
প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান
মোদী আর মমতা একই নীতির অনুসারী।কেউ চপ ভাজতে বলেন,কেউ পকোড়া।তাই ১৪ তলা থেকে চোর তাড়াবার আগে ’পার্লামেন্ট’ থেকে চোর তাড়াতে হবে।মোদীজি আদানি আম্বানির টাকায় গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। তারপর প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন।তাই ওদের ব্যাপারে উনি’ই ভাল জানবেন
।বৃহস্পতিবার রাতে বর্ধমানের টাউন হল
ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসভা থেকে এমনই দাবি করলেন,সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।একই কায়দায় শুক্রবার পূর্ব বর্ধমানের কালনার জনসভা থেকে নরেন্দ্র মোদী ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান সিপিএম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় । তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য সেলিম ও মীনাক্ষীর এইসব বক্তব্যকে ’শূণ্য’ হয়ে যাওদের বড় বড় কথা বলে কটাক্ষ করেছে।

বর্ধমান পূর্ব ও বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই বাম প্রার্থী নীরব খাঁ এবং সুকৃতি ঘোষালের সমর্থনে এদিন টাউন হল ময়দানে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার প্রধান বক্তা ছিলেন
মহম্মদ সেলিম। তিনি ছাড়াও অভিনেতা বাদশা মৈত্র দুই বাম প্রার্থীর সমর্থনে বক্তব্য রাখেন।
রাত পৌনে ৯ টা নাগাদ জনসভায় বক্তব্য রাখতে উঠে সেলিম,বিজেপি ও তৃণমূলকে এক সারিতে ফেলে আক্রমণ শানান। তিনি বলেন,“ কারুর ৫৬ ইঞ্চি ছাতির মাপ হয়? মোষের হয়, গরুর হয়, হাতির হতে পারে! কেউ কি মেপে দেখেছে?মেপে দেখেছেন একজনই, মমতা বন্দোপাধ্যায়। কেননা, মোদীই বলেছেন প্রত্যেক বছর উনি ওনাকে কুর্তা পাজামা পাঠান। ইয়ে আরাম কা মামলা হ্যায়।অথচ বাইরে এমন ভাব যেন যুদ্ধ হচ্ছে।“
তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও এদিন মহম্মদ সেলিমের নিশানায় ছিলেন। অভিষেকের নাম মুখে না এনে সেলিম বলেন,
”ভাইপো নানা কেলেংকারিতে অভিযুক্ত। তারপরও কাকুর গলার টেস্ট রিপোর্ট পেতে চার মাস লাগে।
চিটফাণ্ডের সময় যেমন প্রমাণ লোপাট হয়েছিল,,তেমনি নিয়োগ দুর্নীতিতে যোগ্য- অযোগ্যদের ও এম আর (OMR) শিট মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে।তবে আমরা ছাড়ব না।“
,মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে সেলিম বলেন, নিজের ভাইপো ,ভাইপোর বউ ও নিজের পরিবার ছাড়া আর কারো স্বার্থ দেখেন না।বিচারপতি বলেছেন ২০১৩ থেকে বাংলায় দুর্নীতি বেড়েছে।২০১৪ তে বিজেপি কেন্দ্রে সরকারে এসেছে।চৌকিদার এসেছেন।সই ভয়ে কোতোয়াল।এ নিয়ে নবান্ন ও দেশের পার্লামেন্ট কে নিশানা করে সেলিম বলেন,“১৪ তলা থেকে চোর তাড়াবার আগে পার্লামেন্ট থেকে চোর তাড়াতে হবে।মোদীজি আদানি আম্বানির টাকায় গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। তারপর প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তাই ওদের ব্যাপারে উনিই ভাল জানবেন।বিদেশ থেকে কালাধন আনার কথা বলেছিলেন। ওনার পুরনো গ্যারান্টি কোথায় গেল? নতুন গ্যারান্টির কথা বলছেন যে? আসলে এসবই মানুষকে বোকা বানানোর কৌশল। বলে সেলিম মন্তব্য করেন।

অন্যদিকে শুক্রবার দুপুরে বর্ধমান পূর্ব লোকসভা অধীন কালনার সহজপুর বাজারে অনুষ্ঠিত জনসভায় যোগ দেন সিপিএম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়।সভায় বক্তব্য রাখতে উঠে মোদীজিকে বেনজীর আক্রমণ করেন মীনাক্ষী। ’পিএম কেয়ার ফান্ড’ ইস্যুতে খোদ প্রধানমন্ত্রীর বাবা ও দাদুকে টেনে এনে আক্রমণ শানান মীনাক্ষী । তিনি বলেন,“মোদী বলছে, পিএম ফান্ডে কোনো হিসাব দেশের মানুষ নিতে পারবে না,কারণ এটা কোনো সরকারি ফান্ড নয়।
এরপরেই মীনাক্ষী প্রশ্ন তোলেন,’পিএম কেয়ারে প্রধানমন্ত্রীর নামটা কি তোমার বাবা তোমাকে দিয়েছিল?ওটা তো দেশের মানুষের নাম।”এখানেই থামেন নি মীনাক্ষী। তিনি প্রধানমন্ত্রীর দাদুকে টেনেএনে বলেন,অশোকস্তম্ভটা
তোমার দাদু দিয়েছিল?দেয়নি তো? ইলেক্ট্রোরাল বন্ড দুর্নীতি প্রধানমন্ত্রীর ধুতির কাছা খুলে দিয়েছে বলে মীনাক্ষী মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে তিনি দাবি “২০২৪ -এ বামপ্রার্থীরা পার্লামেন্টে গিয়ে পিএম কেয়ার ফান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে ধুতি খুলে বাজারে দৌড় করাবে।বিজেপি আর কেন্দ্রের সরকারে আসবে না। আর তৃণমূলেরও শেষের শুরু হয়ে গিয়েছে বলে সিপিএম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় কালনার জনসভা থেকে ঘোষণা করেন। “
সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম ও মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের এইসব বক্তব্যকে ’শূণ্য’ হয়ে যাওয়াদের বড় বড় কথা বলে কটাক্ষ করেছেন রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস। তিনি বলেন,“চোর আবার শোর মাচাচ্ছে। চোরের মায়ের আবার বড় গলা। বাংলার মানুষ সেলিমের দলকে তেপান্তরে পাঠিয়ে দিয়েছে । বাংলার মানুষ যাদের শূণ্য করে দিয়েছে তাদের বড় বড় কথা মানায় না। “