আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

বেসরকারী বিনে পয়সার রেশন দোকান থেকে খাদ্যসামগ্রী পাচ্ছেন রেশন কার্ড না থাকা কয়েক শো গরিব মানুষ

By krishna Saha

Published :

WhatsApp Channel Join Now

প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান ১৪ মে  :সরকারী রেশন দোকানের অনুকরনে বসানো হচ্ছে বেসরকারী বিনে পয়সার রেশন দোকান।আর লকডাউনের মধ্যে সেই রেশন দোকান থেকেই চাল,আটা পাচ্ছেন সরকারী রেশন কার্ড না থাকা গরিব দুঃস্থরা।এহেন রেশন দোকানের কথা শুনে সকলের অবাক হওয়াটাই স্বাভাবিক।কিন্তু বাস্তবেই এমন বিনে পয়সার বেসরকারী রেশন দোকান খুলে গরিব দুঃস্থদের হাতে খাদ্য সামগ্রী তুলে দিচ্ছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের সংঘশ্রী ক্লাবের সদস্যরা।ক্লাব সদস্যদের এই মহতি কর্মকাণ্ডের তারিফ করেছেন আপামোর জামালপুর বাসী ।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য জারি করা হয়েছে লকডাউন ।গত ২২ মার্চ থেকে এই রাজ্যে একটানা লকডাউন চলছে । তারজন্য কর্মহীন হয়েপড়া গরিব পরিবারের মানুষজন চরম দুর্ভোগে পড়ে গিয়েছেন। এই সকল গরিব দঃস্থদের অনেকেরই আবার সরকারী রেশন কার্ডও নেই । ফলে এই কঠিন সময়ে তারা রেশন দোকান থেকেও খাদ্য সামগ্রী পাচ্ছেন না।এমনই কিছু হতদরিদ্র মানুষজনের পাশে দাঁড়াতে সংঘশ্রী ক্লাবের সদস্যরা চালু করেছেন বিনে পয়সার বেসরকারী রেশন দোকান।লকডাউনের মধ্যেই সেই রেশন দোকান থেকে কয়েক শো গরিব মানুষ দু’দফায় ব্যাগ ভর্তি খাদ্য সামগ্রীও পেয়েছেন।সংঘশ্রী ক্লাব সদস্যদের চালু করা এমন বিনে পয়সার রেশন দোকানই এখন নিরন্ন মানুষজনের মুখে হাসি ফোটাচ্ছে ।

ক্লাবের সম্পাদক পাঁচুগোপাল আধিকারী জানিয়েছেন,‘লকডাউনে চলায় অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। ফলে তাঁদের রোজগার বন্ধ হয়েগেছে।ওই সকল গরিব পরিবারের কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকার রেশন দোকান থেকে বিনা পয়সায় খাদ্যসামগ্রী পাবার ব্যবস্থা করেছে ঠিকই। কিন্তু তাঁদের শুড়েকালনা সহ আশপাশের তিন চারটি গ্রামের বেশকিছু মানুষ সরকারী রেশন পাচ্ছেন না। কারণ তাঁদের কারুর রেশন কার্ড নেই । আবার কারুর রেশন কার্ড হারিয়ে গেছে । এছাড়াও এমন অনেকে আছেন যারা সরকারী রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করলেও রেশন কার্ড এখন হাতে পান নি ।
পাঁচুগোপাল বাবু বলেন , তাঁদের এলাকার মূলত এই রকম পরিবার গুলির সদস্যরা লকডাউনের মধ্যে অসহায় ভাবে দিন কাটাচ্ছিলেন। এই সকল মানুষজনের পাশে পাশে দাঁড়াতেই সংঘশ্রী ক্লাবের তরফে রেশন দোকানের অনুকরণে খাদ্য সামগ্রী দেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’ অন্যদিকে ক্লাব সভাপতি রবীন্দ্রনাথ পাল বলেন ,‘সরকারী রেশন দোকান থেকে খাদ্য সামগ্রী পাচ্ছেন না এমন এলাকার কয়েকশো মানুষকে তাঁরা চিহ্নিত করেছেন । তাঁদের জন্যই তাঁরা খাদ্য সামগ্রী জোগাড় করেন ।এই কাজে শুড়েকালনা এলাকার অনেকে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন । গত ১৫ দিন আগে ক্লাব ঘরের সামনে প্রথম রেশন দোকানের অনুকরণে তাঁরা চাল , আটা ,নুন,বিস্কুট,সোয়াবিন প্যাকেট , রান্নার মশলা প্রভৃতি সাজিয়ে বসেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ওই দিন এক এক করে ১০৩ জন গরিব পরিবারের মানুষের হাতে তঁদের ক্লাব সদস্যরা ৫ কেজি চাল সহ আটা ও অন্য খাদ্য সমগ্রী ভর্তি প্যাকেট তুলে দিয়েছেন ।এরপর গত মঙ্গলবার বিকালে দ্বিতীয় দফায় একই ভাবে ৭২ জন গরিব মানুষের হাতে খাদ্য সামগ্রী তুলে দিতে পেরেছেন।রবীন্দ্রনাথ বাবু জানালেন ,লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হলে ফের তারা একই ভাবে রেশন কার্ড না থাকা গরিবদের খাদ্য দেবার ব্যবস্থা করবেন।’

See also  চলতি মরশুমে রাজ্যের ধান কেনা শুরু হতেই হাসি ফুটেছে গ্রাম বাংলার কৃষকদের মুখে।

সংঘশ্রী ক্লাবের সদস্যদের এমন কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করেছেন এলাকার দরিদ্র পরিবারের দুই বিধবা অন্নপূর্ণা বিশ্বাস ও অমলা রায়। তাঁরা বলেন , “রেশন দোকানের মতন করেই সংঘশ্রী ক্লাব সদস্যরা তাঁদের দু’ দফায় খাদ্য সামগ্রী দিয়েছে।রেশন কার্ড নেই এমন আরো আনেক গরিব মানুষ ক্লাব সদস্যদের কাছ থেকে খাদ্য সামগ্রী পেয়েছেন। দুই বিধবা জানালেন লকডাউনে সংঘশ্রী ক্লাবের দেওয়া খাবার খেয়েই এখন তাঁদের দিন কাটছে ।”

জামালপুর ব্লকের বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার সংঘশ্রী ক্লাবের সদস্যদের এই কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।তিনি বলেন ,রেশন দোকানের অনুকরণে খদ্যাসামগ্রী সাজিয়ে নিয়ে বসে তা গবিব মানুষের হাতে তুলেদিয়ে ক্লাব সদস্যরা প্রকৃত অর্থেই দৃষ্টান্ত গড়েছেন।বিডিও জানিয়েদেন , গরিব মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর ব্যাপারে ক্লাবের কর্মকর্তারা যদি তাঁর কাছে কোন সাহায্য চান তবে তিনি তা পূরণ করার চেষ্টা করবেন ।

krishna Saha

আমার নাম কৃষ্ণ কুমার সাহা, আমি ফুল টাইম সাংবাদিকতা করি।গত ৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি