সোমবার থেকে ২ দিনের পশ্চিমবঙ্গ সফরে রয়েছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মূর্মূ৷ রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্বগ্রহণের পরে এই প্রথম বঙ্গসফরে এসেছেন তিনি৷ যা নিয়ে রীতিমতো সাজোসাজো রব কলকাতা জুড়ে৷ এদিন বেলা ১২টা নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরে অবতরণ করে রাষ্ট্রপতির বিমান৷ সেখানেই তাঁকে পুষ্পস্তবক দিয়ে অভ্যর্থনা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এদিন বিকেলে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্য সরকারের তরফে রাষ্ট্রপতিকে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়ার কথা। আর এখানেই রয়েছে চমক৷ জানা গিয়েছে, রাষ্ট্রপতিকে একাধিক উপহারে সংবর্ধিত করার পাশাপাশি, তাঁকে এদিন কলকাতার এক হাঁড়ি রসোগোল্লাও দেওয়া হবে সূত্রের খবর৷ কিন্তু, জানেন কি, কলকাতার কোন দোকান থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে পৌঁছেছে সেই রসগোল্লা?

শোনা গিয়েছে, বিশেষ ভাবে সাজানো সেই রসগোল্লার হাঁড়ি আসছে কলকাতার কে সি দাস মিষ্টির দোকান থেকে৷ নীল পাগড়ি এবং রুপোলি ট্রে দিয়ে সুন্দর করে সাজানো হয়েছে মিষ্টির হাঁড়িকে৷ এই হাঁড়িই তুলে দেওয়া হবে রাষ্ট্রপতির হাতে৷এদিন বিমানবন্দরেই রাষ্ট্রপতিকে গার্ড অফ অনার জানানো হয় রাষ্ট্রপতিকে৷ তারপরে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে রাষ্ট্রপতির চপার প্রথমে নামে রেসকোর্সে। সেখান থেকে গাড়িতে এলগিন রোডে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বাসস্থান নেতাজি ভবনে যান তিনি। সেখানে নেতাজির স্মৃতিবিজড়িত স্থান পরিদর্শন করে পৌঁছন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মস্থান জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি বা মহর্ষি ভবন ঘুরে দেখেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এদিন মহর্ষি ভবনে রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানান, রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, শশী পাঁজা, বীরবাহা হাঁসদা। ছিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসও।
এদিন রাষ্ট্রপতিকে মহর্ষি ভবন ঘুরিয়ে দেখান রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নির্মাল্য নারায়ণ চক্রবর্তী। প্রথমেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম কক্ষে যান রাষ্ট্রপতি৷ তারপরে যান রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণ কক্ষে৷এরপর মূর্মূকে নিয়ে যাওয়া হয় বিচিত্রা-য়। এখানেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যবহৃত নানা আসবাবপত্র রয়েছে। সেই সব দেখে অবাক হয়ে যান রাষ্ট্রপতি৷ সেই সমস্ত আসবাব নিয়ে কৌতুহলও প্রকাশ করেন। কবে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি তৈরি হয়েছিল, কী ভাবে তার রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় সেই সবও আগ্রহভরে জানতে চান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মূর্মূ।সবশেষে, এদিন ভিজিটরস বুকে রাষ্ট্রপতি লিখেছেন, “আমি এখানে এসে খুব খুশি হয়েছি। এই জায়গা আমায় মুগ্ধ করেছে।
” রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জানান, তাঁদের তরফে এদিন রাষ্ট্রপতিকে চিত্রকর রবীন্দ্রনাথ ছবি ও রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত একাধিক পুস্তক উপহার দেওয়া হয়েছে।নেতাজি ভবন এবং জোড়াসাঁকো ঘুরে রাজভবনে যান রাষ্ট্রপতি৷ সোমবার সেখানেই তিনি মধ্যাহ্নভোজ করেন তিনি৷ বিকেলে সেখান থেকে যান নেতাজি ইন্ডোরের অনুষ্ঠানে৷মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ সকালে বেলুড়মঠে যাওয়ার কথা রাষ্ট্রপতির।
সেখান থেকে তাঁর সম্ভাব্য গন্তব্যস্থল শান্তিনিকেতন। শান্তিনিকেতনের বিনয় ভবন সংলগ্ন কুমিরডাঙা মাঠে রাষ্ট্রপতির হেলিকপ্টার অবতরণ করার কথা। সেখান থেকে বিশ্বভারতীর রবীন্দ্র ভবন, কলা ভবন, আশ্রম প্রাঙ্গণ ঘুরে দুপুরে আম্রকুঞ্জের জহরবেদিতে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা দ্রৌপদী মুর্মুর। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসেরও।