আবহাওয়া দক্ষিণবঙ্গ শিক্ষা লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য ভ্রমন ধর্ম কৃষি কাজ ক্রাইম

বিনা হেলমেটে বাইক চালানো তরুণদের শাস্তি, পুলিশের সামনেই মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের উদ্যোগ: সমালোচনার ঝড়

By Pradip Chatterjee

Published :

WhatsApp Channel Join Now


সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমানের কালনায় একটি ঘটনা রাজনৈতিক এবং সামাজিক মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ পুলিশ ও মানুষের সামনেই বিনা হেলমেটে বাইক চালানো তিন তরুণকে কান ধরে ওঠবোস করান। এই ঘটনা একদিকে যেমন সচেতনতার বার্তা দেয়, তেমনি বিরোধীরা একে শাসক দলের দায়িত্বহীন আচরণ হিসেবে সমালোচনা করছে।

ঘটনার বিবরণ
২০২৪ সালের ১১ই নভেম্বর, কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ‘সিটি স্ক্যান’ মেশিন উদ্বোধনের শেষে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ হেলমেটবিহীন বাইক চালানো তিন তরুণকে দেখতে পান। এর পরেই তিনি তাদের দাঁড় করিয়ে প্রথমে সচেতনতার পাঠ দেন এবং পরে পুলিশের উপস্থিতিতেই কান ধরে ওঠবোস করান।
মন্ত্রী দাবি করেন, সাম্প্রতিককালে হেলমেট না পরার কারণে একাধিক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাই এই পদক্ষেপের মাধ্যমে তিনি তরুণদের মধ্যে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন।

Table of contents

  1. ঘটনার প্রেক্ষাপট
  2. ঘটনার বিবরণ
  3. মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের ব্যাখ্যা
  4. বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া
  5. আইনগত দৃষ্টিকোণ
  6. সচেতনতার বার্তা নাকি শাস্তির বিভ্রান্তি?

মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের ব্যাখ্যা
মন্ত্রী জানান, পূর্বস্থলী এলাকায় কালীপুজোর রাতে বাইক দুর্ঘটনায় চারজন এবং রাসউৎসবের রাতে আরও দুই যুবকের মৃত্যু তাকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে। তিনি বলেন, “সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ কর্মসূচি থাকার পরেও তরুণ প্রজন্ম সচেতন হচ্ছে না। তাই আমি তাদের মাথায় হেলমেট পরার গুরুত্ব বোঝানোর জন্য এই পদক্ষেপ নিয়েছি।”

বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া
বিরোধী দলগুলো মন্ত্রীর এই পদক্ষেপকে তীব্র সমালোচনা করেছে।

  • বিজেপি: জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র প্রশ্ন তুলেছেন, “দেশে আইন ও বিচার ব্যবস্থা থাকতে একজন মন্ত্রী কীভাবে এমন কাজ করেন?”
  • সিপিএম: সিপিএম নেতা স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “মন্ত্রী নিজে শাস্তি দেওয়ার পরিবর্তে পুলিশকে আইনি পদক্ষেপ নিতে বললে সঠিক হত। এই কাজ আইন এবং প্রশাসনিক প্রটোকলের পরিপন্থী।”

আইনগত দৃষ্টিকোণ
ভারতের সংবিধান অনুযায়ী, শাস্তি দেওয়ার অধিকার শুধুমাত্র বিচার ব্যবস্থার। তাই মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের এই পদক্ষেপ নিয়ে আইনি প্রশ্ন উঠেছে। বিরোধীরা অভিযোগ করেছেন, এভাবে শাস্তি দেওয়ার মাধ্যমে মন্ত্রী পুলিশের ভূমিকা এবং কর্তৃত্বকে খাটো করেছেন।

See also  রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বৃহস্পতিবার বিধানসভায় স্বোচ্চার হবে বিজেপি বিধায়করা - শুভেন্দু

সচেতনতার বার্তা নাকি শাস্তির বিভ্রান্তি?
ঘটনার পর থেকেই প্রশ্ন উঠছে—এটি কি সচেতনতার প্রয়াস, নাকি মন্ত্রীর দায়িত্বের সীমার বাইরে গিয়ে পুলিশের কাজকে ছোট করার চেষ্টা?
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জনসচেতনতা বাড়ানোর জন্য এই ধরনের বার্তা কার্যকর হতে পারে, তবে তা অবশ্যই আইনি কাঠামোর মধ্যে থাকতে হবে।

মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের এই উদ্যোগে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। কেউ এটিকে সচেতনতার প্রয়াস বলছেন, আবার কেউ একে প্রশাসনিক সীমালঙ্ঘন বলে দাবি করছেন।

Pradip Chatterjee

Senior Reporter Jamalpur, Purba Bardhaman. প্রদীপ চ্যাটার্জী কৃষকসেতু নিউজ বাংলার সিনিয়র কনটেন্ট রাইটার। বিগত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত।