এসআইআর-এর নামে অনিয়ম, আতঙ্ক এবং মৃত্যু–এই সমস্ত অভিযোগকে সামনে রেখে সংসদে তীব্র আলোচনার সূত্রপাত হতে চলেছে। অভিযোগ, এসআইআর প্রক্রিয়াকে হাতিয়ার করে সাধারণ মানুষের উপর অযথা চাপ তৈরি করা হচ্ছে। বিরোধীদের দাবি, এই প্রক্রিয়ার আড়ালে ভুয়োভাবে মৃত্যু দেখানো এবং অসংখ্য মানুষের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার মতো গুরুতর কাজ চলছে।
রবিবার অনুষ্ঠিত সর্বদল বৈঠকে বিরোধী শিবির স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরও কেন আজও সাধারণ মানুষকে এমন বিভ্রান্তিকর ও আতঙ্কজনক পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে, তার উত্তর তারা সংসদে চাইবে। ইতিমধ্যেই ৩০ জনেরও বেশি মানুষ এসআইআর আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি—যা উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে।
এসআইআর ইস্যুতে সরব তৃণমূলের পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ অপার্থিব ইসলাম। তিনি পাঁচটি জ্বলন্ত প্রশ্ন তুলে ধরেন কমিশনের উদ্দেশ্যে। অপার্থিব ইসলাম দাবি করেন-১. এসআইআর প্রক্রিয়া কি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে ২. যদি কিছু ভুল হয়ে থাকে, তবে কেন বাঙালিদের নামই বারবার টার্গেট হচ্ছে? ৩. কেন মিজোরাম বা ত্রিপুরার মতো অন্যান্য রাজ্যে একইভাবে এসআইআর প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে না? ৪. আইনের দৃষ্টিতে ভোটার বাদ দেওয়ার আগে নির্বাচিত সরকারের অনুমোদন কতটা প্রয়োজন? ৫. এসআইআর-এর মধ্যে যদি ভুল থাকে, তবে মানবিকতার খামতি এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতার দায় নেবে কারা?
বিরোধীদের অভিযোগ আরও তীব্র—কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষতার মাপকাঠিতে কতটা উত্তীর্ণ? সংসদে এই সংক্রান্ত প্রশ্নের সম্মুখীন হতে চলেছে কেন্দ্র।
রাজনৈতিক মহলের মতে, এসআইআর ইস্যু শুধুই প্রশাসনিক জটিলতা নয়, এটি এক মানবিক সংকটও হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশ্ন উঠছে—যদি সত্যিই ভুল হয়ে থাকে, তবে সীমান্তবর্তী অন্যান্য রাজ্য বাদ দিয়ে শুধু পশ্চিমবঙ্গকেই কেন নিশানা করা হচ্ছে?
এখন নজর সংসদের দিকে—কেন্দ্রীয় সরকার কী ব্যাখ্যা দেয়, তার ওপর নির্ভর করবে এসআইআর বিতর্কের ভবিষ্যৎ পথচলা।








