পূর্ব বর্ধমানের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক: কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন মন্ত্রীরা

বন্যা পরিস্থিতির অবনতি: বৈঠকে উপস্থিত মন্ত্রীরা

বৈঠকের আলোচনা ও প্রেক্ষাপট

বৃহস্পতিবার পূর্ব বর্ধমানের জেলা শাসকের দপ্তরে এক গুরুত্বপূর্ণ সাংবাদিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পাঁচ মন্ত্রী—অরূপ বিশ্বাস, প্রদীপ মজুমদার, মানস ভুঁইয়া, সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী এবং স্বপন দেবনাথ। বৈঠকে পূর্ব বর্ধমান জেলা শাসক, পুলিশ সুপার, ও স্থানীয় বিধায়কেরাও উপস্থিত ছিলেন। মূলত ডিভিসি (দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন) থেকে ছাড়া অতিরিক্ত জল এবং তার ফলে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।

সেচমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের কড়া মনোভাব

ইঞ্জিনিয়ারদের প্রতি ক্ষোভ

বৈঠকের শুরু থেকেই সেচমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস কড়া ভাষায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং ইঞ্জিনিয়ারদের উদ্দেশ্যে একাধিক প্রশ্ন ছুড়ে দেন। তিনি ইঞ্জিনিয়ারদের ত্রুটিপূর্ণ ব্যবস্থাপনা এবং বন্যার কারণ সম্পর্কে জবাবদিহির দাবি করেন। প্রায় দু’ঘণ্টার বৈঠকে সেচমন্ত্রী একের পর এক কঠিন প্রশ্ন তুলে ধরেন, যা প্রমাণ করে তিনি পরিস্থিতি নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

মুখ্যমন্ত্রীর তৎপরতা এবং কেন্দ্রের প্রতি ক্ষোভ

মন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার বক্তব্য

সাংবাদিক বৈঠকে মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্রুত পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বাংলার মানুষের কষ্ট সহ্য করতে পারেন না। ডিভিসি থেকে প্রায় ৩.৫ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে, যা বাংলা ও এর কৃষিকে ধ্বংস করার চেষ্টা।” মুখ্যমন্ত্রী এই বিষয়ে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী এবং দিল্লি সরকারের সাথে বারবার যোগাযোগ করেছেন, কিন্তু সত্ত্বেও কোন সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে দাবি করেন মানস ভুঁইয়া।

দুর্গাপূজার আগে বন্যা

বাংলার প্রধান উৎসব দুর্গাপূজার আগেই এই বন্যা পরিস্থিতি রাজ্যের মানুষের জন্য আরও বেশি দুঃখজনক করে তুলেছে। মানস ভুঁইয়া বলেন, “এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় ১১টি জেলা বন্যার কবলে পড়েছে, যা মানুষের জীবিকা এবং কৃষি ধ্বংসের চেষ্টা।”

স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা

পঞ্চায়েত এবং প্রশাসনের সমন্বয়

বৈঠকে মানস ভুঁইয়া আরও উল্লেখ করেন যে, বর্ধমানের জেলা প্রশাসন, পঞ্চায়েত সমিতি এবং স্থানীয় পঞ্চায়েতগুলো একত্রে কাজ করছে বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলায়। তারা সবাই মিলে হাত লাগিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে বদ্ধপরিকর। এই সমন্বিত প্রচেষ্টা মানুষের দুর্ভোগ কমানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলে বৈঠকে জানানো হয়।