কৃষকসেতু, কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিভিন্ন দফতরে আদালতের নির্দেশে গঠিত কমিটিগুলির কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত তথ্য তলব করেছে নবান্ন। সুপ্রিম কোর্ট ও হাই কোর্টের নির্দেশে গঠিত এই কমিটিগুলির সদস্য, কার্যক্রম, বৈঠকের সংখ্যা এবং রিপোর্ট জমা পড়ার তথ্য সংগ্রহের জন্য রাজ্যের কর্মী ও প্রশাসনিক সংস্কার দফতর (PAR Department) গত মে মাসের শেষে প্রতিটি দফতরের সচিবদের কাছে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে।
আগামী ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের আগে আদালতের সামনে কোনও অস্বস্তিকর পরিস্থিতি এড়াতে এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট ও কলকাতা হাই কোর্ট বিভিন্ন সময়ে নির্দিষ্ট বিষয়ে নজরদারি ও বাস্তবায়নের জন্য কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল শিক্ষা দফতরের শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত কমিটি, স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ কমিটি, নারী ও শিশু সুরক্ষা কমিটি এবং পরিবহণ দফতরের রোড সেফটি কমিটি।
তবে এই কমিটিগুলি কতটা কার্যকর বা নিয়মিত কাজ করছে, তা যাচাই করতে তৎপর হয়েছে রাজ্য সরকার।প্রতিটি দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তারা কতগুলি কমিটি গঠন করেছে, সেগুলির সদস্যদের তালিকা (সরকারি আমলা ছাড়াও বাইরের বিশেষজ্ঞ বা ব্যক্তিত্বদের নাম ও পরিচয়-সহ), কমিটির কাজের অগ্রগতি, বৈঠকের সংখ্যা এবং রিপোর্ট জমা পড়েছে কি না— এই সব তথ্য আগামী সপ্তাহের মধ্যে জমা দিতে হবে। নবান্নের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “প্রতিটি দফতরে একাধিক কমিটি রয়েছে।
কিছু কমিটি নির্দিষ্ট কাজের জন্য গঠিত হয় এবং কাজ শেষে ভেঙে দেওয়া হয়। আমাদের লক্ষ্য এই তথ্যগুলি একত্রিত করে একটি পূর্ণাঙ্গ ভান্ডার তৈরি করা।”প্রশাসনিক মহলের মতে, এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য আদালতের নির্দেশ যথাযথভাবে পালন হচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত করা। আদালতের সামনে প্রমাণ রাখতে হবে যে রাজ্য সরকার নির্দেশ মেনে চলছে। প্রশাসনিক বিশেষজ্ঞরা এটিকে নবান্নের সচেতন পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন, যাতে ভবিষ্যতে আদালতের প্রশ্নের মুখে স্পষ্ট ও তথ্যভিত্তিক জবাব দেওয়া যায়।নবান্নের এই পদক্ষেপকে অনেকে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবেও দেখছেন।
আদালতের নির্দেশ পালনের ক্ষেত্রে কোনও ত্রুটি থাকলে তা রাজনৈতিকভাবে সরকারের জন্য অস্বস্তির কারণ হতে পারে। তাই, সমস্ত কমিটির কার্যক্রমের হিসাব সংরক্ষণ করে সরকার এই ঝুঁকি এড়াতে চাইছে।
