলি উৎসবে মানুষের উদ্দীপনা থাকে চোখে পড়ার মতো।” দুর্গাপুর ইস্পাত নগরীর ভেতরে এই রকম একটি পিঠেপুলি উৎসবের আয়োজনে স্বভাবতই খুশির সঞ্চার হয়েছে বাসিন্দাদের মধ্যে। ইস্পাত নগরী বাসিন্দারা এক বাক্যে কাউন্সিলর মনি দাশগুপ্তকে এই উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সাধুবাদ জানিয়েছেন।